সাম্প্রতিক সংবাদ

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ওআইভিএস ডিভাইস নিয়ে মাঠে র‍্যাব

ক.বি.ডেস্ক: ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ-সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে করতে সহযোগিতায় মাঠে কাজ শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নিরাপত্তা নিশ্চিতে ‘অনসাইড আইডেন্টিফিকেশন অ্যান্ড ভেরিফিকেশন সিস্টেম (ওআইভিএস)’ নামে একটি বিশেষ ডিভাইস নিয়ে মাঠে নেমেছে এলিট ফোর্স র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। ২০২১ সালে র‍্যাব ফোর্সেস প্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার ও ডাটাবেজের সমন্বয়ে আত্মপ্রকাশ করে ওআইভিএস। বিশেষ এ ডিভাইসের মাধ্যমে জাল ভোট দিতে আসা ব্যক্তিরাও শনাক্ত হবে।

মূলত বহনযোগ্য একটি ডিভাইসের মাধ্যমে যে কোন জায়গায় থাকা কোনো ব্যক্তির আঙ্গুলের ছাপ, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর বা জন্ম তারিখের মাধ্যমে ওই ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করা হবে এই সিস্টেমের মাধ্যমে। আগে কোনো অপরাধীকে ধরলে তাকে র‍্যাবের একটি অফিসে নিয়ে গিয়ে তার ফিঙ্গারপ্রিন্ট, এনআইডি নম্বর ও জন্ম তারিখের মাধ্যমে তার পরিচয় নিশ্চিত হতে হতো। কিন্তু এই ডিভাইসের মাধ্যমে যে কোন স্পটে একজন ব্যক্তির পরিচয় শনাক্তের কাজ করা সম্ভব।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ৪৮ ঘণ্টা আগে থেকে কেন্দ্রের সামনে ওআইভিএস নিয়ে প্রস্তুত রয়েছে র‍্যাব। বর্তমানে ১৫টি ব্যাটালিয়নের কমান্ডাররা এ ডিভাইস ব্যবহার করছেন। ভোটকেন্দ্রের সামনে সন্দেহভাজনরা ঘোরাঘুরি করলেই তাদের আঙুলের ছাপ নেবে র‍্যাব।

আজ শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে টহল বৃদ্ধি ও চেকপোস্ট স্থাপন করেছে বাহিনীটি। চেকপোস্টে সন্দেহভাজনদের ডেকে আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে কে অপরাধী আর কে অপরাধী না। বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট স্থাপন করে বিভিন্ন যানবাহনে তল্লাশি, সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ ও অনেককে ওআইভিএস প্রযুক্তি ব্যবহারে পরিচয় ও অপরাধের ডাটা খুঁজতে দেখা যায় র‍্যাব সদস্যদের।

এ প্রসঙ্গে র‍্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ওআইভিএস ডিভাইসের মাধ্যমে আঙুলের ছাপেই বেরিয়ে আসবে সংশ্লিষ্ট এলাকার ভোটারদের নাম-ঠিকানা। ওআইভিএসে আঙুলের ছাপেই শনাক্ত করা সম্ভব হবে দীর্ঘদিন ছদ্মবেশে আত্মগোপনে থাকা অপরাধীদেরও। ইতোমধ্যে এ ডিভাইসের মাধ্যমে ক্লুলেস হত্যাকাণ্ড ও অপরাধীদের শনাক্ত করেছে র‍্যাব।

তিনি আরও বলেন, ”মোবাইল ফোনসদৃশ ডিভাইসটি ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে যেকোনো স্থান থেকে পরিচালনা করা যায়। এর মাধ্যমে তাৎক্ষণিক জাতীয় পরিচয়পত্র, অপরাধীদের ডাটাবেজ ও কারাভোগের ডাটাবেজের তথ্য পাওয়া যায়। এতে কোনো ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, জন্ম তারিখ বা ফিঙ্গারপ্রিন্টে ওই ব্যক্তির তথ্য সহজেই তাৎক্ষণিক পাওয়া যায়। এতে নিমিষেই জানা সম্ভব হচ্ছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার কিংবা হত্যাকাণ্ডে জড়িত বা অপরাধমূলক যেকোনো কাজের সঙ্গে ওই ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কি না।

ওআইভিএসের মাধ্যমে শুধু অপরাধী শনাক্তই নয়, বিভিন্ন অজ্ঞাতপরিচয় মৃত ব্যক্তি ও মানসিক প্রতিবন্ধীর পরিচয়ও শনাক্ত করা হচ্ছে এবং তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। এতে অপরাধ তদন্তে আরও গতিশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

বহনযোগ্য ডিভাইসে কোনো ব্যক্তির আঙ্গুলের ছাপ, এনআইডি নম্বর ও জন্ম তারিখ প্রবেশ করালে উপরোক্ত ডেটাবেইজগুলোতে ওই ব্যক্তি সম্পর্কে থাকা তথ্য দেখতে পাওয়া যাবে। ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে এই ডিভাইসটি কাজ করবে। শীঘ্রই সরকারি নির্দেশনা ক্রমে পাসপোর্ট, বিআরটিএ ও পুলিশের কাছে থাকা অপরাধীদের ডেটাবেইজেও এই সিস্টেমের মাধ্যমে প্রবেশ করা সম্ভব হবে।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *