অন্যান্য মতামত

‘রিয়েল-টাইম ডাটা ভিত্তিক সিস্টেম’ জনস্বাস্থ্য নীতিকে আরও শক্তিশালী করবে

ক.বি.ডেস্ক: কোভিড-১৯ মহামারি পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য একটি উদ্ভাবনীয় সংক্রামক রোগ নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ সিস্টেম উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন সুযোগ অনুসন্ধানের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। একটি উচ্চ-পর্যায়ের অনলাইন আয়োজনে অংশ নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রাপ্ত ডাটা এবং প্রযুক্তিকে কাস্টমাইজড করে একটি শক্তিশালী জনস্বাস্থ্য নীতি বাস্তবায়নের ওপর জোর দিয়েছেন বক্তারা। করোনাভাইরাস আমাদের বিদ্যমান স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দূর্বলতা, বৈষম্য এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অগ্রগতি স্ববির করে দেয়া বিষয়গুলো সামনে নিয়ে এসেছে বলেও আলোকপাত করেছেন।

এইসব চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার বেসরকারি খাত, সুশীল সমাজ, শিক্ষক, গণমাধ্যম এবং উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে নিয়ে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে কালেক্টিভ ডাটা ইন্টেলিজেন্স সিস্টেম তৈরি করেছেন। যার মধ্যে রয়েছে সিন্ড্রোমিক সার্ভিলেন্স; মৃত্যুহার নজরদারি; কন্টাক্ট ট্রেসিং; মহামরি সম্পর্কিত মডেলিং এবং স্বাস্থ্যগত বিষয়ে সাড়া প্রদানের পরিকল্পনা ও পরিচালনা। এ ছাড়া একটি ক্রস-সেক্টরাল ও মিশনভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি বিশ্বের উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চলের দেশসমূহ, বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের সদস্য দেশগুলো, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের প্রতিনিধিদের মধ্যে মহামারি শনাক্তকরণে উদ্ভাবিত বিভিন্ন সফল মডেল ও সেরা অনুশীলনগুলো শেয়ার করার বিষয় ভবিষ্যতে আরও ফলপ্রসু করবে। ভবিষ্যতের মহামারি প্রতিরোধে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্রয়োজনীয় পদ্ধতিগুলো জাতীয় পর্যায়েও কাজে আসবে।

টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে তৈরি জাতিসংঘের উচ্চ-পর্যায়ের রাজনৈতিক ফোরাম (ইউনাইটেড নেশনস হাই-লেবেল পলিটিকেল ফোরাম অন সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট-এইচএলপিএফ ২০২১) এর সাইড ইভেন্টের অংশ হিসেবে স্ট্রেনথিং গর্ভমেন্ট ডাটা-ফর-রিকভারি ক্যাপাসিটি উইডথ এ ফোকাস অন পাবলিক হেলথ শীর্ষক এক অনলাইন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বক্তারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে গায়ানার স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. ফ্র্যাঙ্ক সি এস অ্যান্থনি, পেরুর স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. অস্কার উগারতে উবিলাজ, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মূখ্য সমন্বয়ক মিজ জুয়েনা আজিজ যুক্ত ছিলেন।

মাসুদ বিন মোমেন বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে এরই মধ্যে ডাটা মূল চালিকা শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। তেল যেমন ইঞ্জিন এবং মোটরযান চালতে সহায়তা করে তেমনি ডাটা বর্তমান বিশ্বকে চালাচ্ছে। বিশ্লেষকরা পর্যাপ্ত ডাটা পেলে তা বিশ্লেষণ করে কার্যকর সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। সিদ্ধান্ত গ্রহণ, কৌশল প্রণয়ন এবং কোভিড-১৯ মহামারি থেকে পুনরুদ্ধারকে প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে ডাটার ব্যবহার করতে হবে। এই মহামারি থেকে টেকসই পুনরুদ্ধারের জন্য জনস্বাস্থ্য প্রশাসনকে শক্তিশালী করতে ডাটার কার্যকর ব্যবহারের পদক্ষেপ নেই।

অনুষ্ঠানে পৃথক দুটি প্যানেল আলোচনায় ইয়েল ইউনিভার্সিটির অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আহমেদ মুশফিক মোবারক, ইউএনওএসএসসির ডেপুটি ডিরেক্টর ফর প্রোগ্রাম ও অপারেশনস সাওজুন গ্রেস ওয়াং, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ডাটা, এনালিটিক্স অ্যান্ড ডেলিভারি ফর ইমপ্যাক্ট ডা. সামিরা আসমা, আধার অ্যান্ড ইন্ডিয়া স্ট্যাকের চিফ আর্কিটেক্ট ডা. প্রমোদ ভার্মা, ভাইটাল স্ট্রেটেজিসসের ভাইস প্রেসিডেন্ট ডা. ফিলিপ সেটেল, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা, নিউয়র্ক সিটির ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ অ্যান্ড মেন্টাল হাইজনের অ্যাসিস্টেন্ট কমিশনার ডা. গ্রেচেন ভ্যান ওয়ে এবং কেনিয়ার সিভিল রেজিস্ট্রেশন সার্ভিসের রেজিস্ট্রার-জেনারেল জানেট মাচেরু অংশ নিয়েছিলেন। অনুষ্ঠানে এটুআইর পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

প্যানেল আলোচনায় বক্তারা বলেন, ভবিষ্যতে কোভিডের প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বড় বড় ধর্মীয় উতসব, ছুটির কারণে বিভিন্ন দেশের ভিতরে ও বাহিরে ছড়িয়ে পড়া কোভিডের নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্টের সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে গবেষণা করার জন্য রিয়েল-টাইম ডাটার মডেলিং অপরিহার্য।

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন, এটুআই প্রোগ্রাম, বাংলাদেশ, পেরু, নিউয়র্ক সিটি মেয়রের কার্যালয়, ইউনাইটেড নেশনস অফিস ফর সাউথ-সাউথ কো-অপারেশন, সাউথ-সাউথ নেটওয়ার্ক ফর পাবলিস সার্ভিস ইনোভেশন, ইউনাইটেড নেশনস ডেভলপমেন্ট প্রোগ্রাম, ভাইটাল স্ট্রেটেজিস যৌথভাবে এ বছরের সাইড-ইভেন্টের আয়োজন করেছে।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *