সাম্প্রতিক সংবাদ

স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে তরুণদের ভাবনা শুনলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ক.বি.ডেস্ক: স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে তরুণদের মনোভাব জানতে সরাসরি তাদের কথা শুনেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের গবেষণা উইং সিআরআই (সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন) আয়োজিত লেটস টক অনুষ্ঠানে তরুণের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু কন্যা।

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা তরুণ সংগঠক এবং নিজের কর্মক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন এমন তরুণদের পরামর্শও শুনেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই অনুষ্ঠানের প্রশ্নোত্তরের স্মার্ট বাংলাদেশ অংশটি তুলে ধরা হলো

প্রশ্ন: আপনার ভাষায় একটু বলবেন স্মার্ট বাংলাদেশ মানে কী? আপনার স্বপ্নটা কী?

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা: আমরা তো আসলে কমপিউটার শিক্ষাটা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে জোর দিচ্ছিলাম। আমরা চাচ্ছিলাম আমাদের ছেলে মেয়েরা প্রযুক্তি শিক্ষাটা নিক। তখন বিজ্ঞানের প্রতি এত আগ্রহ ছিল না। আমরা কিন্তু সেই লক্ষ্য পূরণ করে ফেলেছি। সারা বাংলাদেশ ব্রডব্যান্ড কানেকশন দিচ্ছি। স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছি। এ ছাড়া এখন ওয়াইফাই কানেকশন সারা বাংলাদেশে। আমরা ফোরজি ব্যবহার করছি। ইন্ডাস্ট্রিয়াল খাতের জন্য ৫জির দিকে যাচ্ছি। এসব কাজ আমরা করে ফেলেছি। তাহলে পরবর্তী পদক্ষেপটা কী হবে।

সেখানেও আবার আমার ছেলে বুদ্ধি দিল, যে আমরা এবার স্মার্ট বাংলাদেশ করব। স্মার্ট বাংলাদেশের কনসেপ্ট হলো, যে আমাদের যারা ছেলে মেয়ে আছে, তারা যেন শিক্ষাদীক্ষা, জ্ঞানে এবং প্রযুক্তি বিজ্ঞানে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে ওঠে। পাশাপাশি সরকারকেও স্মার্ট সরকার গঠন করতে হবে। প্রথম সরকারে এসে দেখেছি, একটা কমপিউটার সাজানো আছে। ওটা কেউ ছুঁয়ে দেখে না। কিন্তু এখনতো আর সেটা না। আমাদের সব মোবাইল ছিল এনালগ। একটা ফোনের দাম ছিল এক লাখ ৩০ হাজার টাকা।

আমি যখন সরকারে আসলাম, তখন সিদ্ধান্ত নিলাম এটাকে উন্মুক্ত করে দিব। তখন আমরা বেসরকারি সেক্টর উন্মুক্ত করে দিলাম। এখন মোবাইল ফোন সবার হাতে হাতে পৌঁছে গেছে। সেইসঙ্গে কমপিউটার ব্যবহার। স্কুল থেকে শুরু করে দিলাম। ভ্যানে করে বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে ছেলে মেয়েদের শেখান শুরু করলাম। আমরা চাচ্ছি আমাদের সরকারের সমস্ত কাজে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে করব।

সিআরআই আয়োজিত লেটস টক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী তরুণরা

যাতে স্মার্ট জনগোষ্ঠী, স্মার্ট সরকার এবং আমাদের ইকোনমিও হবে স্মার্ট ইকোনমি। অর্থাৎ আমরা ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় কাজগুলো চালাব। এতে আমাদের কর্মঘণ্টা বাঁচবে। যোগাযোগ যাতায়াতের সমস্যা হবে না। সেইসঙ্গে আমি চাই আমাদের সোসাইটির সবাই ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করুক। এখনতো পেনশন থেকে শুরু করে বিল দেয়া পর্যন্ত সমস্ত কাজ অনলাইনে করছে। এমনকি, আমি যে প্রথমবার ক্ষমতায় এসে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি করেছিলাম, আমরা সেগুলো অনলাইনে দিয়ে দিই।

এখন আমাদের ৬ লাখ ৮০ হাজার ছেলে মেয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে অর্থ উপার্জন করে। একসময় তারা সমস্যায় পড়তো। তাদের ব্যাংকগুলো জিজ্ঞেস করতো এত টাকা কোত্থেকে আসে। এ নিয়ে আমি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে ডেকে বিষয়টি সহজ করে দিতে বললাম। এ ছাড়া ফ্রিল্যান্সারদের সার্টিফিকেট, রেজিস্ট্রেশন ও স্বীকৃতির ব্যবস্থা করে দিয়েছি। পাশাপাশি আমি বক্তব্যে এটা নিয়ে বলতে শুরু করলাম। এটাকে আরও জনপ্রিয় করার জন্য যে এটাও একটা ইনকামের সুযোগ।

তবে কোভিড-১৯ এর অতিমারির সময় এই ডোরটা ওপেন হয়ে গেল। তখন আমিও বসে বসে আমার সব মিটিং ভার্চুয়ালি করেছি। ২০৪১ এর বাংলাদেশে আমাদের সব ছেলে-মেয়ে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করবে। এবং যত প্রযুক্তি আসবে তা শিখে আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

প্রশ্ন: স্মার্ট বাংলাদেশ করলে কিন্তু ডিজিটাল সিকিউরিটি থেকে হ্যাকিং হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকেও সিকিউরিটি হ্যাকিং হয়েছিল। এছাড়া সরকারি সাইট থেকেও তথ্য চুরি হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে নেক্সট জেনারেশনের জন্য আপনারা কী পদক্ষেপ নেবেন?

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা: আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স যেমন আমাদের জন্য একটা নতুন সুযোগ সৃষ্টি করে পাশাপাশি সমস্যাও সৃষ্টি করে। আর হ্যাকিংয়ের ব্যাপারে বলব, বাংলাদেশ ব্যাংক ডিজিটালাইজড করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল আমাদের আসার আগে। এটা বোধহয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বিশ্বব্যাংকের সহায়তা নিয়ে শুরু হয়েছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকে কোনো ফায়ারওয়াল ছিল না। তাই সেখানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। এ জন্য হ্যাকিংটা হয়েছিল। যে কোনো ইস্যুতে আমাদের সিকিউরিটিটা ঠিক আছে কি না বা কোন পদ্ধতিতে করা যায়, সেটা নিজেদেরই সতর্ক থাকতে হবে। এর বাইরে আমরা সাইবার নিরাপত্তা আইন করেছি। তারপরও আমরা বলব যারা ব্যবহার করবে তাদের সচেতন থাকতে হবে।

কৃতজ্ঞতায়: টেকশহর ডট কম

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *