প্রতিবেদন

বিকাশ অ্যাপে সহজে সঞ্চয় হিসাব খুলুন

ভবিষ্যতের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে কার্যকর ভূমিকা রাখে নিয়মিত সঞ্চয়। এদিকে প্রতি মাসে ব্যাংকে যাওয়া, ফরম পূরণ, লম্বা লাইনে দাঁড়ানোর ঝামেলা, কর্মব্যস্ততা, সময় স্বল্পতাসহ বিভিন্ন কারণে ইচ্ছে থাকার পরও অনেকের জন্য সঞ্চয় কঠিন হয়ে পড়ে। তবে সঞ্চয়ের মতো দরকারি আর্থিক সেবা গ্রাহকদের হাতের মুঠোয় চলে এসেছে বিকাশ-এর মতো মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের কল্যাণে। এখন মূল্যবান সময় বাঁচিয়ে গ্রাহকরা কোন রকম কাগজ-পত্রের ঝামেলা ছাড়াই বিকাশ অ্যাপে সেভিংস খুলতে পারছেন মাত্র কয়েক মিনিটে।

২০২১ সালে চালু হওয়া বিকাশ অ্যাপে এই সঞ্চয় সেবার গ্রাহক এখন পর্যন্ত ১৫ লাখ। এর মধ্যে এই গ্রাহকদের ৩০ শতাশই নারী। ছোট অংকের এসব মাসিক সঞ্চয়ে ভবিষ্যতের আর্থিক নিরাপত্তা যেমন কিছুটা হলেও নিশ্চিত হচ্ছে, তেমনি অনেক গ্রাহক বিশেষ করে তরুণদের মাঝে সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তুলতেও সহায়তা করছে। নাগরিকদের নিয়মিত সঞ্চয়ের অভ্যাস দেশের অর্থনীতির জন্যও ইতিবাচক ঘটনা।

সেভিংস সেবা বিকাশ অ্যাপে
বর্তমানে বিকাশ অ্যাপে মিলছে দুই ধরণের সেভিংস সেবা- সাধারণ সেভিংস এবং ইসলামিক সেভিংস। সাধারণ সেভিংস এ পাওয়া যাবে চার প্রতিষ্ঠানের সেবা- আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেড, ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড এবং ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড। ইসলামিক সেভিংস এ পাওয়া যাবে দ্য সিটি ব্যাংক লিমিটেডের শরিয়াহভিত্তিক ‘সিটি ইসলামিক’ সেভিংস স্কিম।

ডিপোজিটের পরিমান এবং মেয়াদ
প্রতি মাসে ব্যাংকে না গিয়েই বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে সুবিধাজনক যেকোনো স্থান থেকে সঞ্চয়ের মাসিক কিস্তি জমা দেয়ার সুযোগ থাকায় গ্রাহকরা দিন দিন আগ্রহী হয়ে উঠছেন ডিজিটাল সেভিংস স্কিমে। বিকাশ অ্যাপে কয়েকটি সহজ ধাপ অনুসরণ করে গ্রাহকরা খুলতে পারছেন মাসিক ৫০০ থেকে ৩,০০০ টাকা কিস্তিতে সর্বনিম্ন দুই বছর থেকে সর্বোচ্চ চার বছর মেয়াদী সঞ্চয় স্কিম। দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী অ্যাডভান্স ইনকাম ট্যাক্স (এআইটি) ও আবগারী শুল্ক প্রযোজ্য হবে এই সেভিংসগুলোর ওপর।

যেভাবে খোলা যাবে সেভিংস ‍অ্যাকাউন্ট
নতুন সেভিংস স্কিম খুলতে বিকাশ অ্যাপের হোমস্ক্রিন থেকে ‘সেভিংস’ আইকনে ট্যাপ করে নিয়ম ও শর্তাবলিতে সম্মতি দিয়ে ‘নতুন সেভিংস স্কিম খুলুন’-এ ট্যাপ করতে হবে। সেভিংস-এর ধরন থেকে পছন্দ অনুযায়ী ‘সাধারণ সেভিংস’ অথবা ‘ইসলামিক সেভিংস’ বেছে নিয়ে সেভিংস-এর সময়কাল দুই, তিন বা চার বছর এবং জমার ধরন (মাসিক) নির্বাচন করতে হবে। এরপর প্রতি মাসে যে পরিমাণ টাকা জমাতে ইচ্ছুক — ৫০০, ১,০০০, ২,০০০ অথবা ৩,০০০ তা নির্বাচন করতে হবে।

পরের ধাপে আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাংকের তালিকা থেকে পছন্দের স্কিম নির্বাচন করতে হবে। এরপর জমার তথ্য ভালোভাবে দেখে নমিনি সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সেভিংস-এর উদ্দ্যেশ্য নির্বাচন করতে হবে। তারপর সেভিংস-এর সার-সংক্ষেপ দেখে নিয়ে এবং নিয়ম ও শর্তাবলি ভালোভাবে পড়ে, বুঝে সম্মতি দিন।

সবশেষে বিকাশ অ্যাকাউন্টের পিন নাম্বার দিয়ে স্ক্রিনের নিচের অংশ ট্যাপ করে ধরে রাখতে হবে। সেভিংস-এর আবেদনটি সম্পন্ন হলে, বিকাশ ও ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রাহক তার মোবাইলে নিশ্চিতকরণ ম্যাসেজ পেয়ে যাবেন। সেভিংস স্কিম খোলার পদ্ধতি আরও ভালোভাবে দেখে নেয়া যাবে এই ঠিকানায়– https://www.bkash.com/products-services/general-savings এবং https://www.bkash.com/products-services/islamic-savings।

টাকা জমা দেয়ার পদ্ধতি
প্রতি মাসের নির্ধারিত তারিখে বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে সঞ্চয়ের কিস্তি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেভিংস অ্যাকাউন্টে জমা হয়ে যাবে। তাই, নির্ধারিত তারিখের আগেই প্রয়োজনীয় টাকা বিকাশ অ্যাকাউন্টে রাখতে হবে, ভুলে গেলেও দুশ্চিন্তার কিছু নেই, কারণ এসএমএস-এর মাধ্যমে কিস্তি জমার তারিখ স্মরণ করিয়ে দেয়া হয় গ্রাহককে।

কিস্তির টাকা জমা দিতে ব্যর্থ হলে কি হবে
নির্দিষ্ট তারিখে বিকাশ অ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত ব্যালান্স না থাকলে কিস্তির টাকা জমাদান ব্যর্থ হবে। এক্ষেত্রে পরবর্তী সাত দিন বিকাশ গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে কিস্তির টাকা কেটে নেয়ার চেষ্টা করবে। যতদিন কিস্তির টাকা কেটে নেয়া সম্ভব না হবে, তত দিনের মুনাফা থেকে বঞ্চিত হবেন গ্রাহক। যদি কিস্তি সংগ্রহের সর্বশেষ চেষ্টা ব্যর্থ হয়, তবে গ্রাহক কিস্তি প্রদানে ব্যর্থ হয়েছেন বলে গণ্য হবে এবং উক্ত কিস্তির পরিমাণের উপর মুনাফা বঞ্চিত হবেন।

সেভিংসের মেয়াদপূর্ণ হলে টাকা উত্তোলন যেভাবে
গ্রাহকরা মোট জমার পরিমাণ, সঞ্চয়ের মেয়াদ এবং মুনাফার পরিমাণসহ প্রয়োজনীয় সব তথ্য বিকাশ অ্যাপ থেকে যেকোন সময় দেখতে পারবেন। আবার মেয়াদপূর্তিতে লাভসহ আসল টাকা ফেরত আসবে বিকাশ অ্যাকাউন্টে। শুধু তাই নয়, লাভসহ সম্পূর্ণ টাকা ক্যাশ আউট করতে লাগবে না কোনো খরচও।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী এই সঞ্চয়গুলোর মুনাফা ও অন্যান্য বিধিবিধান প্রতিপালিত হয় এবং ই-কেওয়াইসি এর মাধ্যমে নিবন্ধিত বিকাশ গ্রাহকরাই সঞ্চয় সেবা নিতে পারছেন। আবার ই-টিন এর তথ্য সেভিংস স্কিমে প্রদান করলে ওই স্কিমে অর্জিত লাভের উৎসে কর কম কর্তন করা হবে। এক্ষেত্রে সেভিংস স্কিমের মেয়াদ শেষ হবার আগে বিকাশ অ্যাপের সেভিংস অপশনে গিয়ে যেকোনো সময় ই-টিন এর তথ্য প্রদান করতে পারবেন গ্রাহক।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *