সাম্প্রতিক সংবাদ

নাগরিকদের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ফাঁস: তদন্তে নেমেছে র‍্যাব

ক.বি.ডেস্ক: সরকারি ওয়েবসাইট থেকে লাখ লাখ নাগরিকের গোপন ও ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের ঘটনায় তদন্তে নেমেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। কোন প্রতিষ্ঠান থেকে তথ্য ফাঁস হয়েছে, প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতার সুযোগে হ্যাক করে তথ্য হাতিয়ে নেয়া হয়েছে কি না, নাকি ইচ্ছাকৃতভাবে তথ্য পাচার করা হয়েছে- এসব বিষয় তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

র‍্যাব এর লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, আমরা এ ব্যাপারে কাজ করছি। পুলিশ ও র‍্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সব সাইবার টিম সমন্বিতভাবে বিষয়টি তদন্ত করছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সংরক্ষিত তথ্য এক জায়গায় পাওয়া গেছে। তথ্যগুলো যে কোথা থেকে কীভাবে এলো তা এখন পর্যন্ত বোধগম্য নয়। সেটাই জানার চেষ্টা করছি। তথ্য কীভাবে ফাঁস হয়েছে, সার্ভার হ্যাক হয়েছিল কি না, নাকি সার্ভারের দুর্বলতা ছিল, নাকি কেউ কাউকে ইচ্ছাকৃতভাবে তথ্য দিয়েছে- আমরা সেসব জানতে কাজ করছি। তথ্যের অনেক প্যাটার্ন আছে। কোন ধরনের তথ্য ফাঁস হয়েছে, ব্যক্তির ব্যক্তিগত তথ্য নাকি প্রাতিষ্ঠানিক তথ্য ফাঁস হয়েছে, ফাঁসকৃত তথ্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত ২৭ জুন হঠাৎ করে বাংলাদেশিদের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের বিষয়টি খুঁজে পান সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থা বিটক্রেক সাইবার সিকিউরিটির গবেষক ভিক্টর মার্কোপোলোস।

ভিক্টর মার্কোপোলোস দাবি করেন, ফাঁসকৃত তথ্যের মধ্যে নাগরিকদের পূর্ণ নাম, ফোন নম্বর, ইমেইল ঠিকানা ও জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর রয়েছে। এরপর তিনি বাংলাদেশ ই-গভর্নমেন্ট কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিমকে (সিইআরটি) বিষয়টি অবহিত করেন। ফাঁসকৃত তথ্যগুলো পাওয়া খুবই সহজ। গুগলের ফলাফল হিসেবে এগুলো সামনে আসে। আমি এটি খুঁজতেও যাইনি। আমি এসকিউএল ইরর নিয়ে গুগলিং করছিলাম, আর এটি দ্বিতীয় ফলাফলে চলে আসে।

বাংলাদেশে ১৮ বছর বয়সী প্রত্যেককে জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়া হয়। যেটির প্রত্যেকটির আলাদা নম্বর থাকে। প্রত্যেক নাগরিকের জাতীয় পরিচয়পত্র নেয়া বাধ্যতামূলক। এ পরিচয়পত্রের মাধ্যমে ড্রাইভিং লাইসেন্স, পাসপোর্ট, জমি বেচা-কেনা ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলাসহ সব কাজ করা হয়। সে কারণে যেসব তথ্য ফাঁস হয়েছে সেগুলোই বেশ ঝুঁকির। কিন্তু এসব তথ্য ব্যবহার করে পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন অনলাইনের আবেদনে ঢোকা, পরিমার্জন বা আবেদন মুছে ফেলা এমনকি জন্মনিবন্ধনের তথ্যের ভ্যারিফিকেশনও দেখা যাবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ভিক্টর মার্কোপোলোস।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তিবিষয়ক সংবাদমাধ্যম টেকক্রাঞ্চ জানিয়েছে, বাংলাদেশিদের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের বিষয়টি সত্যি। এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে ওই ওয়েবসাইটের ‘পাবলিক সার্চ টুলে’ ফাঁস হওয়া তথ্য খুঁজে দেখা হয়। তথ্য খোঁজার পর ওয়েবসাইট থেকে ফাঁসকৃত তথ্যসহ অন্যান্য তথ্য দেয়া হয়। যার মধ্যে রয়েছে- যিনি রেজিস্ট্রেশন করার আবেদন করেছেন তার নাম। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আবেদনকারীর বাবা-মায়ের নামও পাওয়া গেছে। তারা ওই ওয়েবসাইটটির নাম প্রকাশ করবে না কারণ, সেটিতে এখনো ফাঁসকৃত তথ্যগুলো রয়েছে।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *