উদ্যোগ সাম্প্রতিক সংবাদ

পিপিপি’র সমন্বিত প্রয়াস: ৩০০ জনের কর্মসংস্থান

ক.বি.ডেস্ক: বেকার যুবদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরিতে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের চাহিদাভিত্তিক ট্রেডে কারিগরি শিক্ষার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করছে সরকার। এলক্ষ্যে বাংলাদেশ কোরিয়া টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার (বিকেটিটিসি), একশনএইড বাংলাদেশ এবং এটুআই’র আয়োজনে সম্প্রতি রাজধানীর বিকেটিটিসি’তে দিনব্যাপী একটি জব ফেয়ার আয়োজন করা হয়। জব ফেয়ারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন এটুআই’র প্রকল্প পরিচালক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর এবং একশনএইড বাংলাদেশ’র ম্যানেজার নাজমুল আহসান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. শহীদুল আলম।

দিনব্যাপী এই মেলায় বিকেটিটিসি থেকে বিভিন্ন বিষয়ে ট্রেনিং সম্পন্ন করা প্রশিক্ষণার্থীরা অনস্পট বুকিংয়ের মাধ্যমে চাকুরির আবেদন করেন। যাদের মধ্য থেকে প্রায় তিন শতাধিক প্রশিক্ষণার্থীকে দেশের ১২টি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান যোগ্যতা অনুযায়ী চাকুরিতে প্রবেশের সুযোগ করে দিবেন। এসব প্রতিষ্ঠানের নিয়োগকর্তারা তাদেরকে মৌখিক ও প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের পছন্দের প্রার্থীদের নির্বাচন করেন। জব ফেয়ারে অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- স্বপ্ন, ট্রান্সকম ইলেক্ট্রনিক্স লিমিটেড, ট্রান্স-এশিয়া ইন্ড্রাট্রিজ লিমিটেড, এসিআই মটরস লিমিটেড, ম্যাটাডোর গ্রুপ, পারটেক্স স্টার গ্রুপ, স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপ, ইস্ট-ওয়েস্ট হিউম্যান রিসোর্স লিমেটেড, ইয়েস্টার্ন রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেস লিমিটেড, পার্কওয়ে, আম্বার আইটি এবং ব্যাবিলন গ্রুপ।

ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বলেন, ট্রেনিং বা পড়াশুনা শেষে কোথায় চাকুরি হবে, কীভাবে হবে এসব চিন্তা না করে চাকুরিপ্রত্যাশীদের দক্ষতার ওপর জোর দিতে হবে। চাকুরিদাতাদের জন্য আপনি কতটুকু কাজ করতে পারবেন, প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের করতে পারবেন তা দেখেই তারা আপনাকে নিয়োগ দেন। সরকার পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের মধ্যে একটা সমন্বয় করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। বৈদেশিক কর্মসংস্থানের পথকে সুগম করতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। সরকার কারিগরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছে। নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে পারলে ও নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখলে যেকেউ তার যোগ্য অবস্থানে পৌঁছাতে পারেন।

ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, বৈশ্বিক পৃথিবীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে আমাদের পরিবর্তন হতে হবে। কারিগরি শিক্ষা নিয়ে যে ট্যাবু আছে তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে না বদলাতে পারলে আমরা টিকে থাকতে পারবো না।

নাজমুল আহসান বলেন, প্রযুক্তিনির্ভর সোনার বাংলা গড়তে কারিগরি দক্ষতার ওপর জোর দিতে হবে। প্রচলিত ধারণা ভেঙ্গে কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমেও ভালো চাকুরি পাওয়ার ধারণাটিকে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বাংলাদেশকে উন্নত দেশের পর্যায়ে নিয়ে যেতে হলে প্রযুক্তি দক্ষতা কিংবা কারিগরি দক্ষতার সঙ্গে প্রচলিত শিক্ষার সমন্বয়ের কোন বিকল্প নেই। একই সঙ্গে নতুন নতুন উদ্ভাবনের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমে দেশকে কারিগরি শিক্ষায় সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে সরকারের কার্যক্রমে একশনএইড বাংলাদেশ সার্বিক সহযোগিতা করবে।

মো. শহীদুল আলম বলেন, আজকে চাকুরিপ্রত্যাশীরা চাকুরির জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ঘুরছে, কিছুদিন পর চাকুরিদাতারা প্রশিক্ষিত চাকুরিপ্রত্যাশীদের কাছে যাবে। সেজন্য দেশের টিটিসিগুলোকে ইন্টারলিংকড হয়ে আরও কাজ করতে হবে। কল্পনাপ্রসূত প্রশিক্ষণ না দিয়ে কোম্পানির চাহিদা অনুযায়ী প্রশিক্ষণের দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রযুক্তি উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে কোম্পানিগুলো তাদের মেশিনারিজ পরিবর্তন করছে। সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয় বা ট্রেনিং সেন্টারগুলোর ত্রিশ বছর আগের ল্যাবে বসে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ না দিয়ে সময়োপযোগী দক্ষ জনবল তৈরিতে মনোযোগ দিতে হবে।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *