উদ্যোগ

বিশ্বজয়ের মিশনে শেষ হলো নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ

ক.বি.ডেস্ক: জমকালো পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শেষ হলো ৯ম নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২৩। বিশ্বের সবচেয়ে বড় হ্যাকাথন: বাংলাদেশ পর্ব আয়োজন করলো বেসিস। বেসিস’র উদ্যোগে ও বেসিস স্টুডেন্টস ফোরামের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হয় দুই দিনব্যাপী (৬-৭ অক্টোবর) এই হ্যাকাথন।

নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২৩-এ দেশের ৯টি শহর থেকে ২ হাজারেরও বেশি প্রতিযোগী অংশ নিয়েছে। সেখান থেকে বাছাইকৃত ২১০টি প্রকল্পের মধ্যে হাইব্রিড মডেলে শীর্ষ ৫০টি প্রকল্প নিয়ে আইইউবি’তে সরাসরি এবং বাকি ১৬০টি প্রকল্প নিয়ে অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয় দুই দিনব্যাপী হ্যাকাথন।

গতকাল শনিবার (৭ অক্টোবর) ইন্ডিপেন্ডেট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (আইইউবি) এর অডিটোরিয়ামে নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২৩ এর পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি। বিশেষ অতিথি ছিলেন আইইউবি’র উপাচার্য প্রফেসর তানভীর হাসান এবং সম্মানিত অতিথি ছিলেন বাংলাদেশের ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের অর্থনীতি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কর্মকর্তা জেমস গার্ডিনার।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২৩-এর আহ্বায়ক তানভীর হোসেন খান এবং সমাপনী বক্তব্য রাখেন বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ। বক্তব্য রাখেন নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জের উপদেষ্টা মোহাম্মদ মাহদী-উজ-জামান ও আরিফুল হাসান অপু।

নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২৩ এ বিজয়ী যারা:
ঢাকা: উইনার রুবাস্ট; রানার্স-আপ অ্যাস্ট্রোটাইটান্স; ২য় রানার্স-আপ এক্লিপ্সো। চট্টগ্রাম: উইনার আলফা; রানার্স-আপ তুখোড়; ২য় রানার্স-আপ প্লেক্সাস। রাজশাহী: উইনার ভয়েজার্স; রানার্স-আপ এরর ৪০৪; ২য় রানার্স-আপ মার্স মার্ভেল। কুমিল্লা: উইনার হাইব্রিড; রানার্স-আপ এজফ্লাই; ২য় রানার্স-আপ মুনর‍্যাকার্স।

সিলেট: উইনার এক্লিপ্সিয়া; রানার্স-আপ প্রস্ফুট; ২য় রানার্স-আপ অ্যাস্ট্রোগ্লাইড। খুলনা: উইনার স্টর্ম ট্রুপার্স; রানার্স-আপ মহাকর্ষ; ২য় রানার্স-আপ অনির্বাণ। বরিশাল: উইনার: দ্য টাইটানস; রানার্স-আপ ইয়োট্টাবাইট; ২য় রানার্স-আপ স্পেস আলকেমিস্টস। রংপুর: উইনার রিকার্শন; রানার্স-আপ দ্য স্পেস স্কোয়াড; ২য় রানার্স-আপ গ্যালাক্টিক গ্ল্যাডিয়েটরস। ময়মনসিংহ: উইনার ইনসেপশন লাস্ট হোপ; রানার্স-আপ সোলারসেন্টিনেল; ২য় রানার্স-আপ লুনার এ্যালাইস।

মন্ত্রী ড. দীপু মনি বলেন, এটি একটি অসাধারণ প্ল্যাটফর্ম যা শুধুমাত্র উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করে না বরং আমাদের তরুণদের মধ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রতি শেখার আগ্রহ জাগায়। এটি সৃজনশীল এবং স্বাধীন চিন্তা শক্তি প্রয়োগের উপযুক্ত স্থান। এই ধারাবাহিকতা আমাদের তরুণদেরকে উজ্জীবিত করবে এবং চতুর্থবার বিশ্বজয় করবে বলে আমি আশা করি।

জেমস গার্ডিনার বলেন, এটা অসাধারণ যে বিশ্বের অন্য কোনো দেশ তিনবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়নি। আপনাদের নিজেদেরকে নিয়ে আপনাদের গর্ব করা উচিৎ। আমি পরের বছর আবারো আপনাদের মধ্য থেকে চতুর্থ বারের মতো বিজয়ী দল দেখতে চাই। নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জের মাধ্যমে আপনাদের এই বিস্ময়কর সাফল্যের জন্য আমি আপনাদেরকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।

প্রফেসর তানভীর হাসান বলেন, এই ইভেন্টটি শুধুমাত্র আমাদের দেশের তরুণদের জন্যই নয় বরং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ উৎকর্ষ সাধনের জন্যও তাৎপর্যপূর্ণ। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সর্বদা মানুষের অগ্রগতির অগ্রভাগে রয়েছে। আমরা যে বিশ্বে বাস করি সেটিকে আকার দিয়েছে এবং মানবতার মুখোমুখি হওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জগুলির সমাধান উদ্ভাবন সম্ভব হয়েছে উন্নত প্রযুক্তির বিকাশের মাধ্যমে। আমরা বর্তমানে একটি নতুন শিল্প বিপ্লবের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছি। যেখানে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি, শিল্প এবং সমাজকে নতুন আকার দিচ্ছে। এটি সর্বোপরি আমাদের তরুণদের আগামী দিনের বিজ্ঞানী এবং প্রযুক্তিবিদ হওয়ার জন্য উত্সাহিত করবে।

রাসেল টি আহমেদ বলেন, এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তরুণদের হাতে-কলমে অভিজ্ঞতা অর্জন করে যা পাঠ্যপুস্তক এবং শ্রেণীকক্ষের বাইরে। তরুণ মনকে বড় স্বপ্ন দেখতে এবংবিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জের বাস্তবধর্মী সমাধান করে আগামী দিনের বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী এবং উদ্ভাবক হওয়ার ব্যাপারে অনুপ্রাণিত করে। এটি আমাদের তরুণদের প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে, উত্তর খুঁজতে এবং মহাবিশ্বের বিস্ময়কে জানতে উত্সাহিত করবে৷ স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমরা নতুন দিগন্তের দরজা খুলে দিচ্ছি। এর মাধ্যমে মহাকাশ সম্পর্কে আমাদের উপলব্ধি এবং উদ্ভাবন উভয় ক্ষেত্রেই সক্ষমতার জানান দেওয়া হচ্ছে।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *