উদ্যোগ সাম্প্রতিক সংবাদ

বাংলাদেশে স্মার্টফোন উতপাদনে শাওমি!

ক.বি.ডেস্ক: ম্যানুফ্যাকচারিং পার্টনার ডিবিজির সঙ্গে শাওমি স্থাপন করল নতুন এক স্মার্টফোন উতপাদন কারখানা। যার মাধ্যমে সূচনা হলো শাওমি’র ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ যাত্রার। এই সহযোগিতায় প্রতি বছর শাওমি বাংলাদেশের কারখানাটিতে ৩০ লাখের কাছাকাছি স্মার্টফোন তৈরি করবে। প্রাথমিক অবস্থায় এই কারখানায় প্রায় এক হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে। প্রায় ৫৫ হাজার বর্গফুট আয়তনের কারখানাটির অবস্থান গাজীপুরের বাইপাস রোডের কাছে ভগরায়।

শাওমি’র অনন্য ও উদ্ভাবনী ধারণা, ডিরেক্ট-টু-কাস্টমার ব্যবসায়িক মডেল স্মার্টফোন শিল্পে যুগান্তকারী ভূমিকা রেখেছে। স্মার্টফোন উতপাদনের মাধ্যমে বাংলাদেশের বাজারে আরও দীর্ঘমেয়াদে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছে প্রতিষ্ঠানটি। এমন বিনিয়োগ ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ কার্যক্রমে আরও অনেক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানকে সংযুক্ত করবে এবং বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে একটি ম্যানুফ্যাকচারিং হাব হিসেবে পরিচিত করাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

বিশ্বখ্যাত স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান শাওমি আজ (২১ অক্টোবর) বাংলাদেশে স্থানীয়ভাবে স্মার্টফোন উতপাদনের ঘোষণা দিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ উদ্যোগ বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন শুরু করছে প্রতিষ্ঠানটি। ঢাকার একটি স্থানীয় হোটেলে বিশেষ আয়োজন করে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ ঘোষণা করে শাওমি বাংলাদেশ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্পখাত ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। অনুষ্ঠানে অনলাইনে সংযুক্ত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

শাওমি ডিবিজি টেকনোলজি বিডি লিমিটেডের সঙ্গে বাংলাদেশে স্মার্টফোন তৈরি করবে। ডিবিজি একটি গ্লোবাল ইএমএস কোম্পানি, তাদের ম্যানুফ্যাকচারিং বিজনেস রয়েছে বিশ্বব্যাপী (চীন, ভিয়েতনাম, ভারত প্রভৃতি)। বিভিন্ন দেশের স্বনামধন্য কিছু ব্র্যান্ড ও কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্স পণ্য তাদের কারখানায় তৈরি হয়। ডিবিজি হংকং স্টক এক্সচেঞ্জে পাবলিক লিস্টেড কোম্পানি।

কৌশলগত কারণেই শাওমি গাজীপুরকে বেছে নিয়েছে কারখানা স্থাপনের জন্য। সেখানে দক্ষ শ্রমশক্তি, শক্তিশালী সাপ্লাই চেইন রয়েছে- ফলে সবকিছুর সমন্বয়েই একটি প্রযুক্তি কোম্পানি হিসেবে শাওমি জায়গাটিকে বেছে নিয়েছে। শাওমি বাংলাদেশে কারখানাটিতে রেডমি সাব-ব্র্যান্ডের স্মার্টফোন দিয়ে শুরু করছে ফোন উতপাদন, যেটি আগামী নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এরপর ধীরে ধীরে শাওমির অন্য স্মার্টফোনের পাশাপাশি পোকোর ফোনও তৈরি হবে কারখানায়।

সালমান এফ রহমান বলেন, তরুণ নেতৃত্ব ও শাওমির মতো তরুণ কোম্পানির ওপর আমাদের যথেষ্ট বিশ্বাস রয়েছে। এমন নতুন প্রজন্মের সব কোম্পানি ও উদ্যোক্তাই হচ্ছে বাংলাদেশের একেকটা সফলতা। ডিজিটাল বাংলাদেশ উদ্যোগের অংশ হিসেবে বাংলাদেশে শাওমি’র প্রথম উতপাদন ইউনিট স্থাপনে আমরা অংশীদার হতে পেরে অনেক আনন্দিত। এই অংশীদারত্বের মাধ্যমে দেশের তরুণদের জন্য আরও সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং বৈশ্বিক মানের ইলেক্ট্রনিক্স ম্যানুফ্যাকচারিং ইকোসিস্টেম প্রতিষ্ঠা হবে। বাংলাদেশে এমন সূর্যোদয়ের জন্য শাওমিকে স্বাগতম।

মোস্তাফা জব্বার এক ভিডিও বার্তায় বলেন, আজকে আমার ও বাংলাদেশের জন্য একটা আনন্দের দিন। কারণ, শাওমি’র মতো একটা প্রখ্যাত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে কারখানা করতে যাচ্ছে। শাওমিকে ধন্যবাদ জানাই, তারা যে বাংলাদেশকে স্মার্টফোন উতপাদনের জন্য বেছে নিয়েছে। আমদানিকারক দেশ থেকে স্মার্টফোন উতপাদক দেশ হওয়ায় জন্য আমরা বহুদিন থেকেই যুদ্ধ করছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণা করেন, সেটার বাস্তবায়ন এখন দেখা যাচ্ছে। করোনার সময় সেটা আমরা টের পেয়েছি। ডিজিটাল ডিভাইসের গুরুত্ব আমরা বুঝেছি।

জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, এটি একটি মহত উদ্যোগ। স্থানীয়ভাবে স্মার্টফোন উতপাদন কারখানা চালুর জন্য শাওমিকে অভিনন্দন। এটি ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সহায়তা করবে এবং এর মাধ্যমে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ উদ্যোগ আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলো। এখন থেকে দেশের মানুষ একটি প্রতিযোগিতামূলক দামে, বিশ্বমানের শাওমি’র সর্বশেষ সব উদ্ভাবনী পণ্য উপভোগ করতে পারবেন।

শাওমি বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার জিয়াউদ্দিন চৌধুরী বলেন, স্থানীয়ভাবে স্মার্টফোন উতপাদনের মধ্য দিয়ে শাওমি আরও এগিয়ে গেলো, সে সঙ্গে বাংলাদেশের এই খাতে সামনের দিনগুলোতে আরও গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ রাখতে পারবে। বাংলাদেশকে আকর্ষণীয় ম্যানুফ্যাকচারিং হাব হিসেবে গড়ে তোলার রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে দূরদর্শী ভিশন, সেখান থেকেই আমরা স্থানীয়ভাবে স্মার্টফোন উতপাদনে আগ্রহী হয়েছি। স্থানীয়ভাবে স্মার্টফোন উতপাদনের মধ্য দিয়ে দেশের বাজারে দীর্ঘস্থায়ী কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, সেই সঙ্গে দেশে আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও আমরা অবদান রাখতে পারছি। বাংলাদেশের মানুষের জীবনমানকে উন্নত করতে ভূমিকা রাখতে পেরে আমরা সত্যিই উচ্ছ্বসিত।     

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *