মতামত সাম্প্রতিক সংবাদ

শেখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে ‘ইনফরমাল টিচার্স’

প্রথমবারের মতো ইন্টারনেট ব্যবহারের অভিজ্ঞতায় নতুন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা যে চ্যালেঞ্জগুলোর সম্মুখীন হয় তা উঠে এসেছে গুগলের নেক্সট বিলিয়ন ইউজার গবেষণা দলের নতুন শ্বেতপত্রে। এ ছাড়াও, প্রযুক্তি নির্মাণকারীরা কীভাবে বিদ্যমান শিক্ষণ পদ্ধতিতে নতুন ডিজিটাল পরিষেবাগুলোযুক্ত করতে পারে তা আলোচনায় উতসাহ প্রদান করা হয়েছে সম্প্রতি প্রকাশিত এ শ্বেতপত্রে।

‘ইনফরমাল টিচার্স অ্যান্ড দ্য পিভোটাল রোল দে প্লে ফর নিউ ইন্টারনেট ইউজার্স’ শীর্ষক এ শ্বেতপত্রে দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়া, লাতিন আমেরিকা এবং আফ্রিকার সাব সাহারা অঞ্চলের নতুন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা স্মার্টফোনের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো অনলাইনে যাওয়ার ক্ষেত্রে যে ধরনের বাধার সম্মুখীন হয় তা তুলে ধরা হয়েছে। এক্ষেত্রে, ইনফরমাল টিচার্স বা অনানুষ্ঠানিক শিক্ষক, যেমন: পরিবারের সদস্য, বন্ধু এবং প্রতিবেশীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা বলা হয়েছে। শ্বেতপত্রে গুরুত্বপূর্ণ যেসব তথ্য উঠে এসেছে-

এ অঞ্চলে নতুন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বর্তমান ইন্টারনেট জনসংখ্যার থেকে ভিন্ন: নতুন ব্যবহারকারীরা ২০২৫ সালের মধ্যে প্রথমবারের মতো অনলাইনে আগত বিলিয়ন সংখ্যক ব্যবহারকারীর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ হবে। তারা প্রত্যন্ত এলাকায় বসবাসরত হতে পারে এবং এক্ষেত্রে তাদের আর্থ-সামাজিকসহ প্রাসঙ্গিক অবস্থার ক্ষেত্রে লক্ষণীয় বিষয়গুলো হতে পারে: নিম্ন আয়, নারী বা বয়স্ক ব্যক্তি, আগে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারে সুযোগ তুলনামূলক কম ছিলো, নিজে অনুসন্ধান করে শেখার চেয়ে নির্দেশের মাধ্যমে শেখার প্রবণতা হবে লক্ষণীয়।

নতুন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা সাধারণত অন্যদের কাছ থেকে শিখে থাকেন, নিজ থেকে নয়: নতুন ব্যবহারকারীরা শেখার ক্ষেত্রে এবং প্রশিক্ষণের জন্য অনানুষ্ঠানিক শিক্ষকদের ওপর নির্ভর করে। যাদের মধ্যে রয়েছে: পরিবারের সদস্য, বন্ধুবান্ধব এবং প্রতিবেশী। এ ছাড়া, ৭৫ শতাংশ সময়ে তাদের কোন কিছু শিখতে সাহায্যের প্রয়োজন হয়। যেমন: ফোন চালু করে কোন পণ্য অর্ডার করা।

নতুন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের সবসময় শেখার সুযোগ থাকে না: প্রায় ৫০ শতাংশ নতুন ব্যবহারকারী শিক্ষকদের কাছ থেকে শেখার প্রয়োজনীয় সুযোগ পান না। ফলে, তাদের শিক্ষকরা উপস্থিত হলেই কেবল তারা শিখতে পারেন; এতে করে তারা শেখার সুযোগ হারান।

বর্তমান শেখার অভিজ্ঞতার বেশিরভাগ পুরোপুরি অভ্যাসগত পুনরাবৃত্তিমূলক শিক্ষা: নতুন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ফোনের জটিল বিষয়গুলো বুঝতে সাধারণ শিক্ষার বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ৭৮ শতাংশ ছিলো কোনো ব্যাখ্যা ছাড়াই অভ্যাসগত পুনরাবৃত্তিমূলক শিক্ষা।

প্রযুক্তি নির্মাতারা আরও বেশি ব্যবহারকারীকে তাদের শেখার লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করতে পারবে: গবেষণায় অংশ নেওয়া নতুন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে মাত্র ৩০ শতাংশ তাদের শেখার অভিজ্ঞতাটিকে ইতিবাচক হিসেবে চিহ্নিত করেছেন এবং ৫২ শতাংশ নিরপেক্ষ বলে অভিহিত করেছেন। গবেষণাটি অনুযায়ী নতুন ব্যবহারকারী ও তাদের শিক্ষকদের ইন্টারনেটে যাত্রার অভিজ্ঞতা সমন্বিত, সহজ ও কার্যকর করার ক্ষেত্রে প্রযুক্তি নির্মাতাদের কাজ করার সুযোগ রয়েছে।

আর এ লক্ষ্যে, গুগল এ গবেষণার সারবস্তু নিয়ে সঠিক পণ্য ও সেবা নিয়ে আসতে পদক্ষেপ নেয়া শুরু করেছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় গুগল সার্চের অ্যাপ গুগল গো। এটি প্রথমবারের মতো যারা অনলাইনে ব্যবহার শুরু করেছে তাদের জন্য প্রযোজ্য, যেখানে গুগল অ্যাপের হোমস্ক্রিনে টিউটোরিয়াল ভিডিও যুক্ত করেছে। ভিডিওগুলো অনলাইনে করা কাজের পেছনের ধারণাকে ব্যাখ্যা করেনা বরং এ কাজ নিয়ে ধারণা দেয়।

এ বিষয়ে গবেষণার প্রধান ট্রেসি লিন্ডসে চ্যান বলেন, অনলাইনে আগত নেক্সট বিলিয়ন ব্যবহারকারীদের মধ্যে সাধারণত অন্যদের কাছ থেকেই শেখার প্রবণতা দেখা যায়। এটি নতুন ব্যবহারকারীদের জন্য চ্যালেঞ্জিং কারণ প্রযুক্তি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে মানুষ নিজেরা শিখতে পারে। এ শেখার প্রক্রিয়ায় শিক্ষকরা যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তা নিয়ে কথা বলার ক্ষেত্রে প্রযুক্তি নির্মাতাদের জন্য কাজের সুযোগ রয়েছে।  স্মার্টফোন, অ্যাপ্লিকেশন এবং ইন্টারনেট সম্পর্কে ব্যবহারকারীদের শেখার ক্ষেত্রে তারা ভূমিকা রাখতে পারে। এর ফলে, নতুন ব্যবহারকারী এবং শিক্ষকরা তাদের শেখার লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য একসাথে তাদের ডিজিটাল দক্ষতা আরও বাড়াতে পারবেন।

শ্বেতপত্রে উঠে আসা তথ্যগুলো গত এক বছর ধরে পরিচালিত নতুন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের নিয়ে গবেষণার ভিত্তিতে পাওয়া গেছে। সম্পূর্ণ শ্বেতপত্রটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *