সাম্প্রতিক সংবাদ

শেখ রাসেল এক ভালোবাসার নাম: মোস্তাফা জব্বার

ক.বি.ডেস্ক: ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, শেখ রাসেল এক ভালোবাসার নাম, মানবিক সত্ত্বার প্রতীক। রাসেল যদি বেঁচে থাকত, নিশ্চয়ই একজন মহানুভব, দূরদর্শী ও আদর্শ নেতা হত, যাকে নিয়ে দেশ ও জাতি গর্ব করতে পারত। বঙ্গবন্ধুর অতি আদরের নিষ্পাপ দুরন্ত প্রাণবন্ত শেখ রাসেল বেঁচে থাকলে আজ উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় ছায়াসঙ্গী হয়ে বড়বোন শেখ হাসিনার স্বজন হারা কষ্ট ও দেশের মানুষ নিয়ে তার রাতজাগা চিন্তার সহযোদ্ধা হতেন।

গতকাল বুধবার (১৮ অক্টোবর) ঢাকায় জিপিও মিলনায়তনে শেখ রাসেল দিবস ২০২৩ উপলক্ষ্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ আয়োজিত আলোচনা সভা ও কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এসব কথা বলেন।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ এবং ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক তরুণ কান্তি সিকদার বক্তৃতা করেন।

শেখ রাসেল দিবস ২০২৩ উপলক্ষ্যে মন্ত্রী, সচিব এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীগণ জিপিওতে স্থাপিত শেখ রাসেল স্মৃতিস্তম্ভে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন।

মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে তার লেখা একসেট করে বই ও সনদ বিতরণ করেন। প্রতিযোগিতায় বিটিসিএল আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মহাখালির ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী সোনালী প্রথম; বিটিসিএল আইডিয়াল স্কুল মগবাজারের ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাব্বির রহমান দ্বিতীয় এবং বিটিসিএল আদর্শ বালিকা বিত্যালয় মহাখালির নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফেরদৌসি ইসলাম তামান্না তৃতীয় স্থান অধিকার করেছেন।

মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, শেখ রাসেল অবহেলিত, পশ্চাৎপদ, অধিকার বঞ্চিত শিশু-কিশোরদের আলোকিত জীবন গড়ার প্রতীক হয়ে গ্রাম থেকে শহর তথা বাংলাদেশের প্রতিটি লোকালয়ে ছড়িয়ে পড়বে। শিশু-কিশোরদের ডিজিটাল দক্ষতাসম্পন্ন মানব সম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে শেখ রাসেল দিবসকে অর্থবহ করতে হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে ছোট্ট শেখ রাসেলদেরকে ভবিষ্যতের সৈনিক হিসেবে উপযুক্ত করে তৈরি করতে না পারলে স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সম্পদের নাম মেধা। ২০৫০ সাল পর্যন্ত আমাদের ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড কাজে লাগাতে হবে। এ লক্ষ্যে শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের উদ্যোগে বিটিআরসির এসওএফ তহবিলের অর্থায়নে ইতোমধ্যে সুবিধা বঞ্চিত অঞ্চলের শিশুদের জন্য ৬৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পার্বত্য অঞ্চলের ২৮টি পাড়া কেন্দ্রে শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের অভিযাত্রা শুরু হয়েছে এবং আরও ১০০০টি বিদ্যালয় ডিজিটাল করার কার্যক্রম চলছে। নতুন প্রজন্মকে চতুর্থ ও পঞ্চম শিল্প বিপ্লবের উপযোগী করে গড়ে তুলতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বদ্ধপরিকর। ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় গত সাড়ে ১৪ বছরে বাংলাদেশ অভাবনীয় সফলতা অর্জন করেছে। আমরা ফাইভজি যুগে প্রবেশ করেছি, সিক্সজি যুগে বাংলাদেশ প্রবেশ করবে এবং ২০৪১ সালের অনেক আগেই বাংলাদেশ সোনার বাংলায় রূপান্তর হবে। জ্ঞান ভিত্তিক সাম্য সমাজ প্রতিষ্ঠায় জ্ঞানার্জনের বিকল্প নাই।

সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান বলেন, শেখ রাসেল নির্ভিক, নির্ভয়, দুর্জয়। শিশু রাসেলের জীবনের বেশির ভাগ সময় কেটেছে বাবাকে ছাড়া। রাজনৈতিক কারণে পিতা বঙ্গবন্ধুর জীবনের অধিকাংশ সময়ই কেটেছে কারাগারে। তাই পিতাকে বেশি সময় কাছে পায়নি শেখ রাসেল। বাবাকে কাছে না পেয়ে মা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবকেই আব্বা বলে ডাকতেন শিশু রাসেল।

শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, বঙ্গবন্ধুর প্রিয় লেখক ছিলেন বার্ট্রান্ড রাসেল। পৃথিবীর বিখ্যাত দার্শনিক, সাহিত্যে নোবেল পাওয়া বার্ট্রান্ড রাসেল একজন বড় ধরনের নেতাও ছিলেন। বিশ্ব শান্তি রক্ষায় বিশ্ব মানবতার প্রতীক হয়ে আবির্ভূত হয়েছিলেন এই মানবিক নেতা। বড় হয়ে নিজ শিশু পুত্র এমন মানবিকতার আলোয় আলোকিত হবে এই মহৎ আশায় বঙ্গবন্ধু তার কনিষ্ঠ সন্তানের নাম রেখেছিলেন শেখ রাসেল। আদরের ছোট ভাই শেখ রাসেলকে নিয়ে অনেক বেদনাময় স্মৃতি এখনো দুচোখে অশ্রু ঝড়ায় বড় বোন শেখ হাসিনার দু’চোখে উল্লেখ করেন তিনি। নিজের লেখা ‘আমাদের ছোট রাসেল সোনা’ বইয়ের অংশ বিশেষের উদ্ধৃতি তিনি এসময় তুলে ধরেন তার বক্তৃতায়।

ড. শাহজাহান মাহমুদ বলেন, শেখ রাসেল শুধু আজ এক আবেগ ও অনুভূতির নাম। এক মায়াবী মুখের প্রতিচ্ছবি। ফোটার আগেই ঝরে যাওয়া এক রক্ত গোলাপের কলি। দেশ ও সমাজ গঠনে বোনের পাশে থেকে রাখতো ইতিবাচক ভূমিকা। ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা বিরোধী ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে সপরিবারে প্রাণ হারায় বঙ্গবন্ধু। ঘাতকদের নৃশংসতা থেকে রক্ষা পায়নি বঙ্গবন্ধুর শিশুপুত্র শেখ রাসেলও। রাসেলের বুক ফাটা চিৎকার ও আর্তনাদের কোনো মূল্য ছিলোনা ঘাতকদের কাছে।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *