সাম্প্রতিক সংবাদ

মাইগভ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে মাউশি’র ১৩০টি সেবা ডিজিটাইজেশনের উদ্বোধন

‘মাইগভ’ প্ল্যাটফর্মের আওতায় র‍্যাপিড ডিজিটাইজেশন কার্যক্রমের মাধ্যমে গত রবিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) অনলাইনে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) ১৩০টি সেবা ডিজিটাইজেশনের উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। মাইগভ এর মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের ১১৫টি সেবা ডিজিটাল সেবায় রূপান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের ইএমআইএস সিস্টেমকে সংযুক্ত করার মাধ্যমে আরও ১৫টি সেবাসহ সর্বমোট ১৩০টি সেবা ডিজিটাল সেবায় রূপান্তর করা হয়েছে।

উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধান অতিথি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এসময় বিশেষ অতিথি ছিলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এবং আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এটুআই’র চীফ টেকনোলজি অফিসার মোহাম্মদ আরফে এলাহী। সভাপতিত্ব করেন  মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন এবং স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক।

শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ না হলে করোনার মতো একটি কঠিন সময়ে দেশের সকল কার্যক্রম নিয়মিত চালিয়ে নেওয়া কঠিন হয়ে পড়তো। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের ফলে জনগণের সেবা প্রাপ্তির অধিকার এবং সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হচ্ছে। পাশাপাশি জনগণের হাতের মুঠোয় সেবা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। মাইগভ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে এখন থেকে শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ মাউশির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত সকলের সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত হবে এবং সহজ হবে। প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নিজেদের উন্নয়নের প্রতি মনোযোগী হওয়ার আহবান জানান মন্ত্রী।

আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ধীরে ধীরে সকল মন্ত্রণালয়ের ডিজিটাল সার্ভিসগুলোকে মাইগভ প্ল্যাটফর্মে যুক্ত করা হবে, যাতে জনগণ সরকারের সকল সেবা সবসময় একটি প্ল্যাটফর্ম থেকে গ্রহণ করতে পারেন। মাউশি’র সার্ভিস ডিজিটাইজেশনের ফলে সারাদেশের শিক্ষা পরিবারের সেবাগ্রহীতাগণ হয়রানিমুক্ত সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। যেকোন ধরনের ডকুমেন্ট ও পেমেন্ট অনলাইনেই প্রদান করাও এর মাধ্যমে সম্ভব। এইসব সেবাগুলোর সঙ্গে পরিচয় প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ভেরিফিকেশন এবং অথেন্টিকেশন করার সেবাও প্রদান করা সম্ভব। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে শুধুমাত্র জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দেওয়া নয়, বরং জনগণের হাতের মুঠোয় সেবা পৌঁছে দেওয়া।

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, মাইগভ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে মাউশি’র সেবাগুলোকে ইন্টিগ্রেটেড পদ্ধতিতে একটি একক পয়েন্টের মাধ্যমে জনগণের হাতে পৌঁছে দেওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। এর মাধ্যমে শিক্ষা পরিবারের এখন এক জায়গা থেকে ডিজিটাইজ সেবাগুলো গ্রহণ করতে পারবে এবং জনগণের হয়রানি কমে আসবে বলে দাবি করেন উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান।

মাইগভের মাধ্যমে মাউশি’র সেবাগুলো ডিজিটাইজেশনের ফলে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সেবাগ্রহীতাগণ যেমন: শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, কর্মচারীসহ সকলে খুব সহজেই ডিজিটাল পদ্ধতিতে সেবার আবেদন, সেবা সংশ্লিষ্ট পেমেন্ট, সেবার অগ্রগতি, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কার্যক্রম সেবাগ্রহীতা মাইগভ ওয়েব, মাইগভ অ্যাপ, ৩৩৩ কলসেন্টারে কল করে অথবা ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে সম্পাদন করতে পারবেন।

এই প্ল্যাটফর্ম থেকে জনগণ সকল সেবার সকল ধরনের তথ্য পাবেন এবং উক্ত সেবার আবেদনও ট্র্যাক করতে পারবেন। অপরদিকে সেবা প্রদানকারী কর্মকর্তাগণও একক জায়গা থেকে সকল সেবা প্রদান করতে পারবেন। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন শিক্ষক-কর্মচারীগণ মাতৃকালীন ছুটি, বৈদেশিক মাস্টার্স প্রভৃতি সেবা এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে খুব সহজেই অনলাইনে বা মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে গ্রহণ করতে পারবেন। আবেদনের জন্য অফিসে না গিয়েও আবেদনের সঙ্গে প্রয়োজনীয় সংযুক্তিগুলোর স্ক্যানকপি আপলোড দিয়ে কম সময়ে ঝামেলাহীন উপায়ে সম্পন্ন করতে পারবেন। এর ফলে সেবাগ্রহীতা ও প্রদানকারী উভয়ের সময় ও অর্থের অপচয় কমে আসবে, যা শুধুমাত্র শিক্ষা খাত নয়, সমগ্র বাংলাদেশের ডিজিটাল অগ্রযাত্রার পথে এক যুগান্তকারী মাইলফলক।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) প্রফেসর মো. শাহেদুল খবির চৌধুরীর সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে এটুআইর প্রকল্প পরিচালক ড. মো. আব্দুল মান্নান,যুগ্ম-প্রকল্প পরিচালক (ই-গভর্নেন্স) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর, যুগ্ম-প্রকল্প পরিচালক সেলিনা পারভেজ,পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরীসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়, আইসিটি বিভাগ, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, এটুআইর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং গণমাধ্যমকর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *