ন্যাশনাল ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন স্ট্র্যাটেজি বাস্তবায়নে এটুআই

ক.বি.ডেস্ক: এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই)-এর উদ্যোগে ন্যাশনাল ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন স্ট্র্যাটেজি বাস্তবায়নে এটুআই’র কর্মপরিকল্পনা নিয়ে একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কর্মশালায় বক্তারা বলেন, প্রযুক্তিবান্ধব উন্নয়ন-পরিকল্পনার অন্যতম চালিকাশক্তি হিসেবে এটুআই একটি জনবান্ধব, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং ইন্টারঅপারেবল ডিজিটাল ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে। সরকারি সেবাকে আরও সহজ, স্বচ্ছ এবং কার্যকর করতে ডিজিটাল সমাধান বাস্তবায়নের মাধ্যমে নাগরিক সন্তুষ্টি বৃদ্ধি ও প্রশাসনিক দক্ষতা উন্নত করা হচ্ছে।
গতকাল সোমবার (২৪ মার্চ) ঢাকায় অনুষ্ঠিত কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। বিশেষ অতিথি ছিলেন আইসিটি সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী। বক্তব্য রাখেন এটুআই’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মামুনুর রশীদ ভূঁইয়া। করণীয় (সংস্কার রোডম্যাপসহ) উপস্থাপন করেন এটুআই’র হেড অব প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট আবদুল্লাহ আল ফাহিম। সভাপতিত্ব করেন এটুআই প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. রাশেদুল কবির মান্নাফ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম আমিরুল ইসলাম, আইসিটি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ার উদ্দিন, বিডিসিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. তৌফিক আল মাহমুদ, সিসিএ এর নিয়ন্ত্রক এ টি এম জিয়াউল ইসলাম, হার পাওয়ার প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক জোহরা বেগম, ইউএনডিপি বাংলাদেশের সিনিয়র গভর্ন্যান্স স্পেশালিস্ট শীলা তাসনিম হকসহ আইসিটি বিভাগ, ইউএনডিপি এবং এটুআই কর্মকর্তারা।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, “ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনের মাধ্যমে সরকারি ক্রয় ব্যবস্থাকে আরও স্বচ্ছ করা, পাইলট প্রকল্পগুলোর ইন্টারঅপারেবিলিটি নিশ্চিত করা এবং নাগরিকদের সমস্যাগুলো সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করে সমাধানের পথ খোঁজা জরুরি। ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন ও ইন্টারঅপারেবিলিটি নিশ্চিত করতে হলে আমাদের সমন্বিত ও কাঠামোগত পরিবর্তন আনতে হবে। আমরা এমন একটা ইকোসিস্টেম তৈরি করতে চাই, যেখানে ইন্টারঅপারেবিলিটি নিশ্চিত হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে ৫ মিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, তবে বাস্তবায়নের জন্য আরও উচ্চ লক্ষ্য নির্ধারণ করা প্রয়োজন।”
তিনি আরও বলেন, “এটুআই’র মূল লক্ষ্য হবে ডিজিটাল গভর্নেন্সের উন্নয়ন এবং প্রযুক্তিভিত্তিক উদ্ভাবনের মাধ্যমে নাগরিক সেবা আরও সহজতর করা। এক্ষেত্রে প্রতিটি খাতের স্টেকহোল্ডারদের মতামতের ভিত্তিতে নীতি প্রণয়ন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণও একইসঙ্গে জরুরি। সরকারের ডিজিটাল ডেটাবেজ কিভাবে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে শেয়ার করা যাবে ও গ্রহণ করা যাবে, তা নিশ্চিত করতে হবে। নাগরিকদের আস্থার বিষয়টি অগ্রাধিকার দিয়ে সমাধান তৈরি করতে হবে। উপকূলীয় ও উত্তরাঞ্চলভিত্তিক সমস্যাগুলো পৃথকভাবে চিহ্নিত করে সমাধান তৈরি করতে হবে।”

শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, “এটুআই দেশের ডিজিটাল রূপান্তরের ক্ষেত্রে সরকারের মুখচ্ছবি। এটুআই অনেক উদ্ভাবনী প্রকল্পের পাশাপাশি সকল মন্ত্রণালয়ের ওয়েব পোর্টাল তৈরি ও বাস্তবায়ন করেছে। ইতোমধ্যে এটুআই অনেকগুলো উদ্ভাবনী উদ্যোগ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কাছে হস্তান্তর করেছে। সাইলো-বেজড উন্নয়ন কৌশল পরিহার করে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে, যা টেকসই ডিজিটাল ইকোসিস্টেম তৈরিতে সহায়ক হবে। আমরা যদি ডেটা ইকোসিস্টেমে উপযুক্ত ডেটা ইনপুট না করি, তাহলে সাইলো-বেজড হাইব্রিড ডেভেলপমেন্টে পরিণত হবে। এক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে স্ক্যানিং ও ম্যাপিং প্রক্রিয়া অনুসরণ করলে কাজ সহজ হয়ে যায়।”
তিনি আরও বলেন, “এপোস্টিল কনভেনশন বাস্তবায়নের ফলে নাগরিক সেবা গ্রহণ সহজ, সময়, ব্যয় ও শ্রম সাশ্রয়ে সহায়তা করছে। রিয়েল-টাইম এপোস্টিল প্রসেস নিশ্চিত করার মাধ্যমে আমরা অপ্রয়োজনীয় হয়রানি থেকে মুক্ত থাকতে পারবো এবং সকল কার্যক্রম সিস্টেম-নির্ভর হবে। ১৫টি সংস্কার কর্মসূচির মধ্যে এটুআই অন্যতম। এ লক্ষ্যে সকল স্তরের সহযোগিতা অপরিহার্য। একার্যক্রমে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ সবসময় এটুআই-এর পাশে থাকবে পাশাপাশি ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও বিশ্বব্যাক এর সহযোগিতাও থাকবে।”
মো. মামুনুর রশীদ ভূঁইয়া বলেন, “এটুআই’র মূল শক্তি হলো নাগরিক ক্ষমতায়ন ও দক্ষ সরকার পরিচালনায় সহায়তা প্রদান। ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনের ধারাবাহিকতায় বিনিয়োগ বাড়ানোর পাশাপাশি ইন্টারঅপারেবিলিটি চ্যালেঞ্জ সমাধান করাই হবে পরবর্তী ধাপ।”