হার্ডওয়্যার খাতকে আইসিটি নির্ভর সেবায় অন্তর্ভূক্ত করার দাবি বিসিএস’র
ক.বি.ডেস্ক: ২০২৪-২৫ সালের প্রস্তাবিত বাজেটে ল্যাপটপের ওপর ১৫ শতাংশ মূসক প্রত্যাহার করায় সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতি (বিসিএস)। পাশাপাশি অতিরিক্ত ৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপের প্রস্তাব প্রত্যাহারের জন্যও দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে হার্ডওয়্যার সার্ভিস খাতকে আইসিটি নির্ভর সেবাতে অন্তর্ভূক্তকরণ, প্রিন্টার ও টোনার কার্টিজ আমদানীর ওপর মূসক প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন বিষয়ে দাবি জানিয়েছে দেশের আইসিটি শিল্পের জাতীয় বাণিজ্য সংগঠন বিসিএস। অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাই-টেক পার্কে বিনিয়োগকারীদেরকে মূলধনী যন্ত্রপাতির ওপর ১% আমদানি শুল্ক আরোপের প্রস্তাব প্রত্যাহার করারও দাবি জানায় বিসিএস।
আজ শনিবার (৮ জুন) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বিসিএস আয়োজিত ‘২০২৪-২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলন’ শীর্ষক বাজেট প্রতিক্রিয়ায় এসব দাবি উপস্থাপন করেন বিসিএস সভাপতি ইঞ্জি. সুব্রত সরকার। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিসিএস সহ-সভাপতি মো. রাশেদ আলী ভূইয়া, মহাসচিব কামরুজ্জামান ভূইয়া, কোষাধ্যক্ষ আনিসুর রহমান এবং পরিচালক মঞ্জুরুল হাসান।
ল্যাপটপের ওপর অতিরিক্ত ৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক বৃদ্ধিকে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অন্তরায় বলে আমরা মনে করি
ইঞ্জি. সুব্রত সরকার, সভাপতি- বিসিএস
বিসিএস সভাপতি ইঞ্জি. সুব্রত সরকার বলেন, “ল্যাপটপ আমদানি পর্যায়ে ১৫% (শতাংশ) মূসক প্রত্যাহার করা হয়ছে। পাশাপাশি অতিরিক্ত ৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই প্রস্তাবনার ফলে পূর্বের তুলনায় প্রায় ১০ শতাংশ হ্রাসকৃত মূল্যে ল্যাপটপ কেনার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ এর পথে ল্যাপটপের এই মূল্য হ্রাসের সুযোগ সৃষ্টি করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। পাশাপাশি আইসিটি খাতে ১ হাজার ১৪৬ কোটি টাকা বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। হার্ডওয়্যার ছাড়া আইসিটির কোন কার্যক্রম ও প্রবাহ কোনভাবেই সম্ভব নয়। সম্প্রতি রোবটিকস এবং এআই তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর সেবার অন্তর্ভূক্ত হলেও হার্ডওয়্যার সার্ভিস উপেক্ষিত রয়েছে। আইসিটি খাতের উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে আইসিটি নির্ভর সেবার সংজ্ঞায় হার্ডওয়্যার সার্ভিসকেও অন্তর্ভুক্তিকরণ অত্যন্ত জরুরী।”
ল্যাপটপের ওপর অতিরিক্ত ৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি
ল্যাপটপ এখন বিলাসী কোন পণ্য নয়। সরকারের ৫ বিলিয়ন ডলার উপার্জনের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে ফ্রিল্যান্সার থেকে শুরু করে আউসোর্সিং যারা করছেন তাদের প্রধান হাতিয়ার ল্যাপটপ। এ ছাড়াও শিক্ষা উপকরণ হিসেবেও ল্যাপটপ স্বীকৃত। প্রস্তাবিত বাজেটে ল্যাপটপের ওপর মূসক প্রত্যাহার করা হলেও আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে।
এতে ল্যাপটপের মূল্য আংশিক কমলেও ভোক্তা পর্যায়ে তা ক্রয়সীমাকে ছাড়িয়ে যাবে। ল্যাপটপের ওপর এই অতিরিক্ত ৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক বৃদ্ধিকে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অন্তরায় বলে আমরা মনে করি। তাই ল্যাপটপ কমপিউটারের ওপর অতিরিক্ত আমদানি শুল্ক স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করবে বিবেচনায় নিয়ে এর আমদানি শুল্ক পূর্বের ন্যায় ৫ শতাংশ বহাল রাখা হোক।
প্রিন্টার ও টোনার কার্টিজ আমদানীর ওপর মূসক প্রত্যাহার
এমএফসি প্রিন্টার ও টোনার কার্টিজ আমদানীর ওপর ১৫% (শতাংশ) মূসক আরোপ করার ফলে বর্তমানে মোট ডিউটি হার (টিটিআই) ২৬%। এমএফসি প্রিন্টার ও টোনার কার্টিজ আমদানীর ক্ষেত্রে মূসক প্রত্যাহার করে ডিউটির হার (টিটিআই) ১০.২৫% নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছিলো।
স্বাভাবিক নিয়মেই মনিটরের আকার ২২ ইঞ্চিতে সীমাবদ্ধ করা সমিচীন হবে না এবং এই আকার ২২ ইঞ্চি থেকে বৃদ্ধি করে ২৪ ইঞ্চি নির্ধারণ করা এখন সময়ের দাবী
ইঞ্জি. সুব্রত সরকার, সভাপতি- বিসিএস
এমএফসি প্রিন্টার দিয়ে মূলত প্রিন্টিং এবং স্কানিংয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। ফটোকপিয়ারের অপসন থাকায় প্রিন্টারের ডিউটি আরোপ করা হয়। মূলত: তিনটি ভিন্ন ভিন্ন মেশিন স্থাপন, সংরক্ষণ ও ব্যবহার ব্যয়বহুল হওয়ায় ব্যবহারকারী এমএফসি প্রিন্টার ব্যবহার করে থাকে। সূতরাং কমপিউটার প্রিন্টার, এমএফসি প্রিন্টার ও টোনার কার্টিজের ক্ষেত্রে মূসক প্রত্যাহার হওয়া প্রয়োজন।
২৪ ইঞ্চি পর্যন্ত মনিটরের ওপর থেকে মূসক প্রত্যাহার
ব্যবসায়ী পর্যায়ে ২২ ইঞ্চি পর্যন্ত কমপিউটার মনিটরের মূসক অব্যহতি প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমান বিশ্বে ২২ ইঞ্চি বা তার নিচের আকারের মনিটর কোন খ্যাতিমান প্রস্তুতকারক উৎপাদন করে না এবং উৎপাদিত পণ্য মজুদ শেষে আগামীতে ২২ ইঞ্চির নিচে কোন মনিটর উৎপাদন করা হবে না। অতএব স্বাভাবিক নিয়মেই মনিটরের আকার ২২ ইঞ্চিতে সীমাবদ্ধ করা সমিচীন হবে না এবং এই আকার ২২ ইঞ্চি থেকে বৃদ্ধি করে ২৪ ইঞ্চি নির্ধারণ করা এখন সময়ের দাবী।
