সাম্প্রতিক সংবাদ

নগদ ডিজিটাল ব্যাংক’র লাইসেন্স হস্তান্তর করল বাংলাদেশ ব্যাংক

ক.বি.ডেস্ক: নগদ ডিজিটাল ব্যাংক’র লাইসেন্স হস্তান্তর করল বাংলাদেশ ব্যাংক। দেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল ব্যাংক হিসেবে কাজ শুরু করতে নগদ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি’কে চূড়ান্ত লাইসেন্স হস্তান্তর করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এর মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের অবারিত দুনিয়ায় প্রবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

গতকাল সোমবার (৩ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদারের কার্যালয়ে নগদ লিমিটেড-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর এ মিশুকের হাতে ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স হস্তান্তর করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক (বিআরপিডি) মোহাম্মদ শাহরিয়ার সিদ্দিকী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার।

লাইসেন্স হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার, নির্বাহী পরিচালক (বিআরপিডি) সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পরিচালক (বিআরপিডি) মনিরুল ইসলাম এবং নগদ লিমিটেডের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. আমিনুল হক, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন ও চিফ এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্স অফিসার শেখ শাবাব আহমেদ।

তানভীর এ মিশুক বলেন, “গত কয়েক বছর ধরেই আমরা বলছি, ক্যাশলেস লেনদেন নিশ্চিত করার মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি স্মার্ট অর্থনীতির দেশে পরিণত করতে ডিজিটাল ব্যাংকের বিকল্প নেই। দেশের সিংহভাগ মানুষ এখনও আর্থিক অন্তর্ভুক্তির বাইরে রয়েছে। তাদের নিয়ে কাজ করবে নগদ ডিজিটাল ব্যাংক। দেশের প্রথম ডিজিটাল ব্যাংক হিসেবে লাইসেন্স পাওয়াটা একটা ঐতিহাসিক ব্যাপার।”

নগদ লিমিটেড-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর এ মিশুক

তিনি আরও বলেন, “গ্রাহকদের আর ব্যাংকে আসতে হবে না, বরং ব্যাংকই মানুষের হাতে হাতে ঘুরবে। কোনো রকম জামানত ছাড়াই আমরা সিঙ্গেল ডিজিট সুদে ঋণ প্রদান করব। পাশাপাশি ক্ষুদ্র সঞ্চয় স্কিম চালুসহ সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন লেনদেন সংক্রান্ত সকল সমস্যার সমাধান দেবে ডিজিটাল ব্যাংক। এই সব কাজের জন্য আমরা সকল প্রস্তুতি শেষ করেছি। খুব দ্রুত আমরা দেশকে অভিনব এই ব্যাংকিং সেবা দিতে শুরু করব বলে আশা করি।”

গতবছর ২৪ অক্টোবর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার নগদসহ অন্য একটি প্রতিষ্ঠানকে ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স দেয়ার আগ্রহপত্র হস্তান্তর করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তখন চূড়ান্ত লাইসেন্স প্রাপ্তির ক্ষেত্রে যেসব শর্ত দেয়া হয়েছিল, নির্ধারিত সেই সময়ের মধ্যে একমাত্র নগদই সেগুলো পূরণ করে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক নগদকে প্রথম ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স হস্তান্তর করে।

এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংক ডিজিটাল ব্যাংকের নীতিমালা প্রকাশ করলে পাঁচশতাধিক প্রতিষ্ঠান দেশে অত্যাধুনিক এই ব্যাংকিং সেবা চালু করতে ৫২টি আবেদন করে। তবে প্রযুক্তিগত সক্ষমতা এবং অন্যান্য বিষয় পর্যালোচনা করে মাত্র দুটি প্রতিষ্ঠানকে আগ্রহপত্র দেওয়া হয়।

দেশের দ্রুততম ইউনিকর্ন হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে স্বীকৃতিও পেয়েছে নগদ

মোবাইল আর্থিক সেবায় উদ্ভাবন আর অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষতা দেখিয়ে মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যে নগদ সাড়ে নয় কোটি মানুষকে আর্থিকভাবে অন্তর্ভুক্ত করে চমক দেখায়। কম খরচে গুণগত সেবা দেয়ার মাধ্যমে বাজারে প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করে প্রতিষ্ঠানটি। দ্রুত এগিয়ে চলার এই পরিক্রমায় দেশের দ্রুততম ইউনিকর্ন হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে স্বীকৃতিও পেয়েছে নগদ।

ডিজিটাল ব্যাংকের প্রস্তুতি হিসেবে নগদ ইতিমধ্যে বেশ প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ অর্জন করেছে। এ জন্য বিশ্বের অন্যতম সেরা একটি ব্যাংকিং সলিউশন প্রতিষ্ঠান সিলভারলেক গ্রুপের সঙ্গে পার্টনারশিপ করেছে নগদ। আর্টিফিশিলিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে ক্রেডিট রেটিংয়ের সুবিধা তৈরি ও এ সংক্রান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ চলছে। এখন কেবল ডিজিটাল ব্যাংকের কাজ শুরু করার অপেক্ষা।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *