সাম্প্রতিক সংবাদ

শুরু হলো স্মার্ট বাংলাদেশ টেক এক্সপো ২০২৩ চট্টগ্রাম

ক.বি.ডেস্ক: চট্টগ্রাম জিইসি কনভেনশন সেন্টারে প্রথমবারের মতো শুরু হলো ‘প্রযুক্তিতে হবো সমৃদ্ধ বেশ, গড়ে তুলবো স্মার্ট বাংলাদেশ’ শ্লোগানে তিন দিনব্যাপী (১৪-১৬ জুন) ‘‘স্মার্ট বাংলাদেশ টেক এক্সপো ২০২৩ চট্টগ্রাম’’। সকাল ১০ টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রদর্শনী দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকছে। প্রদর্শনী চলবে ১৬ জুন পর্যন্ত। বিসিএস চট্রগ্রাম শাখার উদ্যোগে এবং আইসিটি বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল (আইবিপিসি) এর সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই প্রদর্শনী।

আজ বুধবার (১৪ জুন) ‘স্মার্ট বাংলাদেশ টেক এক্সপো ২০২৩ চট্টগ্রাম’ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী (নওফেল)। এ সময় বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিসিএস সভাপতি ইঞ্জি. সুব্রত সরকার। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বিসিএস সহ-সভাপতি এবং প্রদর্শনীর কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী মো. রাশেদ আলী ভূইয়া। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিসিএস চট্টগ্রাম শাখার চেয়ারম্যান এবং প্রদর্শনীর আহ্বায়ক মো. দিদারুল ইসলাম চৌধুরী

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন স্পন্সর প্রতিষ্ঠান স্মার্ট টেকনোলজিস বিডি লিমিটেডের পরিচালক মো. মুজাহিদ আল বেরুনী সুজন, বিসিএস চট্টগ্রাম শাখার সেক্রেটারি সুমন চৌধুরী, প্রাক্তন চেয়ারম্যান মো. সুফিয়ান আলী, স্পন্সর প্রতিষ্ঠান সিডনিসান ইন্টারন্যাশনালের সিইও সাগর টিটো, আইসিটি বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিলের নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফয়সাল খান।

মহিবুল হাসান চৌধুরী (নওফেল) বলেন, প্রযুক্তি মানুষকে স্মার্ট করে তবে স্মার্ট হওয়ার জন্য প্রযুক্তি একমাত্র মাধ্যম নয়। প্রযুক্তিতে দক্ষ হওয়ার পাশাপাশি নৈতিক গুণাবলী অর্জন করতে হবে। মানুষ মানবিক, দক্ষ এবং প্রযুক্তি বান্ধব হলেই স্মার্ট সিটিজেন হিসেবে নিজেকে দাবি করতে পারবে। ডিভাইসের সঙ্গে মানুষের সখ্যতা গড়ে তুলতে হবে। যে কাজ ১০ জন মানুষকে দিয়ে হতো ভবিষ্যতে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা এবং রোবোটিক্সকে কাজে লাগিয়ে সে কাজ করার জন্য একজন মানুষ যথেষ্ট হবে। তাই বলে দক্ষ মানুষের কর্মক্ষেত্র সংকীর্ণ হবে না। যোগ্য মানুষদের জন্যই পৃথিবী। মানুষের প্রয়োজনেই প্রযুক্তি ব্যবহৃত হবে। আমাদের যুব সমাজরা প্রযুক্তির সাথে নিজেদের সম্পৃক্ত করে পৃথিবীকে নেতৃত্ব দেয়ার গুণাবলীতে নিজেদের গুণান্বিত করতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, ২০২৬ সালের মধ্যে দেশের অর্থনীতিতে আমূল পরিবর্তন আসবে। চাকরী করার চেয়ে উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য নিজেদের জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে। আর এই দক্ষতা আসবে তখন যখন শিক্ষার্থী এবং যুব সমাজ প্রযুক্তি বান্ধব হবে। আমাদের শিক্ষা নীতিতে প্রযুক্তির প্রতি গুরুত্ব বাড়ানো হয়েছে। আইসিটি খাতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনও প্রতিনিয়ত বাড়ছে। ফ্রিল্যান্সাররা বাসায় বসে আউটসোর্সিং করতে পারছেন। ডিজিটাল বাংলাদেশের পর স্মার্ট বাংলাদেশের সুফলও আমরা নিঃসন্দেহে উপভোগ করতে পারবো।

ইঞ্জি. সুব্রত সরকার বলেন, ফোরআইআরকে গুরুত্ব দিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের পিলারগুলোকে নির্মাণ করা গেলে ভবিষ্যত সমস্যাগুলোর সমাধান সহজ হবে। বিসিএস নিত্যনতুন প্রযুক্তির সঙ্গে দেশের মানুষকে পরিচয় করিয়ে দিতে অঙ্গীকারবদ্ধ। সে লক্ষে ১০টি শাখা এবং সাড়ে তিন হাজারের বেশি সদস্য নিয়ে আমরা আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি। আমরা বিশ্বাস করি বাংলাদেশ হবে সারা পৃথিবীর কাছে স্মার্ট দেশের অন্যতম রোল মডেল।

মো. রাশেদ আলী ভূইয়া বলেন, দেশের তথ্যপ্রযুক্তির উৎকর্ষ সাধনে যে সংগঠনটির নাম সবার শীর্ষে সেই সংগঠনটি হলো বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি বা বিসিএস। কম্পিউটারের ক্রয়মূল্যকে হাতের নাগালে এনে প্রযুক্তি খাতকে অগ্রগতির মহাসড়কে পৌঁছে দিতে যে আন্দোলন বিসিএস শুরু করেছিল সে আন্দোলনের সফল গন্তব্য আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশ। বিসিএস এর উচ্চারণ করা ডিজিটাল বাংলাদেশ শব্দটি এখন আমাদের ট্রেডমার্ক। প্রধানমন্ত্রী প্রযুক্তিখাতকে এগিয়ে নিতে বরাবর আন্তরিক। এরই ধারাবাহিকতায় ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের স্বপ্ন দেখে। ‘রুপকল্প ২০৪১’ বাস্তবায়নের আগেই আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ এ রুপান্তর হবো।

মো. দিদারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, স্মার্ট সোসাইটি তৈরি করতে স্মার্ট পিপল বা সিটিজেনের বিকল্প নেই। বাংলাদেশের মানুষকে স্মার্ট করতে মূলত সব আয়োজন। আজ থেকে ২০ বছর আগেও আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রোগ্রাম লাইভ দেখার কথা চিন্তা করতে পারতাম না। আজ আমাদের প্রত্যেকের হাতে হাতে স্মার্টফোন আর স্মার্ট ডিভাইস। এই ডিভাইসগুলোর মাধ্যমে আমরা সারা পৃথিবীর সাথে সংযুক্ত। পৃথিবী আজ বিশ্বায়নের গ্রামে পরিণত হয়েছে। আর এই সফলতার একক কৃতিত্ব ডিজিটাল ডিভাইস তথ্য প্রযুক্তিপণ্যের।

স্মার্ট বাংলাদেশ টেক এক্সপো ২০২৩ চট্টগ্রাম
প্রদর্শনীতে তথ্যপ্রযুক্তির নিত্যনতুন ও জীবনধারাভিত্তিক আবিষ্কারের খোঁজ মিলবে যার মাধ্যমে সাধারণ জীবনে পাওয়া যাবে স্মার্ট সলিউশন। প্রদর্শনীতে হালনাগাদ প্রযুক্তির সম্ভার নিয়ে ৮১টি স্টল এবং ১৬টি প্যাভেলিয়ন থাকছে। প্রযুক্তিপণ্য ক্রয়ে মিলবে আকর্ষণীয় উপহার এবং মূল্যছাড়। মেলায় প্রবেশের টিকেটের ওপর লটারি অনুষ্ঠিত হবে। ড্র’তে মিলবে আকর্ষণীয় উপহার। দর্শনার্থীদের জন্য মেলায় ফ্রি ইন্টারনেট ও ওয়াই-ফাই জোনের সুবিধা থাকছে। থাকছে ইনোভেশন জোন, বঙ্গবন্ধু কর্ণার, ৩৬০ ডিগ্রি ফটো বুথ এবং গেমিং জোন। এই জোনগুলোতে নিত্যনতুন আবিষ্কারের দেখা মিলবে। গেমিং জোনে গেম খেলার সুযোগ মিলবে। থাকছে ফুড কোর্ট।

পাশাপাশি থাকছে সচেতনতা, বিনোদন ও শিক্ষামূলক বৈচিত্র্যময় নানা আয়োজন, ৫টি সেমিনার ও বিটুবি সেশন। প্রবেশমূল্য ১০ টাকা। স্কুল শিক্ষার্থী এবং সংবাদকর্মীদের জন্য বিনা মূল্যে প্রবেশের ব্যবস্থা থাকছে। এ ছাড়াও রোটারেক্ট, রোটারি, লিও এবং লায়ন্স ক্লাবের সদস্যদের পাশাপাশি সোশ্যাল ইনফ্লুয়েন্সারদের জন্যও প্রদর্শনীতে বিনা মূল্যে প্রবেশের সুযোগ থাকছে।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *