উদ্যোগ

ক্লাউড ফার্স্ট নীতির ওপর গুরুত্বারোপ

ক.বি.ডেস্ক: সম্প্রতি ঢাকায় ‘লীপ ইনটু ইন্টেলিজেন্স উইডথ বেটার ক্লাউড’ প্রতিপাদ্যে ‘‘হুয়াওয়ে ক্লাউড সামিট সাউথ এশিয়া ২০২৪’’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবারের সম্মেলনটিতে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ায় ক্লাউড, এআই ও বিগ ডেটার মতো আধুনিক প্রযুক্তির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা হয়। সম্মেলনে দেশের আইসিটি খাতের বিশেষজ্ঞ, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দ, উদ্ভাবক, ক্লাউড সেবার গ্রাহক ও অন্যান্য সহযোগিরা অংশগ্রহণ করেন।

সম্মেলনে বক্তাগণ বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক পর্যায়ে ক্লাউড প্রযুক্তির বিভিন্ন প্রয়োগ ও সফলতার চিত্র তুলে ধরেন। ক্লাউড সিস্টেম ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য নতুন-নতুন কৌশল ও পরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা হয়। এক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা এবং এর ফলে ডিজিটালাইজেশনের সুযোগ প্রসারের কথাও তুলে ধরা হয়। এ ছাড়াও তাঁরা ‘ক্লাউড ফার্স্ট’ কৌশল প্রয়োগের ওপর গুরুত্ব দেন যাতে করে নতুন ও সংশোধিত নীতিমালার মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদী সুবিধা পাওয়া যায়।

সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন হুয়াওয়ে বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্যান জুনফেং, হুয়াওয়ের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ক্লাউড বিভাগের প্রেসিডেন্ট জেন শিনজায়ান, ফ্রস্ট অ্যান্ড সালিভানের কনসাল্টিং অ্যানালিস্ট ইউহাং ওয়াং, হুয়াওয়ে ক্লাউডের ইন্টারন্যাশনাল কনসাল্টিং ডিরেক্টর জেমস চু, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের ন্যাশনাল ডাটা সেন্টার সার্ভার ও ক্লাউড সিকিউরিটি বিশ্লেষক ইঞ্জি. রিংকো কবিরাজ, নিউক্সনেটের সিটিও এরিক ইয়াং, অরেল আইটির সিইও ডা. উপেন্দ্র পিয়েরিস ও ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস অব হুয়াওয়ে হাইব্রিড ক্লাউডের সিটিও জন লিও। এ ছাড়া বাংলাদেশে অবস্থিত চীনা দূতাবাসের কাউন্সিলর সং ইয়াং অনুষ্ঠানে একটি ভিডিও বার্তা প্রদান করেন।

প্যান জুনফেং বলেন, “এই সম্মেলনের মাধ্যমে এই অঞ্চলে ক্লাউড প্রযুক্তির অসীম সম্ভাবনা ও সুযোগের ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। আমরা এমন একটি শক্তিশালী ক্লাউড ইকোসিস্টেম তৈরি করতে চাই যা ব্যবসায় সহযোগিতা করবে, প্রতিষ্ঠানগুলোর দক্ষতা বৃদ্ধি করবে ও উদ্ভাবনকে ত্বরান্বিত করবে। বাংলাদেশে প্রবৃদ্ধি ও উদ্ভাবনকে এগিয়ে নিতে সরকারের নীতিগত সাহায্যের মাধ্যমে ‘ক্লাউড ফার্স্ট’ কৌশল গ্রহণ করা প্রয়োজন। বৃহৎ পরিসরে পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে মেগাট্রেন্ডগুলোকে ব্যবহার করে বাংলাদেশকে নতুন সম্ভাবনা গ্রহণে সহযোগিতা করতে চায় হুয়াওয়ে। সব সহযোগীদের ক্লাউড ব্যবহারের মাধ্যমে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করতে ও ডিজিটাল ভবিষ্যতের দিকে এই অঞ্চলের যাত্রাকে ত্বরান্বিত করতে আহ্বান জানান তিনি।”

জেন শিনজায়ান বলেন, “হুয়াওয়ে ক্লাউড গ্রাহকদেরকে ২৪০টির বেশি ক্লাউড সেবা, ২১০টি সলিউশন ও ১২,০০০টি পার্টনার অ্যাপ্লিকেশন দিচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটি প্রতিনিয়ত জনপ্রিয় সব ক্লাউড সেবা নিয়ে আসছে। ২০২৩ সালে এশিয়া-প্যাসিফিক মার্কেটে আমাদের আয় ৭৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের গ্রাহক ও সহযোগীদের বিশ্বাস ও সহযোগিতার কারণে এই অর্জন সম্ভব হয়েছে। এক্ষেত্রে আমাদের প্রযুক্তি ব্যবহারের কৌশল, অবকাঠামো ও ইকোসিস্টেমেরও অবদান রয়েছে। প্রযুক্তি, অবকাঠামো ও দক্ষতাকে পরিষেবা হিসেবে প্রদান করার জন্য হুয়াওয়ের যে লক্ষ্য, সেটিও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এ ছাড়া স্থানীয় সহযোগিতাও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।”

সং ইয়াং ভিডিও বার্তায় বলেন, “স্মার্ট বাংলাদেশ শুধু বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতিকে এগিয়ে নেয়ার একটি লক্ষ্য নয়, এটি দেশের আধুনিকায়নেরও চালিকাশক্তি। ডিজিটাল অর্থনীতি বিনির্মাণে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে চীন অভিজ্ঞতা বিনিময়ে আগ্রহী। এই সম্মেলনে বিভিন্ন শিল্পখাতের নেতৃবৃন্দের আলোচনায় ওঠে এসেছে কীভাবে ক্লাউড, বিগ ডাটা ও এআই প্রযুক্তি ডিজিটাল রূপান্তরকে সহায়তা করতে পারে। হুয়াওয়ে ও শিল্পখাতের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির বিকাশে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।”

হুয়াওয়ে ক্লাউড এশিয়া প্যাসিফিক পাবলিক ক্লাউড মার্কেটে এটি গত চার বছরে ২০ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, যার ফলে হাইব্রিড ক্লাউড সেগমেন্টে এটি শীর্ষ পাঁচ সেবাদাতার মধ্যে দ্রুতবর্ধনশীল সেবাদাতার স্থান অর্জন করেছে। হাইব্রিড ক্লাউড সেগমেন্টে শীর্ষস্থান ধরে রাখার সঙ্গে সঙ্গে হুয়াওয়ে ক্লাউড স্ট্যাক থাইল্যান্ড, বাংলাদেশ ও হংকংয়ে প্রথম অবস্থানে রয়েছে। বাংলাদেশে প্রথম ই-গভর্নমেন্ট ক্লাউড ‘বিসিসি’ এবং ‘রবি’র জন্য প্রথম হাইব্রিড ক্লাউড চালু করার মাধ্যমে হুয়াওয়ে ক্লাউড সফল যাত্রা অব্যাহত রেখেছে।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *