সাম্প্রতিক সংবাদ

গ্রাহক সুরক্ষায় সিএলটিপি, ডেলিভারি নিশ্চিত না হলে মার্চেন্টকে অর্থ নয়

ক.বি.ডেস্ক: বাংলাদেশের ই-কমার্স খাতে স্বচ্ছতা ও গ্রাহক আস্থা নিশ্চিত করতে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এখন থেকে দেশের সকল ধরনের ই-কমার্স সেবা প্রদানকারী এবং পেমেন্ট গেটওয়েসমূহকে সেন্ট্রাল লজিস্টিকস ট্র্যাকিং প্ল্যাটফর্ম (সিএলটিপি)-এর মাধ্যমে সমন্বিত হতে হবে। এই প্ল্যাটফর্ম থেকে ডেলিভারি নিশ্চিতকরণের নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত কোনও পণ্যের বিলির বিপরীতে মার্চেন্টের অনুকূলে অর্থ ছাড় করা যাবে না, যা গ্রাহক সুরক্ষার ক্ষেত্রে এক বিশাল মাইলফলক।

আজ মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) ঢাকার আগাঁরগাওয়ে ডাক ভবনে বাংলাদেশের দ্রুত বিকাশমান ই-কমার্স এবং ডিজিটাল পেমেন্ট ইকোসিস্টেমে গ্রাহক আস্থা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ‘সেন্ট্রাল লজিস্টিকস ট্র্যাকিং প্ল্যাটফর্ম (সিএলটিপি)’ এর বাস্তবায়ন ও কার্যকারিতা নিয়ে এক নীতিনির্ধারণী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। সভাপতিত্ব করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব আব্দুন নাসের খান।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, “সিএলটিপি প্ল্যাটফর্মটি আইসিটি বিভাগের এটুআই-এর তত্ত্বাবধানে প্রস্তুত করা হয়েছে। এর প্রাথমিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে ডাক অধিদপ্তরের ওপর। এই প্ল্যাটফর্মের মূল লক্ষ্য হলো প্রযুক্তিনির্ভর, স্বয়ংক্রিয় এবং নির্ভরযোগ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা। আগে পেমেন্ট গেটওয়েগুলোকে দুর্বল প্রযুক্তির কারণে দৈবচয়ন ভিত্তিতে গ্রাহকদের ফোন করে ডেলিভারির তথ্য যাচাই করতে হতো। সিএলটিপি এই ম্যানুয়াল প্রক্রিয়ার অবসান ঘটিয়ে দেবে।”

তিনি আরও বলেন, “প্ল্যাটফর্মটি এমনভাবে ডিজাইন করা হচ্ছে যাতে এসক্রো বাবদ আটকে থাকা অর্থ কোনোভাবেই সমষ্টিগতভাবে উত্তোলন করা না যায়। প্রতিটি গ্রাহকের ঠিকানায় বিলি নিশ্চিতকরণের পরেই অর্থছাড় হবে। কেবল ফিজিক্যাল পণ্য নয়, বিমান টিকিটের মতো ভার্চুয়াল পণ্য বিলির ক্ষেত্রেও গ্রাহকের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সিএলটিপি একটি সুনির্দিষ্ট প্রসেস ফ্লো ডিজাইন করছে।”

সভায় জানানো হয়, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় কর্তৃক জারিকৃত “জাতীয় লজিস্টিক্স নীতি ২০২৫” এবং বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক জারিকৃত “মার্চেন্ট অ্যাকোয়ারিং ও এসক্রো নীতিমালা ২০২৩” এর সুস্পষ্ট ধারার ভিত্তিতে সকল ই-কমার্স, কুরিয়ার, পেমেন্ট গেটওয়ে এবং ভার্চুয়াল সেবা বিক্রয়কারীদের জন্য সিএলটিপি -তে অন্তর্ভুক্ত হওয়া বাধ্যতামূলক।

এই প্ল্যাটফর্মটি যে বিজনেস প্রসেস অনুসরণ করে, তার প্রতিটি ধাপ ডাক অধিদপ্তরের কাজের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত হওয়ায় এর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব ডাক অধিদপ্তরের ওপর ন্যস্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সফল বাস্তবায়নের জন্য ডাক অধিদপ্তর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআর এবং আইসিটি বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সকল সরকারি-বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে নিয়মিত সমন্বয় সাধন করবে। এই উদ্যোগটি বাংলাদেশের ডিজিটাল কমার্স খাতে স্বচ্ছতা, নিরাপত্তা এবং গ্রাহক আস্থার এক নতুন অধ্যায় সূচনা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সভায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, এনবিআর, আইসিটি বিভাগ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক সহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, কুরিয়ার সার্ভিস, ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন ও প্রতিষ্ঠানসমূহ, ব্যাংক ও পেমেন্ট গেটওয়ে প্রতিনিধিসমূহ এবং মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস সমূহের শীর্ষস্থানীয় প্রতিনিধিসহ ডাক অধিদপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *