সাম্প্রতিক সংবাদ

বাংলাদেশে পালিত হলো ‘বৈশ্বিক অভিগম্যতা সচেতনতা দিবস’

ক.বি.ডেস্ক: প্রতি বছরের মতো এবছরও বাংলাদেশে পালন করা হলো ‘বৈশ্বিক অভিগম্যতা সচেতনতা দিবস-২০২৫’। ২০১২ সাল থেকে প্রতি বছর মে মাসের তৃতীয় বৃহস্পতিবার বিশ্বজুড়ে পালন করা হয় এই দিবস। এই দিবসের মূল লক্ষ্য হলো বিশ্বের এক বিলিয়নেরও বেশি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য ডিজিটাল সেবা নিশ্চিত করার ব্যাপারে সচেতনতা তৈরি করা। দৈনন্দিন জীবনে আমাদের ব্যবহৃত ডিজিটাল সেবাসমূহ, শিক্ষা উপকরণ, ওয়েবসাইট, মোবাইল অ্যাপ, ডিজিটাল কনটেন্ট প্রভৃতি যেন প্রতিবন্ধীবান্ধব বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন হয়, সে বিষয়ে সবার মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করা।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৫ মে) ‘বৈশ্বিক অভিগম্যতা সচেতনতা দিবস-২০২৫’ উপলক্ষে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভার আয়োজন করে এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) এবং ফ্রেন্ডশিপ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। বিশেষ অতিথি ছিলেন আইসিটি সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোস্তফা কামাল এবং ফ্রেন্ডশিপের ইনক্লুসিভ সিটিজেনশিপ সেক্টরের ঊর্ধ্বতন পরিচালক আয়েশা তাসিন খান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারপার্সন মনসুর আহমেদ চৌধুরী। সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব এবং এটুআই প্রোগ্রামের যুগ্ম প্রকল্প পরিচালক মুহাম্মদ মনিরুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন এটুআই’র হেড অব প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট আবদুল্লাহ আল ফাহিম। এটুআই’র সেন্টার অব ইনোভেশন ক্লাস্টারের প্রধান নাহিদ আলম এটুআই’র ডিজিটাল অ্যাক্সেসিবিলিটি কার্যক্রম এবং প্রতিবন্ধীবান্ধব উদ্ভাবনগুলো নিয়ে সংক্ষিপ্ত উপস্থাপনা তুলে ধরেন।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, “আমরা ন্যাশনাল ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন স্ট্র্যাটেজি এবং আইসিটি রিফর্ম রোডম্যাপ-এ ডিজিটাল অভিগম্যতাকে সুস্পষ্টভাবে স্থান দিয়েছি, যা সরকারি নীতির সঙ্গে প্রযুক্তির সমন্বয়ের একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ। পাশাপাশি আমরা ইতোমধ্যে প্রযুক্তিগত মানদণ্ড, সিকিউরিটি এবং ইনক্লুসিভ ডিজাইন-এই তিনটি স্তরে ডিজিটাল অ্যাক্সেসিবিলিটির সংস্থান নিশ্চিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। গণমাধ্যমের উচিত তাদের অনলাইন পোর্টালগুলোতে ডিজিটাল এক্সেসিবিলিটি ফিচার সংযুক্ত করা। এর জন্য নতুন সিস্টেম না তৈরী করেই খুবই সহজেই এই সেবাটি সংযোজন করা যায়।”

শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে এমন একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ, যেখানে সকল নাগরিক, বিশেষত প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা, সমানভাবে সকল ডিজিটাল সেবা ব্যবহার করতে পারেন। আর সেই লক্ষ্যেই আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।”

এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে গুরুতর আহত খোকন চন্দ্র বর্মণ। তিনি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের একজন সহযোদ্ধা। তিনি সরকারি ও বেসরকারি সকল ডিজিটাল সেবা প্রতিবন্ধী-ব্যক্তিবান্ধব করার বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সকলকে অনুরোধ জানান।

এটুআই বাংলাদেশের একমাত্র সরকারি উদ্যোগ, যারা বিশেষভাবে প্রতিবন্ধীদের ডিজিটাল অ্যাক্সেসিবিলিটি নিশ্চিত করতে কাজ করছে। দিবসটি উপলক্ষে অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজিটাল সেবা প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য সম্মাননা প্রদান করা হয়। এ বছর সম্মাননা পেয়েছে গ্রামীণফোনের সাইনলাইন (বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী ব্যাক্তিদের জন্য ইশারা ভাষা অনলাইন কাস্টমার সার্ভিস), জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড- এনসিটিবি (প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য মাল্টিমিডিয়া টকিং বই) এবং ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ (প্রতিবন্ধীবান্ধব ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা চালু করার জন্য সেলফিন অ্যাপ)।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *