প্রতিবেদন

ইন্টারনেট কি এবং কেন সাবমেরিন ক্যাবল গুরুত্বপূর্ণ?

মো. আরিফুল হক: ইন্টারনেট হলো আন্ত:সংযুক্ত কমপিউটার ও ডিভাইসের একটি বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক, যা স্ট্যান্ডার্ডাইজড যোগাযোগ প্রোটোকল ব্যবহার করে একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এটি ব্যবহারকারীদের তথ্য শেয়ার করতে, তথ্য সমৃদ্ধ সার্ভারে প্রবেশ করতে এবং সারা বিশ্বের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে সক্ষম করে।

ইন্টারনেটকে প্রায়ই ‘নেটওয়ার্কের নেটওয়ার্ক’ বলা হয়, কারণ এটি লক্ষ লক্ষ ব্যক্তিগত, পাবলিক, একাডেমিক, ব্যবসায়িক এবং সরকারি নেটওয়ার্ককে সংযুক্ত করে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে মানুষ ওয়েবসাইট ব্রাউজ করতে, ইমেইল পাঠাতে, ভিডিও স্ট্রিম করতে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করতে এবং অন্যান্য কার্যকলাপে অংশগ্রহণ করতে পারে।

ইন্টারনেটের মূল উপাদানসমূহ
সার্ভার: ওয়েবসাইট, তথ্য এবং অ্যাপ্লিকেশন সংরক্ষণকারী কমপিউটার; ক্লায়েন্ট: ইন্টারনেটে প্রবেশ করতে সক্ষম ডিভাইস যেমন কমপিউটার, স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেট; প্রোটোকল: ডাটা ট্রান্সমিশন পরিচালনাকারী নিয়মাবলী, যেমন- ট্রান্সমিশন কন্ট্রোল প্রোটোকল (টিসিপি)/ইন্টারনেট প্রোটোকল (আইপি); অবকাঠামো: ডাটা প্রেরণকারী মাধ্যম যেমন ক্যাবল, স্যাটেলাইট এবং ওয়্যারলেস সংযোগ।

মো. আরিফুল হক
টেলিযোগাযোগ প্রকৌশলী

সাবমেরিন ক্যাবল
সাবমেরিন ক্যাবল হলো সমুদ্রের তলদেশে স্থাপিত অপটিক্যাল ক্যাবল, যা মহাসাগর ও সমুদ্রের ওপর দিয়ে স্থলভিত্তিক স্টেশনগুলোর মধ্যে টেলিকমিউনিকেশন সংকেত প্রেরণ করে। এই ক্যাবলগুলো বৈশ্বিক ইন্টারনেট সংযোগ এবং যোগাযোগের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলো আন্তর্জাতিক ডাটা ট্রাফিকের বেশিরভাগই পরিচালনা করে।

সাবমেরিন ক্যাবলের গুরুত্ব
উচ্চ ক্ষমতা: সাবমেরিন ক্যাবলগুলো বিপুল পরিমাণ ডাটা (১৫ টিবিপিএস/ফাইবার পেয়ার) বহন করতে পারে, যা ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক ইন্টারনেট ট্রাফিক পরিচালনার জন্য অপরিহার্য; নির্ভরযোগ্যতা: এগুলো দীর্ঘ দূরত্বে ডাটা প্রেরণের জন্য একটি স্থিতিশীল এবং নির্ভরযোগ্য সংযোগ প্রদান করে, যা মহাদেশগুলোর মধ্যে ধারাবাহিক যোগাযোগ নিশ্চিত করে; গতি: সাবমেরিন ক্যাবলগুলো স্যাটেলাইট যোগাযোগের তুলনায় কম লেটেন্সি (বিলম্ব) প্রদান করে, ফলে ডাটা দ্রুত প্রেরণ হয় এবং ভিডিও কল, অনলাইন গেমিং এবং ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের জন্য উন্নত ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা তৈরি হয়;

ভারত থেকে ব্যান্ডউইডথ আমদানি সীমিত করা হলে, এই কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে ডাটা সেন্টার স্থাপনে উৎসাহিত হবে। এর ফলে প্রতি বছর প্রায় ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সাশ্রয় হবে

মো. আরিফুল হক

বিশ্বব্যাপী সংযোগ: এগুলো বৈশ্বিক ইন্টারনেটের মেরুদণ্ড, যা বিশ্বের বিভিন্ন অংশকে সংযুক্ত করে এবং আন্তর্জাতিক যোগাযোগ, বাণিজ্য এবং সহযোগিতা সম্ভব করে তোলে।; অর্থনৈতিক প্রভাব: সাবমেরিন ক্যাবলগুলো বৈশ্বিক অর্থনীতিকে সমর্থন করে আন্তর্জাতিক ব্যবসা, আর্থিক লেনদেন এবং ই-কমার্স সক্ষম করে। অনেক শিল্প এই উচ্চ-গতির এবং নির্ভরযোগ্য সংযোগগুলোর উপর নির্ভর করে।

সাবমেরিন ক্যাবল ছাড়া, আমরা যেমন ইন্টারনেটের সঙ্গে পরিচিত, তা কার্যকরভাবে কাজ করতে পারত না, এবং বৈশ্বিক যোগাযোগ উল্লেখযোগ্যভাবে ধীর এবং কম নির্ভরযোগ্য হয়ে উঠত।

অপটিক্যাল ক্যাবল বলতে এমন একটি ক্যাবলকে বোঝায়, যা তথ্য প্রেরণের জন্য আলোর সংকেত ব্যবহার করে। এটি সাধারণত খুব পাতলা কাচ বা প্লাস্টিকের তন্তুর (ফাইবার) সমন্বয়ে গঠিত, যার মাধ্যমে আলোর সংকেত অত্যন্ত দ্রুতগতিতে প্রেরণ করা যায়। অপটিক্যাল ক্যাবল উচ্চ-গতির ডাটা ট্রান্সমিশন, ইন্টারনেট সংযোগ এবং টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যবহৃত হয়।

বাংলাদেশ কি সাবমেরিন ক্যাবলে সংযুক্ত?
হ্যাঁ, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলে সংযুক্ত। বাংলাদেশ বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে সংযুক্ত:
১. SEA-ME-WE 4 (South-East Asia–Middle East–Western Europe 4): ২০০৬ সালে চালু হওয়া এই সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে সংযুক্ত হয়। এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এবং পশ্চিম ইউরোপের বিভিন্ন দেশকে সংযুক্ত করে।
২. SEA-ME-WE 5 (South-East Asia–Middle East–Western Europe 5): ২০১৭ সালে চালু হওয়া এই সাবমেরিন ক্যাবলটি SEA-ME-WE 4 এর পরিপূরক হিসেবে কাজ করে এবং উচ্চ গতির ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান করে।

বিএসসিপিএলসি নিজেই পুরো চাহিদা পূরণের সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও, প্রতি বছর ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করে আইটিসি ক্যাবলের মাধ্যমে ভারত থেকে ব্যান্ডউইডথ আমদানি করছে

মো. আরিফুল হক

এই সাবমেরিন ক্যাবলগুলো বাংলাদেশের ইন্টারনেট সংযোগের মেরুদণ্ড হিসেবে কাজ করে, যা আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট ট্রাফিকের বড় একটি অংশ বহন করে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে উচ্চ-গতির ইন্টারনেট সংযোগ এবং তথ্য আদান-প্রদানে সক্ষম হয়েছে। smh.com.au/…/bangladesh-launches-first…

বাংলাদেশ যে সাবমেরিন ক্যাবলে সংযুক্ত তার মালিক কে? সাবমেরিন ক্যাবল দিয়ে কি দেশের বর্তমান ও ভবিষ্যতের ব্যান্ডউইডথের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব?
বাংলাদেশ সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অধীনস্থ বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস পিএলসি (বিএসসিপিএলসি) বর্তমানে SMW4 এবং SMW5 নামের দুটি সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে দেশে প্রায় ২,৯০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইডথ সরবরাহ করছে, যার মোট সক্ষমতা প্রায় ৭,২০০ জিবিপিএস। এ ছাড়া তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল SMW6 প্রকল্প চলমান রয়েছে, যা ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ সম্পন্ন হলে বিএসসিপিএলসি প্রায় ১৩,২০০ জিবিপিএস অতিরিক্ত ব্যান্ডউইডথ সক্ষমতা অর্জন করবে। এতে করে বিএসসিপিএলসি’র মোট ব্যান্ডউইডথ ক্ষমতা ২০,৪২০ জিবিপিএস-এর বেশি হবে।

বর্তমানে দেশের ব্যান্ডউইডথের প্রয়োজন প্রায় ৬,৬০০ জিবিপিএস, যার প্রায় ৪৫ শতাংশ বিএসসিপিএলসি সরবরাহ করছে। অথচ, বিএসসিপিএলসি নিজেই পুরো চাহিদা পূরণের সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও, প্রতি বছর ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করে আইটিসি ক্যাবলের মাধ্যমে ভারত থেকে ব্যান্ডউইডথ আমদানি করছে।

বাংলাদেশে বর্তমানে ব্যবহৃত ব্যান্ডউইডথ প্রধানত দুই প্রকার:
১. পিওর ইন্টারনেট: যা বেশিরভাগই সিঙ্গাপুর থেকে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে আমদানি করা হয়। এটি বৈদেশিক যোগাযোগ, টেলিমেডিসিন, ভিডিও কনফারেন্সিং, লোকাল ক্যাশ ফিল ইত্যাদি কাজে ব্যবহৃত হয়।
২. ক্যাশ ব্যান্ডউইডথ: যা মূলত গুগল, ফেসবুক, অ্যাকামাই ইত্যাদি কোম্পানির ব্যান্ডউইডথ, যা তাদের ভারতের কলকাতা এবং চেন্নাই ডাটা সেন্টার থেকে আইটিসির মাধ্যমে আমদানি করা হয়।

দেশের স্বার্থে গুগল, ফেসবুক, অ্যাকামাই যাতে দ্রুত বাংলাদেশে এজ ডেটা সেন্টার স্থাপন করতে পারে তার জন্য ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে

মো. আরিফুল হক

বাংলাদেশে গুগল, ফেসবুক, অ্যাকামাই ইত্যাদি কোম্পানির নিজস্ব ডাটা সেন্টার না থাকায়, তাদের ক্যাশ ব্যান্ডউইডথ ভারত থেকে আমদানি করতে হচ্ছে। বর্তমানে প্রায় ৩,৭০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইডথ আইটিসির মাধ্যমে আমদানি করা হয়। তবে, যদি এই কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে ডাটা সেন্টার স্থাপন করে, তাহলে মাত্র ৩৭০ জিবিপিএস সাবমেরিন ব্যান্ডউইডথ ব্যবহার করেই আইটিসির তুলনায় ভালো গ্রাহক সেবা প্রদান করা সম্ভব হবে। এতে বিএসসিপিএলসি’র ব্যান্ডউইডথ বিক্রির পরিমাণ বাড়বে এবং এর মার্কেট শেয়ারও বৃদ্ধি পাবে।

ভারত থেকে ব্যান্ডউইডথ আমদানি সীমিত করা হলে, এই কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে ডাটা সেন্টার স্থাপনে উৎসাহিত হবে। এর ফলে প্রতি বছর প্রায় ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সাশ্রয় হবে। এ ছাড়া, দেশে বিদেশি বিনিয়োগ আসবে এবং নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে, যা দেশের বেকারত্ব সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। বিএসসিপিএলসি যেহেতু দেশের চাহিদার ১০০% ব্যান্ডউইডথ সরবরাহ করতে সক্ষম, তাই দেশের স্বার্থে পর্যায়ক্রমে আইটিসির ব্যান্ডউইডথ ব্যবহারের পরিমাণ শূন্যে নামিয়ে আনা যেতে পারে।

গুগল, ফেসবুক, অ্যাকামাই- এর এজ ডেটা সেন্টার কী এবং কেন এটি প্রয়োজন?
বাংলাদেশে গুগল, ফেসবুক, অ্যাকামাই ইত্যাদি কোম্পানির নিজস্ব ডাটা সেন্টার না থাকায়, তাদের ক্যাশ ব্যান্ডউইডথ ভারত থেকে আমদানি করতে হচ্ছে। এই ডাটা সেন্টারগুলো কি এবং কি কাজে লাগে……

একটি এজ ডেটা সেন্টার হলো প্রচলিত ডেটা সেন্টারের একটি ছোট, স্থানীয় সংস্করণ, যা কৌশলগতভাবে ব্যবহারকারীদের কাছাকাছি স্থাপন করা হয়। এর মূল উদ্দেশ্য হলো ল্যাটেন্সি কমানো এবং ডেটা সরবরাহের গতি বৃদ্ধি করা। গুগল, ফেসবুক, অ্যাকামাই এর মতো কোম্পানিগুলো তাদের কনটেন্ট ডেলিভারি নেটওয়ার্ক অবকাঠামোর অংশ হিসেবে এজ ডেটা সেন্টার ব্যবহার করে, যা ব্যবহারকারীদের ভিডিও, ছবি এবং অন্যান্য ওয়েব রিসোর্স দ্রুত এবং দক্ষতার সাথে সরবরাহ নিশ্চিত করে। কেন এজ ডেটা সেন্টার প্রয়োজন……
ল্যাটেন্সি কমানো:
প্রচলিত ডেটা সেন্টারগুলো সাধারণত ব্যবহারকারীদের থেকে দূরে থাকে, যার ফলে ডেটা সরবরাহে দেরি হয়। এজ ডেটা সেন্টারগুলো এই দূরত্ব কমিয়ে আনে, ল্যাটেন্সি কমায় এবং ভিডিও স্ট্রিমিং, রিয়েল-টাইম গেমিং, ওয়েব ব্রাউজিং-এর মতো সেবাগুলোর গতি বাড়ায়। গুগল, ফেসবুক, অ্যাকামাই ইত্যাদি কোম্পানি দেশে তাদের ডাটা সেন্টার স্থাপন করলে মাত্র ৩৭০ জিবিপিএস সাবমেরিন ব্যান্ডউইডথ দিয়ে আইটিসির তুলনায় ভাল গ্রাহক সেবা প্রদান করা সম্ভব হবে (আইটিসি ব্যান্ডউইডথ latency >10ms, লোকাল ব্যান্ডউইডথ latency< 2ms)।

ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা উন্নতি:
দ্রুত কনটেন্ট সরবরাহের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা কম বাফারিং, দ্রুত পেজ লোডিং এবং আরও মসৃণ পারফরম্যান্স পায়, যা গুগল, ফেসবুক এর সেবা যেমন: ইউটিউব, গুগল সার্চ এবং অ্যাকামাই এর বিতরণ করা কনটেন্টের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।

গুগল, ফেসবুক, অ্যাকামাই এই কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে ডাটা সেন্টার স্থাপন করে, তাহলে মাত্র ৩৭০ জিবিপিএস সাবমেরিন ব্যান্ডউইডথ ব্যবহার করেই আইটিসির তুলনায় ভালো গ্রাহক সেবা প্রদান করা সম্ভব হবে

মো. আরিফুল হক

ব্যান্ডউইডথ অপ্টিমাইজেশন:
এজ ডেটা সেন্টারগুলো কেন্দ্রীয় সার্ভার থেকে ট্র্যাফিক কমাতে সাহায্য করে, যা সঞ্চালন নেটওয়ার্কে বোঝা কমায়। ব্যবহারকারীদের কাছাকাছি প্রতিনিয়ত ব্যবহৃত কনটেন্ট সংরক্ষণ বা ক্যাশিং করার মাধ্যমে, ডেটা দীর্ঘ দূরত্ব অতিক্রম করার প্রয়োজন কমে যায়।
লোকাল কনটেন্ট ক্যাশিং:
গুগল, ফেসবুক, অ্যাকামাই তাদের এজ ডেটা সেন্টারে কনটেন্ট লোকালি ক্যাশ করে। এর মানে হলো, প্রতিনিয়ত ব্যবহৃত ডেটা ব্যবহারকারীদের কাছে সংরক্ষণ করা হয়, যা ডেটা পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুত এবং কার্যকর করে তোলে।

খরচ সাশ্রয়:
মূল ডাটা সেন্টারের ওপর বোঝা কমিয়ে এবং ব্যান্ডউইডথ অপ্টিমাইজ করার মাধ্যমে, কোম্পানিগুলো ডেটা ট্রানজিট, ব্যান্ডউইডথ এবং অবকাঠামো ব্যবস্থাপনার খরচ কমাতে পারে। গুগল, ফেসবুক, অ্যাকামাই ইত্যাদি কোম্পানি দেশে তাদের ডাটা সেন্টার স্থাপন করলে ভারতের ডাটা সেন্টার হতে আইটিসির মাধ্যমে ব্যান্ডউইডথ আমদানি করার প্রয়োজন হবে না। এতে দেশের অতি মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে।

স্কেলেবিলিটি এবং নির্ভরযোগ্যতা:
এজ ডেটা সেন্টারগুলো স্থানীয়ভাবে ট্র্যাফিক বৃদ্ধির চাপ সামাল দিতে সক্ষম, যার ফলে কেন্দ্রীয় সেন্টারগুলোর ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে না। এতে উচ্চ চাহিদার সময়ে সিস্টেমের নির্ভরযোগ্যতা এবং আপটাইম নিশ্চিত করা যায়।

সংক্ষেপে, গুগল, ফেসবুক, অ্যাকামাই এর এজ ডেটা সেন্টারগুলো ল্যাটেন্সি কমাতে, পারফরম্যান্স উন্নত করতে এবং ব্যান্ডউইডথ ব্যবহারের অপ্টিমাইজেশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা উন্নত ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা এবং আরও কার্যকর ডেটা সরবরাহ নিশ্চিত করে। তাই দেশের স্বার্থে গুগল, ফেসবুক, অ্যাকামাই যাতে দ্রুত বাংলাদেশে এজ ডেটা সেন্টার স্থাপন করতে পারে তার জন্য ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। এখানে উল্লেখ্য দেশে যে সর্বমোট ব্যান্ডউইডথ ব্যবহার হয় তার প্রায় ৭০ শতাংশই গুগল, ফেসবুক, অ্যাকামাই এর ক্যাশ ব্যান্ডউইডথ।

লেখক: মো. আরিফুল হক, টেলিযোগাযোগ প্রকৌশলী

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *