৮-১০ নভেম্বর ‘আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনালস ঢাকা’
ক.বি.ডেস্ক: বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য কমপিউটার প্রোগ্রামিং সমস্যা সমাধানের সবচেয়ে সম্মানজনক এবং মর্যাদাপূর্ণ আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা ইন্টারন্যাশনাল কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং কনটেস্ট (আইসিপিসি) এর এবারের হোস্ট কান্ট্রি হচ্ছে বাংলাদেশ। প্রায় প্রতি বছরই তরুণ প্রজন্মের জন্য বিশেষভাবে আয়োজিত হয় এই প্রতিযোগিতা, যার যাত্রা হয় ১৯৭০ সাল থেকে। আইসিপিসি ফাউন্ডেশন, বিসিসি এবং হোস্ট ইউনিভার্সিটি হিসেবে ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক (ইউএপি) ‘‘৪৫তম আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনালস্ ঢাকা’’ এর মূল আয়োজক।
‘৪৫তম আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনালস্ ঢাকা’ আগামী ৮ নভেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে উদ্বোধন করা হবে। এ বছর ৭০টি দেশ থেকে প্রায় ১৩৭টি দল থেকে মেধাবী প্রতিযোগীরা এই প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত রাউন্ডে অংশ নিচ্ছে। আয়োজনকে ঘিরে ইতোমধ্যে ২০০ জন আইসিপিসি রিজিওনাল কনটেস্ট ডিরেক্টর ছাড়াও কর্মকর্তাসহ অন্তত এক হাজারেরও বেশি বিদেশি অতিথির আগমন হচ্ছে বাংলাদেশে। আইসিপিসি রিজিওনাল ডিরেক্টরবৃন্দ বিভিন্ন সিম্পোজিয়ামসহ সেমিনারে অংশ নিবেন।
বাংলাদেশ থেকে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক থেকে মোট ৮টি মেধাবী দল অংশ নিচ্ছে। চূড়ান্ত পর্বকে লক্ষ্য করে আইসিটি বিভাগ এবছরের অক্টোবর মাসে আয়োজন করা হয় একটি বিশেষ প্রশিক্ষণ। এবারের আয়োজনেও বাংলাদেশ থেকে ভালো অর্জন আশা করছে আইসিটি বিভাগ।
ঢাকার বসুন্ধরায় অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরা (আইসিসিবি) তে আগামী ৮ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে এবারের আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনালস্ ঢাকা ২০২২। প্রতিযোগিতার মূল প্রবলেম সলভিং অংশটি অনুষ্ঠিত হবে ১০ নভেম্বর যেখানে ৬ ঘন্টা সময়ের মধ্যে অংশগ্রহণকারীগণ সমস্যা সমাধান করবেন তাদের দক্ষতা ও মেধার মাধ্যমে। আয়োজনটির চ্যাম্পিয়নের নাম ঘোষনা করা হবে ১০ নভেম্বর অনুষ্ঠিত সমাপনী অনুষ্ঠান।
আজ রবিবার (৬ নভেম্বর) রাজধানী ঢাকার আগারগাঁওয়ের আইসিটি টাওয়ার-এর বিসিসি অডিটরিয়ামে ‘আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনালস্ ঢাকা’ আয়োজনকে ঘিরে ‘‘প্রেস ব্রিফিং’’ আয়োজন করে আইসিটি বিভাগ। প্রথমবারের মত বাংলাদেশে আইসিপিসি আয়োজনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোসহ কি কি আয়োজন থাকছে তার বিস্তারিত তুলে ধরা হয় প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠানে।
অনুষ্ঠানে প্রেস ব্রিফ করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক। এসময় উপস্থিত ছিলেন আইসিপিসি ফাউন্ডেশনের সভাপতি ড. উইলিয়াম বি. পাউচার, আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনালস্ কনটেস্ট এর পরিচালক ড. মাইকেল জে. ডোনাহু, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান,হুয়াওয়ের কর্পোরেট কমিউনিকেশনস্ বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ড ভিকি ঝ্যাং, জেট ব্রেইন এর বিনিয়োগ বিভাগের এসভিপি অন্ড্রে ইভ্যানভ এবং বিসিসির নির্বাহী পরিচালক রণজিৎ কুমার।
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক বলেন, এ আয়োজনটি আইসিটিতে আমাদের সক্ষমতা প্রদর্শনের দারুণ একটি সুযোগ। একই সঙ্গে আমাদের দেশের ভবিষ্যত আইসিটি নেতৃত্বদের বর্তমান নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে দেওয়ারও একটি সুযোগ। ১৩ বছরে আইসিটি খাতে আমাদের অনেক উন্নতি হয়েছে। ১৩ বছর আগে আমাদের মাত্র ৫ মিলিয়ন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিল যা এখন ১৩০ মিলিয়ন। ১৩ বছর আগে কোন আইসিটি ইন্ডাস্ট্রি ছিল না, প্রযুক্তি খাতে রপ্তানি ছিল মাত্র ২৬ মিলিয়ন ডলার। এখন সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার এবং সার্ভিস সেক্টর থেকে সব মিলিয়ে প্রতি বছরে সেটি ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারে এসে দাড়িয়েছে। একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশ হল অনলাইন সোর্স অব ওয়ার্কার এর তালিকায় দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। সবশেষে তিনি বলেন আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত হওয়ার সফলতা অর্জন করেছি এবং সেই সফলতার ভিত্তিতে ২০৪১ সালের মধ্যে এখন আমরা টেকসই, জ্ঞাননির্ভর ও সৃজনশীল ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তুলতে চাই।
ড. উইলিয়াম বি. পাউচার বলেন, আইসিপিসি বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য একটি অন্যতম বিশেষ আয়োজন। আমাদের লক্ষ্য ভবিষত প্রজন্মের জন্য আমাদের শক্তির ওপর নির্ভর করে একটি উন্নত বিশ্ব গড়ে তোলা । আর এর জন্য শ্রেষ্ঠত্বের প্রতিশ্রুতি প্রয়োজন। চমতকার ব্যক্তিত্বের অধিকারী হওয়ার জন্য আমাদের শ্রেষ্ঠত্বের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে এবং শ্রেষ্ঠত্বের অভ্যাসটি সবচেয়ে তখনই ভালভাবে গড়ে উঠবে যখন মানুষ এক হবে। আমরা যা করেছি তা পরিমাপের পরিবর্তে আমরা কি করতে পারি তা খুজেঁ বের করতে হবে। আমরা সবার জন্য সুযোগ তৈরি করতে চাই। এ জন্য আইসিপিসির মতো অনুষ্ঠানগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে এই অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হওয়ায় আমি খুবই উচ্ছ্বসিত।