২০২০ সালে দেশের বাজারে স্যামসাংয়ের উদ্ভাবন
এ বছর প্রযুক্তির সঙ্গে আমাদের সর্ম্পক এতোটা নিবিড় হবে, এটা বোধহয় এর আগে কেউ ভাবতেও পারেনি। বছরজুড়ে আমাদের জীবনের নতুন পরিবর্তিত অবস্থার সঙ্গে মানিয়ে নিতে বিশ্বের অসংখ্য প্রতিষ্ঠান উদ্ভাবনী সব প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করেছে এবং তা গ্রাহকদের জন্য সহজলভ্য করেছে। বিশ্বজুড়ে গ্রাহকদের জীবনে আরও স্বাচ্ছন্দ্য নিয়ে আসতে এই প্রতিষ্ঠানগুলো টেকসই ও বৈপ্লবিক প্রযুক্তি আবিষ্কারের পেছনে ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দেখে নেয়া যাক প্রযুক্তিখাতে শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান স্যামসাং কনজ্যুমার ইলেক্ট্রনিক্স চলতি বছরে কী কী উদ্ভাবন নিয়ে এসেছে এবং সেগুলো কীভাবে আমাদের জীবনকে আরও উন্নত করেছে।তাই নিয়ে প্রতিবেদনটি লিখেছেন নাজনীন লাকী
বিনোদন ও খবর দেখার জন্য পরিবারের সবাই একসঙ্গে টিভির সামনে জড়ো হচ্ছি। এক্ষেত্রে, টিভি দেখায় সেরা বিনোদন অভিজ্ঞতাদানে স্যামসাং বাংলাদেশ নিয়ে এসেছে কিউএলইডি ৮কে টিভি ২০২০ মডেল। ৮কে রেজ্যুলেশন লিভিং রুমে এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) আপস্কেলিংয়ের মাধ্যমে বাস্তবতার একটি নতুন মাত্রা যোগ করে। এর নিখুঁত গঠন, রিয়েলিস্টিক এজ ও পিক্সেলের সঙ্গে ক্রমান্বয়ে নয়েজ হ্রাস এবং ওটিএস (অবজেক্ট ট্র্যাকিং সাউন্ড) চমতকার ভিইউং অভিজ্ঞতা প্রদান করে।
টেলিভিশনে বিনোদন লাভের পাশাপাশি মানুষ অবসরে এখন গেমিংয়ের দিকে ঝুঁকেছে। স্যামসাং গ্রাহকদের সবসময় সেরা গেমিং অভিজ্ঞতা প্রদান করে আসছে, তা হোক গ্যালাক্সি পোর্টফলিওর মাধ্যমে কিংবা বাসার মনিটরে। ব্র্যান্ডটির নতুন ফ্ল্যাগশিপ ওডিসি মনিটর-জি৯-এ আছে বিশ্বের প্রথম ৪৯ ইঞ্চি ১০০০আর কার্ভড স্ক্রিন, ১ মিলিসেকেন্ড রেসপন্স টাইম, ২৪০ হার্টজ রিফ্রেশ রেট, যা ব্যবহারকারীদের গেমে পুরোপুরি নিমগ্ন হতে সাহায্য করবে। বর্ডারলেস ডিজাইনের সঙ্গে স্যামসাং এলইডি মনিটর- টি৩৫০ মডেলটি (২২ ইঞ্চি, ২৪ ইঞ্চি এবং ২৭ ইঞ্চি) একটি আইপিএস ডিসপ্লে প্যানেল, ৫ মিলিসেকেন্ড জিটিজি রেসপন্স টাইম, ৭৫ হার্টজ রিফ্রেশ রেট এবং ফ্রিসিংক প্রযুক্তির সমন্বয়ে আদর্শ এক গেম সেটিং তৈরি করে।
বিনোদনের অভিজ্ঞতাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে স্যামসাং এনেছে শক্তিশালী ১৫০০ ওয়াট ২.০ সিএইচ সাউন্ড টাওয়ার টি৭০ স্পিকার। এর বাই-ডিরেকশনাল সাউন্ড এবং পাঞ্চিং ব্যাস বুস্টার টিভি দারুণ গেমিং অভিজ্ঞতার সঙ্গে আপনার পার্টিতে এনে দিবে নতুন প্রাণ।
এ বছর করোনার বৈশ্বিক মহামারি আর বিশাল সময়জুড়ে লকডাউন আমাদের লাইফস্টাইলে এনেছে ব্যাপক পরিবর্তন। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কেনাকাটা থেকে শুরু করে ঘর পরিষ্কার পর্যন্ত দৈনন্দিন সকল কাজে স্বাস্থ্য সুরক্ষা এখন প্রথম ভাবনা। লাইফস্টাইলের এই পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে স্যামসাং বাজারে নিয়ে এসেছে বিভিন্ন ধরনের হোম অ্যাপ্লায়েন্স। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল স্যামসাংয়ের স্পেসম্যাক্স প্রযুক্তিযুক্ত সাইড বাই সাইড রেফ্রিজারেটর। স্পেসম্যাক্স প্রযুক্তির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল, এতে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন নিরোধক একদম স্বল্প পরিমাণে ব্যবহার করা হয়। এজন্য রেফ্রিজারেটরের দেয়াল পুরু হয় না এবং অধিক খাবার এতে খুব সহজে সংরক্ষণ করা যায়।
স্যামসাং চলতি বছরে স্মার্ট এবং বিদ্যুত সাশ্রয় ক্ষমতাযুক্ত নতুন রেসিডেনসিয়াল এসি এনেছে, যা ৭৩ শতাংশ পর্যন্ত বিদ্যুত সাশ্রয় করে। এতে রয়েছে একটি সহজ ফিল্টার প্লাস, যা ৯৯ শতাংশ পর্যন্ত ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে এবং উচ্চ ঘনত্বসম্পন্ন ফিল্টারটি হিট এক্সচেঞ্জ ক্লিনিং -এর সময় ধুলাবালি, পশুর পশম ও ফাইবার রুখে দেয়।
মানুষ যাতে নিজের বাড়িতে বিশুদ্ধ বাতাসে শ্বাস নিতে পারে, সে কথা ভেবে স্যামসাং এনেছে এয়ার পিউরিফায়ার (এএক্স৯০আর৭০৮০ডব্লিউডি/ইইউ)। এতে রয়েছে থ্রি-ওয়ে বায়ু প্রবাহ এবং বহু স্তরযুক্ত বায়ু বিশোধন প্রক্রিয়া, যা ৯৯.৯ শতাংশ পর্যন্ত সূক্ষ্ম ধূলিকণা দূর করে এবং ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে।
বাড়ি পরিষ্কার করার সুবিধার্থে স্যামসাং নিয়ে আসে পাওয়ারস্টিক ভিএস৬০০০ ভ্যাকুয়াম ক্লিনার। ভ্যাকুয়াম ক্লিনারের অভিনব ডিজাইন স্বাস্থ্যকর উপায়ে ধুলা বা বর্জ্য পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। যেমন- লম্বা চুল অনেক সময় পরিষ্কার করা বেশ দুস্কর হয়ে পড়ে। এগুলো সহজে ডাস্টবিনে বা রোটেটিং ব্রাশে আটকা পড়ে। এক্ষেত্রে, এ ভ্যাকুয়াম ক্লিনারের ১৮০ ডিগ্রি সুইভেল ব্রাশ দ্রুতগতিতে ঘুরে এবং ঘরের প্রতিটি কোণে পৌঁছে ময়লা পরিষ্কার করে।
বাংলাদেশে স্যামসাং এনেছে কিউ-ড্রাইভ ওয়াশিং মেশিন, যা পরিচ্ছন্নতায় কোন ছাড় না দিয়ে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত সময় সাশ্রয় করে এবং প্রায় ২০ শতাংশ বিদ্যুত খরচ কমায়। পোশাকে নতুনত্ব আনার সঙ্গে সঙ্গে পোশাকে আটকে থাকা ধূলিকণা, ৯৯ শতাংশ পর্যন্ত দুর্গন্ধ ও কাপড়ের ভাঁজ দূর করতে, স্যামসাং এনেছে এয়ার ড্রেসার। এই এয়ার ড্রেসার কাপড় পরিস্কার আরও সহজ ও ঝামেলাহীন করে তুলেছে। স্যামসাংয়ের বেশিরভাগ পণ্যই স্মার্টথিংসের আওতাভুক্ত এবং দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ উপযোগী।
স্যামসাং সব সময় বিশ্বকে অনুপ্রাণিত করতে এবং উন্নত ভবিষ্যত নির্মাণে সচেষ্ট। অভিনব প্রযুক্তি, উদ্ভাবনী পণ্য ও বিভিন্ন প্রযুক্তিগত কৌশল আবিষ্কারে নেতৃত্ব প্রদানে স্যামসাং তার প্রতিশ্রুতিতে অঙ্গীকারবদ্ধ। তাদের এই প্রতিশ্রুতি প্রযুক্তিগত উতকর্ষতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের জীবনকে সহজ করে তুলবে। স্যামসাং ভবিষ্যতে তার এই উদ্ভাবনী পণ্য তৈরির প্রয়াস অব্যাহত রাখবে এবং বাংলাদেশের মানুষকে প্রদান করবে আরও সমৃদ্ধ ডিজিটাল অভিজ্ঞতা।