স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য ব্লেন্ডেড শিক্ষা
ক.বি.ডেস্ক: ‘স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্প’ অর্জনে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্লেন্ডেড শিক্ষা পদ্ধতি বাস্তবায়নে সরকারি, বেসরকারি, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাসহ সকলকে একযোগে কাজ করার বিকল্প নেই। এলক্ষ্যে ‘এক্সেলারেটিং ব্লেন্ডেড এডুকেশন ফর স্মার্ট বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক আন্তর্জাতিক কনসালটেশন এর আয়োজন করা হয়। এসময় দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ব্লেন্ডেড শিক্ষা উপযোগী করে তুলতে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সম্পৃক্ততা ও প্রয়োজনীয়তার ওপরে একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চাহিদা মোকাবেলায় দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে সরকার-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে ব্লেন্ডেড শিক্ষা পদ্ধতি পূর্ণাঙ্গভাবে কার্যকরের উপযোগী করে তোলার জন্য সচেতনতা তৈরি করা এই কন্সালটেশনের অন্যতম লক্ষ্য। ব্লেন্ডেড শিক্ষা পদ্ধতিকে উন্নতকরণের মধ্য দিয়ে দেশে প্রযুক্তিনির্ভর, সমতাভিত্তিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক দক্ষ মানব সম্পদ তৈরি করে ভবিষ্যতের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করা সম্ভব।
গতকাল মঙ্গলবার (১৬ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম ও এটুআই’র সহযোগিতায় আয়োজিত ‘এক্সেলারেটিং ব্লেন্ডেড এডুকেশন ফর স্মার্ট বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই ইন্টারন্যাশনাল কনসালটেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। বিশেষ অতিথি আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা সচিব সোলেমান খান। মূল নিবন্ধ উপস্থাপন করেন ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম’র এডুকেশন, স্কিল অ্যান্ড লার্নিং বিভাগের লিড তানিয়া মিলবার্গ এবং এটুআই’র পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী। এ ছাড়াও এসময় ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ওস্তাপ লুতসিশিন এবং এটুআই’র প্রকল্প পরিচালক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীরসহ সরকারি-বেসরকারি খাতের সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। প্যানেলিস্ট ছিলেন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. কামাল হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান, আইসিটি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান নাসরীন আফরোজ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ এবং ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম’র এডুকেশন, স্কিল অ্যান্ড লার্নিং বিভাগের লিড তানিয়া মিলবার্গ। প্যানেল আলোচনার মডারেটর ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন উইংয়ের পরিচালক প্রফেসর ড. একিউ এম শফিউল আজম।
মন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, একবিংশ শতাব্দিতে শুধু গতানুগতিক পড়াশোনা দিয়ে শিক্ষার নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা সম্ভব নয়। নতুন সময়ে শিক্ষাব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। শিক্ষাব্যবস্থাকে ব্লেন্ডেড করা এই পরিবর্তনের একটি অংশ কিন্তু এই পরিবর্তনের যাত্রায় সবাইকে একত্রে কাজ করা। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে স্মার্ট শিক্ষাব্যবস্থা তৈরি করে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথ সুগম করা উদ্দেশ্য আমাদের। সেজন্য সবাইকে এই মিশন-ভিশনকে বিশ্বাস করে কাজ এগিয়ে নিতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের মিশন ও ভিশন নিয়ে কাজ করে যাওয়াই আমাদের উদ্দেশ্য। এলক্ষ্যে প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা আনয়ন শিক্ষাকে স্মার্ট করবে। ব্লেন্ডেড শিক্ষা ব্যবস্থা স্মার্ট শিক্ষা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সময়োপযোগী পন্থা হতে পারে। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের স্মার্ট হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইন্টারনেট সংযোগ নিরবিচ্ছিন্ন করতে হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে শতভাগ উচ্চ গতির ইন্টারনেট সরবরাহ, শতভাগ ফাইভজি স্মার্টফোন, শতভাগ অনর্ভুক্তিমূলক এবং ক্যাশলেস ইকোনমি এবং আইসিটিভিত্তিক শতভাগ গ্রিন ইন্ডাস্ট্রি নির্মাণ করার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি।’