সুস্বাস্থ্যের জন্য বিশুদ্ধ বায়ু
সকাল ৮টা, রাজধানীর একটি মেট্রো স্টেশনে। বাস, সিএনজি, গাড়ি আর বাইকের ইঞ্জিন বিকট শব্দ করে শহরের পথে চলছে; আর কালো ধোঁয়ার আস্তরণ যেন চারপাশ আচ্ছন্ন করে রেখেছে। বাসস্টপেজে গাড়ির জন্য অপেক্ষারত যাত্রীরা বিষাক্ত সেই ধোঁয়া নিঃশ্বাসের সঙ্গে টেনে নিচ্ছেন। ধোঁয়ার সঙ্গে বাতাসে ভেসে ভেসে মিশে যাচ্ছে পোড়া আবর্জনার দুর্গন্ধ, গাড়ির কালো ধোঁয়া আর নানান রকম নাম না জানা অতিক্ষুদ্র পদার্থ। এটাই আমাদের প্রতিদিনের স্বাভাবিক চিত্র।
অতিক্ষুদ্র কণা আর জলীয় বাষ্প, বাতাস দূষণকারী পদার্থের মধ্যে এই দু’টিই রয়েছে; সাধারণত এগুলো বস্তুকণা নামেও পরিচিত। এসবের মধ্যে তুলনামূলক বড় কণাগুলো নাক ও গলায় আটকে গিয়ে মানুষের শরীরকে প্রাকৃতিকভাবে রক্ষা করে। তবে সমস্যা হলো, এগুলোর মধ্যে অতিক্ষুদ্র কণাগুলো কোথাও না আটকে ফুসফুসের একদম গভীরে পৌঁছে যেতে পারে। ধুলোময়লা, বিভিন্ন রকম রেণু, যানবাহনের কালো ধোঁয়া, কলকারখানা বা পোড়া আবর্জনার ধোঁয়া – এর সবই আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। লক্ষ্যনীয় বিষয় হচ্ছে, অতি ক্ষতিকর এসব ক্ষুদ্রকণা আমরা খালি চোখে দেখতে পাই না, এসব কণা কেবলমাত্র মাইক্রোস্কোপের সাহায্যেই চিহ্নিত করা যায়।
তাই খুব সহজেই বলা যায়, আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য বায়ুদূষণ সবচেয়ে মারাত্মক পরিবেশগত ক্ষতির কারণ হয়ে উঠতে পারে। এই বায়ুদূষণকে আবার দুইটি প্রধান ভাগে ভাগ করা যায়; একটি বাইরের খোলা বাতাসের, আরেকটি ঘরের ভেতরের বায়ুদূষণ। খোলা বাতাস আর ঘরের ভেতরের এই দুই বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর ৬৭ লাখ মানুষের অকালমৃত্যু ঘটে। উচ্চ, মধ্য বা নিম্ন যেকোনো আয়ের দেশ নির্বিশেষে সকল মানুষের ক্ষেত্রেই এই বায়ুদূষণ ক্ষতিকর পরিবেশগত স্বাস্থ্যঝুঁকি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ঘরের বাইরের বায়ুদূষণ অনেকক্ষেত্রেই মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এই দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে হলে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের নীতিনির্ধারকদের পরিবহণ, জ্বালানি, কৃষি, নগর পরিকল্পনা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মতো বিষয়গুলোতে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। অন্যদিকে ঘরের ভেতরের বায়ুদূষণ নিয়ে খুব সহজেই কাজ করা যেতে পারে, সেক্ষেত্রে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা আর উদ্ভাবন-নির্ভর উদ্যোগ প্রয়োজন। ২০২০ সালে দেখা যায়, ঘরের ভেতরের বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর ৩২ লাখ মানুষ মারা যাচ্ছে, যার মধ্যে ৫ বছর বয়সের নিচে শিশুই রয়েছে ২ লাখ ৩৭ হাজার।
নানান ক্ষতিকর উপায়ে ঘরের ভেতর বায়ুদূষণ হতে পারে। রান্না যথার্থভাবে না করা, দূষণকারী জ্বালানি ব্যবহার করা ও ঘরে বা আশপাশে থাকা প্রযুক্তি থেকে সাধারণত ঘরের ভেতরের এই দূষণ হতে পারে। যেসব ঘরে পর্যাপ্ত পরিমাণ বাতাস চলাচল করতে পারে না সেখানকার বাতাসে সাধারণের চেয়ে ১০০ গুণ বেশি পর্যন্ত অতিক্ষুদ্র কণা থাকতে পারে। বিশেষ করে, নারী ও শিশুদের জন্য এ ধরণের কণার সংস্পর্শে আসা অত্যন্ত ক্ষতিকর হতে পারে। আর দিনদিন এ কারণেই কার্যকরভাবে বাতাস পরিশুদ্ধ করতে পারবে এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করা আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক্ষেত্রে, ফুসফুস ও রক্তসঞ্চালনকে ক্ষুদ্রকণার সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে এয়ার পিউরিফায়ার একটি অন্যতম কার্যকর ব্যবস্থা হতে পারে।
স্যামসাং এয়ার পিউরিফায়ারের মতো বাজারে চমৎকার সব ডিজাইনের এয়ার পিউরিফায়ার রয়েছে, যেগুলো ঘরের ভেতরের সকল দূষিত ক্ষুদ্রকণা ছেঁকে নিয়ে বাতাসকে পরিশুদ্ধ করে। আপনার ঘরে পোষাপ্রাণি থাকুক বা আপনি অ্যাজমার রোগী হোন, ঘরের ভেতরটা স্বাস্থ্যকর রাখতে চাইলে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করা আপনার জন্য সর্বোত্তম উপায় হতে পারে।
আপনার একান্ত জায়গা, যেখানে আপনি ঘুমান, খাওয়া দাওয়া করেন; আপনার বেশিরভাগ সময় যেখানে কাটাতে ভালোবাসেন, সেখানে পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যকরভাবে থাকাটা খুব জরুরি। বাসা হোক বা অফিস, ঘরের ভেতরটা দূষণমুক্ত রাখা আমাদের নিজেদের জন্যই প্রয়োজনীয়। তাই, ঘরের ভেতরের বাতাসকে বিশুদ্ধ রাখার উপায়গুলো নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করার এখনই যথার্থ সময়।