সাম্প্রতিক সংবাদ

সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের খসড়া প্রকাশ

ক.বি.ডেস্ক: বিতর্কিত সাতটি ধারা বাদ দিয়ে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের খসড়া প্রকাশ করেছে সরকার। এ ছাড়াও ক্ষমতা অপর্ণ, সাক্ষ্যগত মূল্য ও অসুবিধা দূরীকরণ ধারাগুলোও বাদ দেয়া হয়েছে খসড়ায়। একইভাবে অপরাধের আওতায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে ব্ল্যাকমেইলিং (প্রতারণা) বা অশ্লীল বিষয়বস্তু প্রকাশ–সংক্রান্ত অপরাধ ও দণ্ড। খসড়ায় যে কারও মামলা করার সুযোগ বন্ধ করা হয়েছে।

সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের খসড়াটি গত রবিবার (১ ডিসেম্বর) আইসিটি বিভাগ ও জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সির (এনএসএ) ওয়েবসাইটে সাধারণের মতামতের জন্য প্রকাশ করা হয়েছে। ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে মতামত চাওয়া হয়েছে।

খসড়ায় বলা হয়েছে, সরাসরি সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা তাঁর নিয়োগকৃত ব্যক্তি অথবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য বাদে অন্য কেউ এ আইনের অধীন মামলা করতে পারবেন না। আগের আইনে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা উৎসাহ নিয়ে মামলা করতেন, যা বেশির ভাগই ছিল প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী ও রাজনৈতিক নেতাদের অবমাননার জন্য।

এতে বিতর্কিত কয়েকটি ধারা বাদ দেওয়া হয়েছে। ধারাগুলো ছিল মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় সংগীত বা জাতীয় পতাকা সম্পর্কে বিদ্বেষ, বিভ্রান্তি ও কুৎসামূলক প্রচারণার দণ্ড; পরিচয় প্রতারণা বা ছদ্মবেশ ধারণ; আক্রমণাত্মক, মিথ্যা বা ভীতি প্রদর্শক, তথ্য-উপাত্ত প্রেরণ, প্রকাশ; অনুমতি ব্যতীত পরিচিতি তথ্য সংগ্রহ, ব্যবহার, ইত্যাদির দণ্ড; মানহানিকর তথ্য প্রকাশ, প্রচার ইত্যাদি। যুক্ত করা হয়েছে সাইবার নিরাপত্তা কাউন্সিলের বিধান।

এবারের খসড়ায় সাইবার স্পেসে জুয়া খেলার অপরাধ ও দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, জুয়া খেলার জন্য কোনো অ্যাপস, ডিভাইস তৈরি বা খেলায় অংশগ্রহণ বা সহায়তা করেন এবং উৎসাহ দিতে বিজ্ঞাপনে অংশ নেন, তাহলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।

অধ্যাদেশের খসড়ার ধারা ৮–এ বলা আছে, ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে প্রকাশিত বা প্রচারিত কোনো তথ্য-উপাত্ত সাইবার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে হুমকি সৃষ্টি করলে সাইবার সুরক্ষা এজেন্সির মহাপরিচালক সেসব অপসারণ বা ব্লক করার জন্য বিটিআরসিকে অনুরোধ করতে পারবেন।

এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ সাপেক্ষে, যদি বিশ্বাস করার কারণ থাকে যে ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে প্রকাশিত বা প্রচারিত কোনো তথ্য-উপাত্ত দেশের বা কোনো অংশের সংহতি, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, ধর্মীয় মূল্যবোধ বা জনশৃঙ্খলা ক্ষুণ্ন করে বা জাতিগত বিদ্বেষ ও ঘৃণার সঞ্চার করে, তাহলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তা অপসারণ বা ব্লক করার জন্য মহাপরিচালকের মাধ্যমে বিটিআরসিকে অনুরোধ করতে পারবে।

এ ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো, কমপিউটার, কমপিউটার সিস্টেম, ইত্যাদির ক্ষতিসাধন ও দণ্ড, সাইবার সন্ত্রাসী কার্য সংঘটনের অপরাধ ও দণ্ড ও হ্যাকিং–সংক্রান্ত অপরাধকে খসড়ায় আমলযোগ্য ও অজামিনযোগ্য হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। মিথ্যা মামলা বা অভিযোগ দায়ের করলে মূল অপরাধের জন্য থাকা দণ্ডের বিধান অনুযায়ী বাদীকে শাস্তি ভোগ করতে হবে।

অপরাধ তদন্তের দায়িত্ব প্রাপ্তির ৯০ দিনের মধ্যে তদন্ত কাজ শেষ করতে হবে তদন্তকারী অফিসারকে। তবে ঊধ্বতনের অনুমতিক্রমে আরও ১৫ দিন সময় প্রার্থনা করতে পারবেন তিনি। চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন সাপেক্ষে সংঘটিত অপরাধ সংক্রান্ত ডিভাইস নিজ হেফাজতে নিতে পারবেন। পরোয়ানা ছাড়াই তল্লাশী, জব্দ ও গ্রেফতার করতে পারবেন। তবে তদন্ত সংশ্লিষ্ট তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে। তদন্তের স্বার্থে কোনো ব্যক্তি, স্বত্তা বা সেবা প্রদানকারী কোনো তথ্য প্রকাশ করলে তাদের বিরুদ্ধে দেওয়ানি বা ফৌজদারি মামলা করা যাবে না।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *