সমাপ্ত হল আইসিটি বিভাগের ইনফো-সরকার ৩য় পর্যায় প্রকল্প
ক.বি.ডেস্ক: দেশের প্রান্তিক গ্রামীণ জনপদে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা সরবরাহের লক্ষ্য নিয়ে ২০১৭ সালে যাত্রা করে আইসিটি বিভাগের ইনফো-সরকার ৩য় পর্যায় প্রকল্প। দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়তা করার পাশাপাশি ইউনিয়ন পর্যায়ে বিভিন্ন দপ্তর, বিদ্যালয়, কলেজ, গ্রোথসেন্টার ও অন্যান্য সরকারি কার্যালয় সমূহে নেটওয়ার্ক সংযোগ স্থাপনের জন্য, ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের নেটওয়ার্কের ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা। গ্রামীন জনগোষ্ঠীর ই-সার্ভিসে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা এবং জাতীয় আইসিটি নেটওয়ার্কের সঙ্গে বাংলাদেশ পুলিশ নেটওয়ার্ককে সংযুক্ত করতে জিওবির আওতায় পুলিশ ইউনিটের সর্বস্তরে অবাধ আইসিটির ব্যবহার নিশ্চিত করা ছিল এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য।
সমাপ্ত হল আইসিটি বিভাগের বাস্তবায়নাধীন ইনফো-সরকার ৩য় পর্যায় প্রকল্প। আজ মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) ঢাকার একটি স্থানীয় হোটেলে এই প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং, আইসিটি বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এন এম জিয়াউল আলম এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মো. মুশফিকুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। বক্তব্য রাখেন ইনফো-সরকার প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক বিকর্ণ কুমার ঘোষ, বিসিসির নির্বাহী পরিচালক রণজিত কুমার, সিআরআইজির ব্যবস্থাপনা পরিচালক গুওয়া ওয়ে এবং হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের সিইও প্যান জুনফেং।
মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের চারটি স্তম্ভের মধ্যে কানেক্টিং সিটিজেন স্তম্ভটির উন্নয়নের ক্ষেত্রে ইনফো-সরকার ফেজ-৩ প্রকল্পটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এই প্রকল্প থেকে উদ্যোক্তাদের বিনা মূল্যে ৫ এমবিপিএস ব্যান্ডউইডথ পরিষেবা প্রদান করা হচ্ছে, যার ফলে গত ১৩ বছর ধরে গ্রামীণ জনগণকে প্রায় ৮০ কোটি সরকারি পরিষেবা প্রদান করা হয়েছে। প্রকল্প এলাকায় ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। সব মিলিয়ে দেশের ৬০ শতাংশ ভৌগোলিক এলাকার প্রায় ১০ কোটি মানুষ উচ্চগতির ইন্টারনেট সুবিধার আওতায় এসেছে।
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত নির্বাচনে গ্রামবাসীদের সকল মৌলিক চাহিদা প্রদান করতে তিনি আমার গ্রাম, আমার শহর নামে ভিশন ঘোষণা করেছিলেন। আমরা যদি আমাদের গ্রামবাসীকে বিদ্যুত, ইন্টারনেট, আধুনিক সড়ক যোগাযোগ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য প্রদান করতে পারি তাহলে গ্রাম থেকে শহরে স্থানান্তর বা স্থানান্তরিত হওয়ার প্রয়োজন হবে না। আমাদের ৫টি মৌলিক চাহিদা যদি তারা পায় তবে তারা তাদের গ্রামে থাকতেই খুশি হবেন।
বাংলাদেশ ও চীন সরকারের যৌথ অর্থায়নে এ প্রকল্পটিতে দেশের ২৬০০ ইউনিয়নে উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি প্রদান করার পাশাপাশি এক হাজার পুলিশ অফিস ভিপিএন কানেক্টিভিটির মাধ্যমে সংযুক্ত করা হয়েছে। প্রকল্পের মাধ্যমে ইউডিসি থেকে গ্রামীণ জনগণকে প্রায় ৮০ কোটি সরকারি সেবা প্রদান করা হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় স্থাপিত নেটওয়ার্ক থেকে সারাদেশে ৮৪,২৪২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ব্রডব্যান্ড সংযুক্ত হচ্ছে।
প্রকল্পটি ক্রিয়েটিভ ইনক্লিউসিভ ডিজিটাল অপরচুনিটিস ক্যাটাগরিতে ই-এশিয়া ২০১৭ অ্যাওয়ার্ড, ডিজিটাল গভার্ণমেন্ট অ্যাওয়ার্ড ক্যাটাগরিতে ২০১৮ সালে অ্যাসোসিও অ্যাওয়ার্ড এবং ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশনস্ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ক্যাটাগরিতে ডব্লিউএসআইএস ২০১৯ এর চ্যাম্পিয়ন হিসেবে আন্তর্জাতিক অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করে।
