বৈষম্যহীন ডিজিটাল বিশ্ব গড়তে ১০ দফার ‘ঢাকা সনদ ২০২৩’ ঘোষণা
ক.বি.ডেস্ক: ডিপিআই এবং এআই’র সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বৈষম্যহীন ডিজিটাল বিশ্ব গড়তে ১০ দফার ‘ঢাকা সনদ ২০২৩’ ঘোষণা করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক। ঘোষিত সনদে বলা হয়েছে- ডিজিটাল অভিগম্যতায় সমতা আনয়ন; ডিপিআই ও এআই’র শক্তিকে ত্বরান্বিতকরণ; বৈশ্বিক সুবিধার জন্য দায়িত্বশীল এআই’র ব্যবহার; বৈশ্বিক অংশীজনদের মধ্যে সমন্বয়, অংশীদারিত্ব ও জোট গড়ে তোলা; নর্থ-সাউথ, সাউথ-সাউথ-নর্থ ট্রায়াংগুলার সহযোগিতা; শিক্ষা এবং ডিজিটাল স্বাক্ষরতা; ইনক্লুশন ফর ফ্রুগাল ইনোভেশন; আর্থিক অন্তর্ভুক্তি; দায়িত্বশীল এআই’র জন্য প্রযুক্তিগত ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি এবং জেন্ডার ইনক্লুশন।
ঢাকায় দুই দিনব্যাপী (৩০-৩১ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত ‘‘ডিপিআই অ্যান্ড এআই ফর জিরো ডিজিটাল ডিভাইড’’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সমাপনী বক্তব্যে ১০ দফার ‘ঢাকা সনদ ২০২৩’ এর বিস্তারিত তুলে ধরেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক।
গতকাল মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধান অতিথি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আইসিটি সচিব মো. সামসুল আরেফিন, ইউএনডিপি বাংলাদেশ’র আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার, বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আব্দুল্লাই সেক, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মালেকা খায়রুন্নেছা, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর আজাদ হোসেন চৌধুরী, স্মার্ট বাংলাদেশ নেটওয়ার্কের ভাইস-চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ ও অনুজীব বিজ্ঞানী ড. সেঁজুতি সাহা।
বক্তব্য রাখেন আইএসপিএবি’র সভাপতি ইমদাদুল হক, বিসিএস’র সভাপতি সুব্রত সরকার, বেসিস’র পরিচালক আহমেদুল ইসলাম বাবু, বাক্কো’র অর্থ সম্পাদক মো. আমিনুল হক এবং অ্যামটব মহাসচিব মোহাম্মদ জুলফিকার। এ ছাড়াও ভার্চুয়ালি যুক্ত হন ইউনেস্কো’র সহকারী মহা-সচিব গ্যাব্রিয়েলা রামোস এবং ইউএনডিপি’র চিফ ডিজিটাল অফিসার রবার্ট ওপ। সভাপতিত্ব করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক।
মন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘‘শিক্ষাখাতে প্রযুক্তি প্রসারের মাধ্যমে আমরা স্মার্ট সিটিজেন তৈরি করছি। গতানুগতিক শিক্ষাকার্যক্রম থেকে আধুনিক শিক্ষায় রূপান্তরের কার্যক্রম গ্রহণ করেছি। আমরা ইতোমধ্যে ব্লেন্ডেড শিক্ষার মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। শিক্ষা কার্যক্রমকে আরও প্রযুক্তি নির্ভর করার জন্য ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি ‘নৈপুণ্য অ্যাপ’ উদ্বোধন করেন। শিক্ষাখাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-নির্ভর নতুন নতুন স্মার্ট উদ্ভাবনে জোর দিচ্ছি। দেশ ও বিশ্বব্যাপী স্মার্ট শিক্ষাব্যবস্থা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে ডিজিটাল বৈষম্যহীন ও টেকসই বিশ্ব গড়তে বিশ্বনেতাদের এগিয়ে আসতে হবে। আগামীর সমৃদ্ধ শিক্ষা বাস্তবায়নে এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে উদ্ভাবনী উদ্যোগ তৈরি করে স্মার্ট শিক্ষা নিশ্চিত করতে বৈশ্বিক সহায়তার আহ্বান জানান’’।
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক বলেন, ‘‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে ডিপিআই এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়ন ও বৈষম্যহীন ডিজিটাল বিশ্ব গড়ার প্রয়োজনীয়তা তৈরি হয়েছে। জনবান্ধব এআই-নির্ভর অনুশীলনের মাধ্যমে আমরা আগামীতে আমাদের নাগরিক সেবাগুলোকে আরও সার্বজনীন করার চেষ্টা করবো। আমাদের অর্জন ও অভিজ্ঞতাকে শাণিত করতে প্রতি বছর ‘ডিপিআই অ্যান্ড এআই ফর জিরো ডিজিটাল ডিভাইড’ আয়োজন করা হবে’’।
আন্তর্জাতিক এ সম্মেলনের সমাপনী দিনে ই-কমার্স খাত, ফিনটেক, পাবলিক সার্ভিস ডিজিটাইজেশন, এডুটেক, স্বাস্থ্যসেবা, গ্রীন ইকোসিস্টেম উন্নয়নে এআই’র সর্বোত্তম ব্যবহার বিষয়ক ৬টি সেশন/সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মেলনে ডিজিটাল বৈষম্য শূন্যের কোটায় নামিয়ে এনে টেকসই আগামীর স্মার্ট বিশ্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সর্বোত্তম ব্যবহার, নীতি ও নৈতিকতা নির্ধারণ, বাস্তবায়ন ও পারস্পরিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করা হয়।