বেসিস এর ২৫ বছর উদযাপন
ক.বি.ডেস্ক: সরকারি আইসিটি খাত সরকারের সঙ্গে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে শীর্ষস্থানীয় খাত হিসেবে ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বাস্তবায়ন করবে ও অর্থনীতে আরও বেশি অবদান রাখবে- এই লক্ষ্যে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে শপথ নিলেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) সদস্য ও সরকারি-বেসরকারি অংশীজনরা।
গত শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বেসিসের ২৫ বছরপূর্তি অনুষ্ঠানে এই প্রতিশ্রুতি বদ্ধ হোন তারা। প্রযুক্তির পথে বাংলাদেশের স্বপ্ন ও সাফল্যের পথিকৃৎ হিসেবে অতীতের শক্তিতে ভবিষ্যতের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের সংকল্পে জমকালো অনুষ্ঠানে আবৃত্তি গান-নৃত্যে রাজধানীর গ্রীনভিল আউটডোরসে সাফল্যের ২৫ বছর পূর্তি উদযাপন করেছে বেসিস।
অনুষ্ঠানে বেসিস প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এম এ তৌহিদ, সাবেক সভাপতি হাবিবুল্লাহ এন করিম, এ কে এম ফাহিম মাশরুর, শামীম আহসান, মোস্তাফা জব্বার, এস এম কামাল, রফিকুল ইসলাম রাউলি, মাহবুব জামান ও সৈয়দ আলমাস কবীর এবং বর্তমান সভাপতি রাসেল টি আহমেদকে সম্মননা প্রদান করা হয়। সম্মাননা স্মারক তুলে দেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক।
এ সময় সাবেক সভাপতিগণ সফটওয়্যার ও আইসিটি পরিষেবা খাতের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে এই খাতের আর্থিক প্রণোদনা ৮% থেকে বৃদ্ধি করতে এবং ২০২৪ থেকে ২০৩১ সাল পর্যন্ত আইটি ও আইটিইএস খাতকে কর্পোরেট করমুক্ত রাখতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক, সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ও সাবেক বেসিস সভাপতি মোস্তাফা জব্বার, জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনরি, শ্রীলঙ্কার হাইকমিশনার ধর্মপালা বিরাক্কডি। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মার্কিন দূতাবাস প্রতিনিধি, কোটরা প্রতিনিধি, ফ্রান্স দূতাবাস প্রতিনিধি এবং সহস্রাধিক বেসিস সদস্যসহ সতীর্থ বাণিজ্যিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। নেতারাও ।
স্বাগত বক্তব্যে বেসিস ২৫ বছর পূর্তি উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক সামিরা জুবেরী হিমিকা বলেন, “জিআরসি কমিটির রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে একটি মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে ১৯৯৮ সালে বেসিস প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল সেই রিপোর্ট এবং বেসিস উভয়েরই ২৫ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। বর্তমানে বেসিস একটি শক্ত অবস্থানে দাঁড়িয়েছে। এই অবস্থান তৈরিতে বিগত ২৫ বছরে যারা বেসিসের সঙ্গে ছিলেন তাদেরকে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানাই এবং পরবর্তী ২৫ বছরের জন্য একটি মাস্টারপ্ল্যান করে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই।”
বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ বলেন,“আমরা সকলের সঙ্গে এই উদযাপনের আনন্দ ভাগ করে নিতে চাই। সবাই মিলে আমরা একটি পরিবার। বেসিস স্থানীয় সফটওয়্যার ও আইটি পরিষেবাগুলোর মানোন্নয়ন, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ এবং ডিজিটাল উন্নয়নের প্রচার ও প্রসারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পেরেছে। ফলে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পরে স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি আমরা। আর এক্ষেত্রে আইসিটি হল স্মার্ট বাংলাদেশ ভিশনের নিউক্লিয়াস। কৃষি খাত, উৎপাদন খাত, ব্যবসা থেকে শুরু করে শিক্ষা, এই সকল সেক্টরকে ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট হওয়ার জন্য সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি পরিষেবার পরিপূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।”
সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ও সাবেক বেসিস সভাপতি মোস্তাফা জব্বার বলেন, “বেসিসের এই মাইলফলক ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করে স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দীর্ঘ ও অবিচল যাত্রার প্রতিফলন, উদ্ভাবন, সৃজনশীলতা, এবং সাহসিকতার গল্প। বেসিস তার সদস্যদের ক্ষমতায়নে এবং বিশ্বমানের সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি পরিষেবা সরবরাহে অভূতপূর্ব অবদান রেখেছে।”
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক বলেন, “বন্ধু এবং সহযোগী হয়ে বেসিসের উদ্যোক্তারা অবদান রেখেছিল বলেই আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। বেসিসের ২৫০০ আইটি সার্ভিস প্রোভাইডার ও সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট প্রতিষ্ঠানে কয়েক প্রায় তিন লক্ষ তরুণের কর্মসংস্থান তৈরি করেছে তা আমরা ১০ লাখে উন্নীত করতে চাই। একই সঙ্গে একই সময়ের মধ্যে ১ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক বিনিয়োগ আনতে চাই। এ ছাড়াও আইসিটি খাতে ১.৯ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়েও নেতৃত্ব দিচ্ছে বেসিস।”
দেশে গতিশীল সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি পরিষেবা শিল্পের উন্নয়নের লক্ষ্যে, ১৯৯৮ সালে মাত্র ১৮টি চার্টার সদস্য প্রতিষ্ঠান নিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জাতীয় বাণিজ্য সংগঠন হিসেবে বেসিস-এর যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে বেসিস এর সদস্য সংখ্যা প্রায় ২৫০০। এই অসামান্য যাত্রাপথে, বিগত ২৫ বছর ধরে বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তি ও আইটি পরিষেবা খাতের অগ্রগতি ও উন্নয়নে বেসিস অবিস্মরণীয় ভূমিকা রেখেছে।