বিসিএসের ‘আধুনিক কর্মক্ষেত্রে সাইবার নিরাপত্তা’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি
ক.বি.ডেস্ক: বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতি (বিসিএস) সদস্যদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে ‘আধুনিক কর্মক্ষেত্রে সাইবার নিরাপত্তা’ শীর্ষক একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করে। গত শনিবার (১৩ মার্চ) অনলাইনে এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। আইবিপিসি, বিসিএস এবং মাইক্রোসফটের যৌথ উদ্যোগে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। অনলাইনে প্রায় শতাধিক বিসিএস সদস্য এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।
প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি ছিলেন আইসিটি বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এন এম জিয়াউল আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিলের (বিপিসি) কো-অর্ডিনেটর মো. আব্দুর রহিম খান, ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সির মহাপরিচালক মো. রেজাউল করিম, মাইক্রোসফট সাউথ এশিয়া এনএমের সিওও জায়েদ আলকাদী এবং চিফ পার্টনার অফিসার এ এন এইচ ফা।স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিসিএস সভাপতি মো. শাহিদ-উল-মুনীর।
সঞ্চালনা করেন বিসিএস যুগ্ম মহাসচিব মুজাহিদ আল বেরুনী সুজন। পরিচালনা করেন স্মার্ট টেকনোলোজিসের সফটওয়্যার বিজনেসের প্রধান মো. মিরসাদ হোসাইন। অতিথি বক্তা ছিলেন মাইক্রোসফট বাংলাদেশের হেড অব চ্যানেল সেলস হোসেইন মাশরুর। এ সময় বিসিএসের সহসভাপতি মো. জাবেদুর রহমান শাহীন, মহাসচিব মুহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ মো.কামরুজ্জামান ভূঁইয়া, পরিচালকদ্বয় মোশারফ হোসেন সুমন এবং মো. রাশেদ আলী ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন।
এন এম জিয়াউল আলম বলেন, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের কর্মক্ষেত্রেও ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। করোনাকালীন সময়ে আমাদের অনলাইনের ওপর নির্ভরশীলতা বেড়েছে। নিজের কর্মক্ষেত্রকে আমরা যেমন গুছিয়ে রাখি, অনলাইন অফিসের ক্ষেত্রেও সাইবার নিরাপত্তা এবং সুসজ্জিতকরণও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সাইবার নিরাপত্তার বিষয়কে আমরা প্রথম থেকেই গুরুত্ব দিয়ে আসছি। তবে এক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও নিজের অনলাইন কার্যক্রমের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
মো. আব্দুর রহিম খান বলেন, সাইবার নিরাপত্তা শুধু ব্যক্তিক্ষেত্রেই নয়, আধুনিক জীবনে কর্মক্ষেত্রেও এর গুরুত্ব অপরিসীম। এর পাশাপাশি অপরিচিত লিঙ্কে ক্লিক না করা, স্প্যাম মেসেজের ব্যাপারে সতর্ক হওয়া, লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যাংকের কার্ডের তথ্য গোপন রাখা, অটিপি কারো সঙ্গে শেয়ার না করার ব্যাপারেও গুরুত্বারোপ করা দরকার। উন্নত দেশের মতো আমরাও আমাদের কর্মক্ষেত্রকে আরও বেশি গতিশীল করতে সক্ষম হয়েছি।
মো. রেজাউল করিম বলেন, নিজের বাসা বা বিল্ডিং এর নিরাপত্তায় আমরা যেমন কয়েক স্তরের নিরাপত্তার কথা ভাবি তেমনি অনলাইন কর্মক্ষেত্রেও এধরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা জরুরী। বিশেষ করে অনলাইনে ডাটা বা তথ্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা ডিজিটাল তথ্য নিরাপদ রাখতে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি। নিজেরে নিরাপত্তার পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রকেও নিরাপদ রাখতে সরকার নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আধুনিক কর্মক্ষেত্র বিষয়টি যেমন নতুন, এর নিরাপত্তার বিষয়গুলোর সঙ্গেও অনেকে অবগত নন।
মো. শাহিদ-উল-মুনীর বলেন, মডার্ন ওয়ার্কপ্লেসের ধারণা অনেক আগে থেকেই চলে এসেছে। মানুষ প্রতিনিয়ত তার কর্মক্ষেত্রকে যুগোপযোগী করতে প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে যাচ্ছে। বাসায় বসে অফিসের কাজ এমন ধারণা একসময় অমূলক থাকলেও গত দশকে আমরা এর আমূল পরিবর্তন দেখেছি। গুগল, ফেসবুক, মাইক্রোসফটসহ যতো নামকরা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান রয়েছে, তারা বহু আগে থেকেই বাসায় বসে কর্মীদের কাজের সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে। কাজকে সহজ করার জন্য ইন্টারনেটের জগতে অনেক অ্যাপস, সফটওয়্যার রয়েছে। এই সফটওয়্যার বা অ্যাপসগুলো ঠিকমতো ব্যবহার করতে না জানলে তা বিপদের কারণ হতে পারে।
মো. মিরসাদ হোসাইন বলেন, আমরা স্মার্টফোনের পাশাপাশি ল্যাপটপ, ট্যাব এমনকি স্মার্ট টিভি দিয়ে ইন্টারনেটে নিজেদের কাজ করে থাকি। এখনতো স্মার্ট ফ্রিজ বা এসিও চলে এসেছে। বাড়ির বাহিরে থেকেও এই ডিভাইসগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রন নেয়া যাচ্ছে। অনেকগুলো ডিভাইসকে যখন এক নেটওয়ার্কের কভারেজে রাখা হয়, তখন কাজের সুবিধার্তে বা টুল অথবা সফটওয়্যার ব্যবহার করে আমরা সবগুলো ডিভাইসকে একই সময়ে কাজে লাগাতে পারি। এখন সাইবার নিরাপত্তা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সিঙ্গেল ব্যবহারকারীর পাশাপাশি কর্পোরেটদের জন্যও সল্যউশনের ব্যবস্থা করছে। আমরা সাইবার সিকিউরিটির টুলগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার করতে শিখে গেলে আমাদের নিরাপত্তা অনেকাংশেই নিশ্চিত হবে।
হোসেইন মাশরুর বলেন, করোনাকালীন সময়ে এসে আমরা বাসায় বসে অফিস করার ব্যাপারে গুরুত্ব দিয়েছি। ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রগতিকে তরান্বিত করতে আমাদের নিরাপত্তার বিষয়কেও গুরুত্ব দিতে হবে। যেসব অ্যাপ বা সফটওয়্যারের মাধ্যমে সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় সেসব অ্যাপগুলো কেনার ব্যাপারে আমাদের আগ্রহ বাড়াতে হবে। সাইবার নিরাপত্তায় অরিজিনাল বা অথেনটিক সফটওয়্যার ব্যবহার করা জরুরী। এতে সাধারণ ব্যবহারের পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রের কার্যক্রমকেও নিরাপদ রাখা যায়।