সাম্প্রতিক সংবাদ

‘বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস’ উদযাপন

ক.বি.ডেস্ক: ‘ডিজিটাল রূপান্তরে নারী-পুরুষ সমতায়ন’ স্লোগানে বিশ্বব্যাপী ১৭ মে পালিত হয় “বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস”। দিবসটি উপলক্ষ্যে বিটিআরসি ভবনে বাংলাদেশও সভা, সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। বিটিআরসি প্রাঙ্গণে মেলা, প্রধান উপদেষ্টা কর্তৃক ডাক টিকেট অবমুক্তকরণ এবং দেশের বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে হ্যাকাথন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়া একটি ন্যাশন ওয়াইড আইএসপি ও এক ডিভিশনাল আইএসপির হাতে ই-লাইসেন্স তুলে দিয়ে বিটিআরসি’র ই লাইসেন্সিং সেবার উদ্বোধন করা হয়।

আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়ন (আইটিইউ) ঘোষিত বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস ১৭ মে পালিত হয়। বিশ্বজুড়ে উদযাপিত দিবসটির মূল লক্ষ্য হচ্ছে টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে উদ্ভাবন, প্রবেশাধিকার, নীতিমালা এবং সার্বজনীন সুবিধা নিয়ে সচেতনতা তৈরি করা। আধুনিক সমাজে প্রযুক্তির বিশাল ভূমিকা এবং ডিজিটাল রূপান্তরের সুযোগ-সুবিধাকে সামনে রেখে এবারের স্লোগান নির্ধারণ করা হয়েছে ‘ডিজিটাল রূপান্তরে নারী-পুরুষ সমতায়ন’।

দিবসটির সূচনা ১৮৬৫ সালের ১৭ মে, যখন প্যারিসে ইন্টারন্যাশনাল টেলিগ্রাফ কনভেনশনের মাধ্যমে গঠিত হয় ‘ইন্টারন্যাশনাল টেলিগ্রাফ ইউনিয়ন’। পরবর্তীতে সেটিই রূপ নেয় বর্তমান আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নে (আইটিইউ)। ১৯৬৯ সাল থেকে দিবসটি আন্তর্জাতিকভাবে পালন শুরু করে আইটিইউ, যা আজও বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তিনির্ভর উন্নয়নকে তুলে ধরার গুরুত্বপূর্ণ একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত।

গতকাল শনিবার (১৭ মে) রাজধানীর বিটিআরসি ভবনে “বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস” উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথি ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, আইসিটি সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী এবং তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মাহবুবা ফারজানা। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব( রুটিন দায়িত্ব) মো. জহিরুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিটিআরসি চেয়ারম্যান অব. মেজর জেনারেল এমদাদ উল বারী সহ সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তা এবং টেলিকম সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, “আমাদের দেশে অত্যন্ত সফল একটি সেক্টর হচ্ছে আর‌এমজি সেক্টর। যার সফলতার পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে নারীদের বিপুল অংশগ্রহণ। বর্ধমান সেক্টর হিসেবে আইসিটি সেক্টরে ও নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য কোথায় কোথায় প্রতিবন্ধকতা আছে তা চিহ্নিত করে সেভাবেই পলিসি গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তথ্যপ্রযুক্তি ও ইন্টারনেটের নিরাপদ ব্যবহার বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। তথ্যপ্রযুক্তি আমাদের জন্য অনেক সম্ভাবনা তৈরির পাশাপাশি অনেক ঝুঁকিও তৈরি করেছে। আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রায় দেখি নারীরা সাইবার বুলিং, হ্যারাসমেন্ট বা ভায়োলেন্স এর শিকার হন। আমাদের সরকার এগুলো শুরু থেকে বিবেচনা নিয়েছে। আমরা চাই দেশের সাইবার স্পেস তথা তথ্যপ্রযুক্তি খাত নিরাপদ থাকুক নারী পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধ সকলের জন্য।”

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, “আমরা একটি অভাবনীয় ডিজিটাল রুপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এই রূপান্তর সমাজে সুযোগ তৈরির পাশাপাশি বৈষম্য ও তৈরি করছে। ডিজিটাল গভর্নেন্স, ই লার্নিং, ইন্টারনেট সূচক এসব সূচকে সেবা গ্রহীতার দিক থেকে আমাদের নারীরা পিছিয়ে আছে। পলিসি মেকার হিসেবে নারীদের এই পিছিয়ে থাকার বিষয়টি মোকাবেলা করা আমাদের কর্তব্য। সে লক্ষ্যে আমাদের চেষ্টাগুলো অব্যাহত রেখেছি। তবে আমি মনে করি বৈষম্য দূর করতে ইন্ডাস্ট্রির সকল স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে সরকারকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে। আমরা যদি ফাইবারাইজেশন এর টার্গেটগুলো অ্যাচিভ করতে পারি, এক্সেস টু ডিভাইস বানাতে পারি, ডিজিটাল সেবাগুলোকে অফিস থেকে বিকেন্দ্রীকরণ করে নাগরিকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে পারি তাহলে বৈষম্য নিরসনে সফলতা আসবে।”

মাহবুবা ফারজানা বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে ধারণ করে অন্তর্বর্তী সরকার নারী পুরুষের সমতায়নে অঙ্গীকারবদ্ধ। শিল্পায়ন, নাগরিক জীবন এবং শিক্ষা স্বনির্ভরতা নারীকে ঘরের বাইরে কাজ করার সুযোগ করে দিয়ে প্রশস্ত করেছে দেশের কর্মক্ষেত্র। ফলে দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং তথ্যপ্রযুক্তি সহ দেশের সকল ক্ষেত্রে নারীদের আবার বিচরণ পরিলক্ষিত হচ্ছে। তিনি বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব কে কর্মজীবী নারীদের তথ্য প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ প্রদানের অনুরোধ করেন।”

শীষ হায়দার চৌধুরী, “নারীদের নিরাপত্তায় আমরা কাজ করছি। সাইবার সেফটি অর্ডিন্যান্স যা মন্ত্রিপরিষদে অনুমোদিত হয়েছে তাতে সাইবার বুলিং এর বিষয় রয়েছে। এআই পলিসিতেও নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়টি আছে। আমরা পরিস্থিতি বিবেচনায় কাজ করছি যাতে নারীরা বৈষম্য থেকে বেরিয়ে আসতে পারে।”

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *