উদ্যোগ

বাক্কো’র দ্বাদশতম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

ক.বি.ডেস্ক: দেশের বিপিও/আউটসোর্সিং শিল্পের একক ও কেন্দ্রীয় বাণিজ্য সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনট্যাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো)- এর দ্বাদশতম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল সোমবার ঢাকার একটি স্থানীয় সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় বাক্কো’র বার্ষিক সাধারণ সভা।

বাক্কো’র সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ হোসেন বিগত একাদশতম বার্ষিক সাধারণ সভার কার্যবিবরণী, চলতি বছরে সংগঠনটির সকল কার্যক্রম, অগ্রগতির প্রতিবেদন, বিপিও শিল্পের উন্নয়নের নিমিত্ত ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত সম্ভাব্য কার্যক্রম উপস্থাপন করেন। বাক্কো’র অর্থ সম্পাদক মো. আমিনুল হক ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। যা সকলের সম্মতিক্রমে প্রতিবেদনদ্বয় গৃহীত হয়।

বাক্কো’র দ্বাদশতম বার্ষিক সাধারণ সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ। বক্তব্য রাখেন বাক্কো’র সিনিয়র উপদেষ্টা আহমাদুল হক, সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ হোসেন, সহ-সভাপতি তানভীর ইব্রাহীম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. তানজিরুল বাসার, পরিচালকবৃন্দ- এ কে এম আহমেদুল ইসলাম বাবু, আবু দাউদ খান, মো. ফজলুল হক, ড. তানজিবা রহমান, কাওসার আহমেদ এবং মুসনাদ ই আহমেদ। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মো. আবুল খায়ের।

ওয়াহিদ শরীফ বলেন, “এ বছর আরও নতুন নতুন মাইলফলক অর্জনে সক্ষম হয়েছে বাক্কো। আমরা করোনা পরবর্তী খরা কাটিয়ে পঞ্চমবারের মত ‘বিপিও সামিট বাংলাদেশ’-এর আয়োজনে সক্ষম হয়েছি, যা শুধু রাজধানীতে নয়, সাতটি বিভাগীয় পর্যায়েও অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমাদের ডিজিটাল ইকোনোমি হাব নির্মাণের কাজ এগোচ্ছে, যার মাধ্যমে আমরা চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য সামগ্রিকভাবে আরও পরিণত হব। আমাদের ৩৬০+ সদস্য এখন বছরে ৭০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার রাজস্ব দেশে নিয়ে আসছে, যার মাধ্যমে আমাদের অর্থনীতি শক্তিশালী হচ্ছে, আমরা স্মার্ট ইকোনোমির দিকে এগোচ্ছি।”

আহমাদুল হক বলেন, “মাত্র ছয়টি প্রতিষ্ঠান আর ৩০০ কর্মী নিয়ে আমাদের যাত্রা হয়েছিল। আর এখন আমাদের বিপিও শিল্পে কর্মীর সংখ্যা ৭০,০০০। তবে আমাদের একটা কথা মাথায় রাখতে হবে যে, আমাদের বিপিও শিল্পের প্যারাডাইম শিফট হচ্ছে। পরিবর্তন আসছে। আমাদের এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত কর্মীদের কথা মাথায় রাখতে হবে সবার আগে। বিপিও কর্মীদের কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ, নিরাপত্তা, দক্ষতা উন্নয়নে আপস্কিলিং-এর ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। কর্মীদের কদর করলেই আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোর ভিত্তি মজবুত হবে।”

তৌহিদ হোসেন বলেন, “সামনের বছরগুলোতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরও শক্তিশালীভাবে আমাদের ছাপ রাখতে চাই। তাই সদস্যদের বলছি আন্তর্জাতিক মেলায় অংশগ্রহণে আরও উদ্যমী হতে, বাক্কো আছে সুযোগ করিয়ে দেবার জন্য, আপনাদের পাশে। বাক্কোর আভ্যন্তরীণ আটটি সাবকমিটির কাজে সদস্যদের আরও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করার জন্যও অনুরোধ করছি। বিপিও শিল্পের সামগ্রিক উন্নয়নে আপনাদের মতামত আমাদের খুবই প্রয়োজনীয়। কেননা আপনাদের মূল্যবান পরামর্শের ওপর ভিত্তি করেই আমরা বাক্কোর বার্ষিক কর্মপরিকল্পনার নকশা করি।”

বাক্কো’র বার্ষিক সাধারণ সভায় উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে বিপিও প্রতিষ্ঠানসমূহ এবং প্রশিক্ষণ ল্যাবগুলোতে জরুরী অগ্নিনির্বাপণের সুব্যবস্থা নিশ্চিতকরণের প্রয়োজনীয়তা; বিপিও কর্মীদের জন্য প্রফেশনাল আইডেন্টিটি তৈরি ও তাদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচী নিশ্চিতকরণ; অটোমেশন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টালিজেন্স, মেশিন লার্নিং, ল্যাঙ্গুয়েজ লার্নিং মডেল-এর মত আধুনিক প্রযুক্তির আবির্ভাব; সরকারি অংশীজনের সঙ্গে নীতিমালার সামঞ্জস্য তৈরির পরিকল্পনাসহ বিপিও শিল্পের নানামুখী বিষয় নিয়ে মতবিনিময় করেন সদস্যরা।

সিএমইডি হেলথের প্রতিষ্ঠাতা ড. খন্দকার এ মামুন, মেট্রোনেট বাংলাদেশ এর সিইও সৈয়দ আলমাস কবীর, মেসার্স ফায়ার অ্যান্ড সেইফটি ম্যানেজমেন্টের ম্যানেজিং পার্টনার ফয়সাল আহমেদ, এইচএমসি টেকনোলজির সিইও মৃধা মোহাম্মদ মাহফুজ-উল-হক, আয়েশা সার্ভিসেসের সিই্ও জায়েদ উদ্দীন আহমেদ, এসেনশিয়াল ইনফোটেকের সিই্ও মুস্তাফিজ আহমেদ খান, ঢুলির সিইও মির্জা আফরীন ফাতিমা লুশা বিপিও শিল্প সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন।

২০১১ সালে যাত্রা করে বাক্কো। সরকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠার যাত্রায় বাক্কো ছিল অবিচ্ছেদ্য সঙ্গী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রস্তাবিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছে সংস্থাটি। বাক্কো’র বর্তমান সদস্য সংখ্যা ৩৭০, যারা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে চলেছে। ২০২৫ সালের মধ্যে দেশের বিপিও খাতে ১ লক্ষ কর্মসংস্থান ও ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রাজস্ব আয় সৃষ্টিই বাক্কো’র অভিলক্ষ্য।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *