বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভার্নেন্স ফোরাম-২০২৩
ক.বি.ডেস্ক: বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এবং বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্ন্যান্স ফোরাম (বিআইজিএফ) এর যৌথ উদ্যোগে শুরু হলো তিন দিনব্যাপী (২৩-২৫ নভেম্বর) ১৮তম ‘বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভার্নেন্স ফোরাম-২০২৩ বিষয়ক সেমিনার’। সেমিনারে মোট ৮টি সেশনে প্রযুক্তিবিদ, গবেষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, উদ্যোক্তা, টেলিযোগাযোগ খাত সংশ্লিষ্ট অংশীজনসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তা, বাংলাদেশ উইমেন ইন্টারনেট গভর্ন্যান্স ফোরামের প্রতিনিধি এবং বিটিআরসি’র কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করবেন।
গত বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওস্থ বিটিআরসি ভবনের সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত ১৮তম ‘বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভার্নেন্স ফোরাম-২০২৩ বিষয়ক সেমিনার’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। সম্মানীত অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের সিনিয়র সচিব কে এম আবদুস সালাম। সভাপতিত্ব করেন বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার। সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ এনজিওস নেটওয়ার্ক ফর রেডিও অ্যান্ড কমিউনিকেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আ হ ম বজলুর রহমান।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিআইজিএফ’র মহাসচিব মোহাম্মদ আবদুল হক অনু, ভিউস বাংলাদেশ সম্পাদক রাশেদ মেহেদী, এশিয়া ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. কাজী ফয়সাল বিন সিরাজ, এবং এমটব’র মহাসচিব লে. কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ জুলফিকার, বিটিআরসি’র ভাইস চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদ, লিগ্যাল অ্যান্ড লাইসেন্সিং বিভাগের কমিশনার আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন, স্পেকট্রাম বিভাগের কমিশনার প্রকৌশলী শেখ রিয়াজ আহমেদ ও অর্থ, হিসাব ও রাজস্ব বিভাগের কমিশনার ড. মুশফিক মান্নান চৌধুরী।
মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘‘স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য দেশের প্রতিটি মানুষকে ইন্টারনেট সংযুক্তির আওতায় আনতে হবে। স্মার্ট বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় স্মার্ট সংযুক্তি অপরিহার্য। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে দেশের এক ইঞ্চি জায়গাও উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযুক্তির আওতার বাইরে থাকবে না। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটে ‘এক দেশ এক রেট’ সেবার মাধ্যমে শহর ও গ্রামের মধ্যে ইন্টারনেটের দামের বৈষম্য হ্রাস পেয়েছে। তবে এই স্মার্ট বাংলাদেশের সুফল ভোগ করতে হলে প্রতিটি নাগরিককে প্রযুক্তিজ্ঞানসম্পন্ন হতে হবে।’’
কে এম আবদুস সালাম বলেন, ‘‘২০০৯ সালে বর্তমান সরকার কর্তৃক গৃহীত ডিজিটাল বাংলাদেশের যে যাত্রা হয়, তার সুফল দেশের সকল মানুষের নিকট পৌঁছে গেছে। গত ১০ বছরে ডিজিটাল খাতে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। বর্তমান ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনের বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৪১ সাল নাগাদ স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের যে রূপকল্প গ্রহণ করা হয়েছে তা যথাসময়ে বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।’’
শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, ‘‘টেলিযোগাযোগ খাতে গবেষণা ও উন্নয়নে বাংলাদেশ পিছিয়ে রয়েছে। তাই ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি সম্প্রসারণের পাশাপাশি সকলের জন্য স্মার্ট ডিভাইসের সহজলভ্যতাও নিশ্চিত করতে হবে। মানুষের দৈনন্দিন জীবনধারায় ইন্টারনেট অপরিহার্য হয়ে ওঠায় ডিজিটাল সংযুক্তি ও টেলিযোগাযোগ অবকাঠামোর উন্নয়নে বিটিআরসি বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।’’
আলোচনায় বক্তারা বলেন, দেশের সকল মানুষকে কানেক্টিভিটির আওতায় নিয়ে আসতে এবং ডিজিটাল রুপান্তর এর সুফল জনগণের দোরগোঁড়ায় পৌঁছে দিতে দেশের অধিকাংশ উপজেলাকে উচ্চগতির ফাইবার অপটিক ক্যাবলের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। আলোচনায় নেটওয়ার্ক কাভারেজ, নিরবচ্ছিন্ন দ্রুতগতির ইন্টারনেট, স্মার্ট ডিভাইস এবং ডাটামূল্যের সহজলভ্যতা, ডিজিটাল অবকাঠামো বিনির্মাণের ওপর গুরুত্বরোপ করেন বক্তারা। টেকসই ইন্টারনেট সুবিধা, ইন্টারনেটের অর্থবহ ব্যবহার এবং এ খাতে গবেষণা অত্যন্ত জরুরি বলেও মতামত প্রদান করেন তারা।