প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ডিজিটাল জালিয়াতি রোধে ‘সুরক্ষা’
ক.বি.ডেস্ক: পরীক্ষার হলে বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে ডিজিটাল জালিয়াতির অভিযোগ প্রায়ই আসে। বিশেষ করে যেকোনো নিয়োগ পরীক্ষার সময় অপরাধী চক্র বিশেষ উপায়ে অসাদুপায় অবলম্বন করে। এবার সেই ডিজিটাল জালিয়াতি রোধে পাল্টা ডিজিটাল যন্ত্র ‘সুরক্ষা’ উদ্ভাবন করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। ডিজিটাল জালিয়াতি রোধে বিশেষ এই যন্ত্র উদ্ভাবনে সহায়তা করেছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইআইটিসি) বিভাগ।
বর্তমানে চাকরির পরীক্ষার হলে বসে এক শ্রেণির অসাধু চাকরিপ্রার্থী কানে দেয়া ছোট একটি ডিভাইসের মাধ্যমে জালিয়াতি করে বলে অভিযোগ আছে। কখনো কখনো তা ধরাও পড়ে। উদ্ভাবিত নতুন এই যন্ত্র সন্দেহভাজন ব্যক্তির কাছাকাছি নিলে সংকেত (সিগন্যাল) দেবে। যার মাধ্যমে দোষী পরীক্ষার্থীকে চিহ্নিত করা যাবে।
আগামী ২৯ মার্চ তৃতীয় ধাপের নিয়োগ পরীক্ষা থেকেই এ যন্ত্র ব্যবহার করা হবে। এ নিয়োগ পরীক্ষায় ২৫টি যন্ত্র দিয়ে ৫টি টিম করে পরীক্ষাকেন্দ্রে এ যন্ত্রের পাইলটিং করা হবে। পরীক্ষার্থী বেশি এমন ৫টি জেলা নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, টাঙ্গাইল ও কিশোরগঞ্জ এ জেলাগুলোতে পাইলটিং করা হবে।
পরীক্ষার্থীরা যাতে কোনো প্রকার ইলেকট্রনিক্স কমিউনিকেটিভ ও ডিভাইস নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে না পারে সে লক্ষ্যে প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রে মেটাল ডিটেক্টর সরবরাহ ও স্থাপন করবে পুলিশ। পরীক্ষার্থীদের শরীর তল্লাশি করার জন্য মহিলা কেন্দ্রে মহিলা পুলিশ ও পুরুষ কেন্দ্রে পুরুষ পুলিশ ফোর্স নিয়োজিত থাকবে। পরীক্ষার সময় প্রশ্নফাঁসের গুজব ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম মনিটরিং করতে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তৎপর থাকবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য নিয়ে মাঠে তৎপর থাকবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ( ২১ মার্চ) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ। এ সময় ডিজিটাল জালিয়াতি রোধে পাল্টা ডিজিটাল যন্ত্র ‘সুরক্ষা’ যন্ত্রের কারিগরি দিক তুলে ধরেন উদ্ভাবনের সঙ্গে জড়িত বুয়েট’র অধ্যাপক এস এম লুৎফুল কবির।
ফরিদ আহাম্মদ বলেন, “আগামী ২৯ মার্চ তৃতীয় ধাপে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় এ যন্ত্রটি ব্যবহার করা হবে। যন্ত্রটি ব্যবহারে শতভাগ না হলেও প্রাথমিক সফলতা এসেছে। এবার পাঁচ জেলায় নিয়োগ পরীক্ষায় এর পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করা হবে। শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি করলেই ধরে ফেলবে এই ডিভাইস। এই যন্ত্র উদ্ভাবনের জন্য বুয়েটের আইআইটিসিকে ইনোভেশন ফান্ডের আওতায় ৫ লাখ টাকা দেয়া হয়। এ যন্ত্র তৈরিতে প্রাথমিকভাবে ৮ হাজার ৫০০ টাকা খরচ হবে। পরে বেশি পরিমাণে উৎপাদন করা হলে দাম পড়বে ৫ হাজার ৫০০ টাকা।”
অধ্যাপক এস এম লুৎফুল কবির জানান, “কারও কাছে যদি ছোট কোনো ডিভাইস থাকে, তবে সন্দেহভাজন ব্যক্তির কাছাকাছি নিলেই সংকেত দেবে যন্ত্রটি। এর মাধ্যমে দোষী পরীক্ষার্থীকে চিহ্নিত করা যাবে।”
তৃতীয় ধাপে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২৯ মার্চ। এই ধাপে শূন্য পদের সংখ্যা ৬ হাজার ২০১। এর বিপরীতে আবেদন করেছেন ৩ লাখ ৪৯ হাজার ২৯৩ জন। সব মিলিয়ে এ বছর মোট ১৩ হাজার ৭৮১ জন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে।