পঞ্চম বিপিও সামিট বাংলাদেশ ২০২৩ এর উদ্বোধন
ক.বি.ডেস্ক: দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দেশের সীমানা পেরিয়ে বৈশ্বিক পর্যায়ে বিজনেস আউটসোর্সিংসহ এই খাতের নতুন বাজার খুঁজে সর্বোত্তম প্রযুক্তি সেবা দেয়ার প্রত্যয় নিয়ে শুরু হলো দুই দিনব্যাপী (২২-২৩ জুলাই) পঞ্চমবারের মতো ”বিপিও সামিট বাংলাদেশ ২০২৩”। দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এবারের সামিটে নিজেদের সেবার পসরা তুলে ধরছে বাক্কো সদস্য ১৫টি প্রতিষ্ঠান। জমা নেয়া হচ্ছে চাকরির আবেদন। দেয়া হচ্ছে দক্ষতা উন্নয়নের প্রশিক্ষণ। অনুষ্ঠিত হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান, ব্যবাসা বিকাশে বিজনেস নেটওয়ার্কিং ও ম্যাচ মেকিং।
আজ শনিবার (২২ জুলাই) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের রূপসী বাংলার বলরুমে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনট্যাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো)-এর উদ্যোগে আয়োজিত ”বিপিও সামিট বাংলাদেশ ২০২৩” এর উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরি। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, আইসিটি সচিব সামসুল আরেফিন এবং আইসিটি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মোস্তফা কামাল। সভাপতিত্ব করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাক্কো সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বাক্কো সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ হোসেন।
অনুষ্ঠানে বিভাগীয় জেলা প্রশাসন এবং বর্ষসেরা চার বিপিও ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা দেয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। এদের মধ্যে এক হাতেই ডেটা এন্ট্রি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা নাজমুল হক মোল্যা ছাড়াও সফল প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ইগনাইট, সার্ভিস ইঞ্জিন লিমিটেড ও জেনেক্স ইনফোসিস এবার এই সম্মাননায় ভূষিত হয়েছে।
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরি বলেন, প্রযুক্তি খাতকে এগিয়ে নিতে ও নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বিপিও একটি উদীয়মান ক্ষেত্র। তাই বিপিওকে সাধারণ মানুষের কাছে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে। দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক বিস্তার ও বহির্বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে দুই দিনের এই মেলা বড় ভূমিকা রাখবে। বৈদেশিক মুদ্রা আয়ে সুযোগ দেবে। ঘরে বসেই নারীরা এই পেশায় আসতে পারে। তাদের মেধা-শ্রম দিয়েই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আউটসোর্সিং পুল আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আরও বলেন, এআই বিশ্বজুড়েই আলোচিত ও বাস্তবতা। এটা আগামীতে আমাদের নানা ভাবে প্রভাবিত করবে। তবে এর পেছনে রয়েছে একজন মানুষ। তাই মানুষের প্রয়োজন কোনো দিনই ফুরাবে না। এআই আমাদের কাজ খেয়ে ফেলবে না। তাদেরকে এই মানুষরাই সৃষ্টি করবে। তাই নতুন দক্ষতা উন্নয়নে সর্বশেষ প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ নিতে হবে। তাই কোনো কোন ক্ষেত্রে এই রূপান্তরে মনযোগী হতে হবে। আমাদের মানুষের দক্ষতা, মেধা ও শ্রমের মাধ্যমেই নতুন চ্যালেঞ্চ মোকাবেলা করা সম্ভব। আমাদের আইটি এক্ষেত্রে প্রমাণ দিয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, এআই আমার এখন নিত্য দিনের সঙ্গী। সে আমার ভাষাগত দূরত্ব ঘুচে দিয়েছে। এক্ষেত্রে আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্সের সঙ্গে ন্যাচারাল ইন্টিলিজেন্সের মধ্যে সমন্বয়ে সরকারের প্রত্যয়ের কথা জানান তিনি। রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে স্মার্ট নাগরিক তৈরি করতে সনদ থেকে কর্মমুখী শিক্ষা নিশ্চিত করছি। প্রাথমিকে কোডিং শেখানোর মাধ্যমে সরকার এখন প্রবলেম সলভার তৈরি করছে। ভবিষ্যত স্মার্ট অর্থনীতি গড়ে তুলতে হলে স্মার্ট কর্মসংস্থানের বিকল্প নেই।
এ জন্য সাইবার সিকিউরিটি, চিপ ডিজাইনিং, ব্লকচেইন, এআই এর মতো ভবিষ্যত প্রযুক্তিতে ১ লাখ দক্ষকর্মী গড়ে তুলতে শুরু করেছে। ইন্টারনেট মহাসড়ক প্রস্তুত করেছে। বিদ্যুতের সমস্যারও সমাধান হয়েছে। এর ফলে বিপিও খাতে ২০ লাখ কর্মসংস্থান সম্ভব হয়েছে। গত ৫-১০ বছরে যতগুলো হাইটেক ও সফটওয়্যার পার্ক থেকে বড় অংকের রপ্তানি আয় করা সম্ভব হচ্ছে। এখন দেশের ৫৭ বিশ্ববিদ্যালয়েই গবেষণা ও উদ্ভাবন ল্যাব তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। সহসাই আইএসপিএবি’র মাধ্যমে মধ্যে ১ লাখ ৯ হাজার ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করতে পারবো।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর দুইটি ভ্যেনুতে চারটি সেমিনারের মধ্য দিয়ে সন্ধ্যায় শেষ হয় প্রথম দিনের সম্মেলন। দ্বিতীয় দিনের সম্মেলনে থাকছে ৫টি সেমিনার।