‘নৈপুণ্য’ অ্যাপ উদ্বোধন করলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি
ক.বি.ডেস্ক: নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নভিত্তিক ‘নৈপুণ্য’ অ্যাপ উদ্বোধন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন ও তার রেকর্ড আকারে সংরক্ষণ করতে ‘নৈপুণ্য’ অ্যাপ। নতুন শিক্ষাক্রমে মূল্যায়ন পদ্ধতিতে শিখনকালীন ও সামষ্টিক মূল্যায়নের তথ্য সংরক্ষণ ও স্বয়ংক্রিয়ভাবে রিপোর্ট কার্ড প্রস্তুতের সুবিধার্থে এটুআই’র কারিগরি সহায়তায় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এই ‘নৈপুণ্য’ অ্যাপ উন্নয়ন করেছে।
‘নৈপুণ্য’ অ্যাপের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের যাবতীয় তথ্য সংরক্ষণ করা হবে। এতে শিক্ষার্থীদের ফলাফল, সংশ্লিষ্ট যাবতীয় তথ্য সংরক্ষণ করা হবে। শিক্ষার্থীরা তাদের আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে এতে প্রবেশ করতে পারবে এবং প্রয়োজনীয় সব তথ্য আদান-প্রদান করতে পারবে।
আজ বুধবার (৮ নভেম্বর) রাজধানীর একটি স্থানীয় হোটেলে ‘নৈপুণ্য’ অ্যাপ উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, ঢাক-১৭ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত, জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন। শিক্ষাক্রম রূপান্তরের পটভূমি নিয়ে অনুষ্ঠানে তথ্যচিত্র উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক এম তারিক আহসান।
নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীদের পারদর্শিতা মূল্যায়ন ও রিপোর্ট কার্ড তৈরিতে নৈপুণ্য অ্যাপ। শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক শিখন দক্ষতা এবং দুর্বলতার বিষয়গুলো এই অ্যাপের মাধ্যমেই সংরক্ষণ করা হবে। ছাত্র-ছাত্রীরা সারা জীবনের শিখনকালীন সময়ে যা যা শিখবে সবকিছুই এখানে সংরক্ষণ করে রাখা হবে। ছাত্র-ছাত্রীরা কি কি দক্ষতা অর্জন করছে, কোন কোন ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকছে সবকিছু জানা যাবে এই অ্যাপের মাধ্যমে।
ডা. দীপু মনি বলেন, ‘অনেকে বলছেন নতুন কারিকুলামে পরীক্ষা থাকবে না, ধর্মশিক্ষাও থাকবে না। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে অন্য বিষয়ে মূল্যায়ন যেমন হবে, ধর্মীয় শিক্ষাও সেভাবেই মূল্যায়ন হবে। আমরা শিক্ষার সঙ্গে জীবন এক করে দিতে চাই। ছাত্র-ছাত্রীরা এখন জীবনমুখী শিক্ষায় শিক্ষিত হবে। চার দেয়ালের মধ্যে এখন আর শিক্ষার সীমাবদ্ধ থাকবে না।’
উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘নতুন শিক্ষাক্রম আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা নিশ্চিত করতে কাজ করবে। বর্তমান শিক্ষাক্রমে প্রযুক্তি শিক্ষার পাশাপাশি মূল্যায়নও হবে ভিন্নভাবে। আমাদের প্রচলিত শিক্ষা কাঠামোয় পরীক্ষা নির্ভরতা ছিল এবং এর ফলে শিক্ষার্থীদের মাঝে ফলাফল নির্ভরতা ছিল। এবারের নতুন শিক্ষাক্রমে ফলাফল নির্ভরতা রাখা হয়নি। ফলে শিক্ষার্থীরা নতুন শিক্ষাক্রমে আরও বেশি শিখতে পারবে। এটি বর্তমান বিশ্বের প্রায় সব দেশেই অনুসরণ করা হচ্ছে। ফলে প্রতিযোগিতায় টিকতে আমাদের এ পরিবর্তনকে স্বীকার করতে হয়েছে।’
ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা পিছিয়ে যাবো, না এগিয়ে যাবো তা ভাবতে হবে। নতুন শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে অনেক অপপ্রচার হচ্ছে। নতুন শিক্ষা কারিকুলামে মুখস্তবিদ্যা থেকে বের হতে পারবো। শিক্ষা ব্যবস্থায় আমল পরিবর্তন এসেছে, যা অনেকেরই প্রত্যাশা ছিল। এই শিক্ষা ব্যবস্থা আমাদের অন্য এক দিগন্তে পৌঁছে দেবে।’
ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘সুন্দর করে শিক্ষার্থীদের প্রতিটি বিষয় এই অ্যাপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। স্মার্ট বাংলাদেশের যে যাত্রা শুরু হয়েছে এটি তার প্রমাণ। শিক্ষার্থীদের ছোটবেলা থেকেই স্মার্ট নাগরিক তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল সংস্কার শুরু হয়েছে- যা অনেকের প্রত্যাশা ছিল। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা এখন অন্য এক দিগন্তে এগিয়ে যাচ্ছে।’