নেটওয়ার্ক কানেক্টিভিটিকে শক্তিশালী করছে এআই ও ফাইভজি-অ্যাডভান্সড

ক.বি.ডেস্ক: ২০২৫ সালে ফাইভজি-অ্যাডভান্সড প্রযুক্তির বাণিজ্যিক প্রয়োগ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। আন্তর্জাতিক মোবাইল অপারেটর, সংশ্লিষ্ট খাতের বিশেষজ্ঞ ও নির্ধারকদের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে কাজ করছে হুয়াওয়ে। যাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক (এআই) উদ্ভাবন ব্যবহার করে টেলিকম সেবা, অবকাঠামো ও পরিচালনা পদ্ধতিকে নতুনভাবে গড়ে তোলা যায়।
ফাইভজি-এ এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মধ্যে ক্রমবর্ধমান সমন্বয় শিল্পখাতে এক গভীর রূপান্তর নিয়ে আসছে। বিশেষ করে উৎপাদন খাতে ফাইভজি-এ-এর লো ল্যাটেন্সি ও হাই ব্যান্ডউইথের সঙ্গে যুক্ত এআই নির্ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য সহায়ক হিসেবে কাজ করছে। এআই-সমৃদ্ধ ফাইভজি-এ নেটওয়ার্ক তাৎক্ষণিকভাবে বিপুল পরিমাণ তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করতে পারে, যার মাধ্যমে ‘অনুধাবন > সিদ্ধান্ত > বাস্তবায়ন‘- এই পূর্ণ চক্রটি দ্রুত সম্পন্ন হয়। এতে একদিকে শিল্পখাতে উৎপাদন ঝুঁকি কমে, অন্যদিকে সামগ্রিক দক্ষতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে।
সম্প্রতি চীনে অনুষ্ঠিত হয়েছে “মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস সাংহাই ২০২৫ (এমডব্লিউসি)”-এ ‘মোবাইল ব্রডব্যান্ড ফোরাম (এমবিবিএফ) টপ টক সামিট’। এই সম্মেলনে শীর্ষস্থানীয় টেলিকম প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবন্দ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) উদ্ভাবক ও শিক্ষাবিদসহ ১৫০ জন অতিথি অংশগ্রহণ করেছেন। তথ্যপ্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) খাতের সমন্বয়ের ফলে যে বিপুল সম্ভাবনা তৈরি হবে তা নিয়ে তাঁরা আলোচনা করেন।
সম্মেলনে হুয়াওয়ের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর অব দ্য বোর্ড ডেভিড ওয়াং বলেন, “মোবাইল এআই’র ব্যবহার তিনটি নতুন উপায়ে মোবাইল শিল্পখাতে নতুন প্রাণশক্তি নিয়ে আসছে। প্রথমত, মোবাইল ডিভাইসগুলো এখন আর কেবল অ্যাপের ওপর নির্ভরশীল নয়। এখন ডিভাইসগুলো এআই এজেন্ট হোস্ট করতে শুরু করেছে। দ্বিতীয়ত, আইওটির সঙ্গে এআইয়ের সমন্বয় বুদ্ধিবৃত্তিক বিশ্বের নতুন দ্বার উন্মোচন করছে। তৃতীয়ত, এআই এখন নেটওয়ার্ক প্রযুক্তিকে শক্তিশালী করে তুলেছে। কিন্তু এখন এআই আমাদের একই সঙ্গে স্পেকট্রাম, শক্তির ব্যবহার, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের দক্ষতা বাড়ানোর সুযোগ করে দিচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, ফাইভজি-এ (অ্যাডভান্সড)-এর সম্ভাবনা উন্মোচন করে মোবাইল এআইয়ের যুগে সম্মিলিতভাবে সাফল্য অর্জনের জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান। এই লক্ষ্যে হুয়াওয়ে এবং এর সহযোগীরা ইতোমধ্যে পাঁচটি ক্ষেত্রে একসঙ্গে কাজ করছে। এই উদ্যোগ ফাইভজি-এ-এর ব্যবহারকে ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করবে। এই ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে লার্জ আপলিংক ব্যান্ডউইডথ, উন্নত ডিভাইস ইকোসিস্টেম, মাল্টিমোডাল ইন্টেলিজেন্ট সার্ভিস, অল-সিনারিও আইওটির সক্ষমতা ও বিভিন্ন ব্যবসায়িক মডেল।
হুয়াওয়ে কর্পোরেট সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট লি পেং বলেন, “ফাইভজি-এ আরও শক্তিশালী সক্ষমতা নিয়ে আসবে। এটি অপারেটরদের জন্য বহু দিক থেকে নির্ভরযোগ্য নেটওয়ার্ক অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করার পথ সুগম করবে। একই সঙ্গে ফাইভজি-এ নতুন ধরনের উদ্ভাবনী ব্যবসার সুযোগ তৈরি করবে এবং ট্র্যাফিকভিত্তিক আয় মডেলের বাইরে গিয়ে সরাসরি গ্রাহকের অভিজ্ঞতাকে আয়ের উৎসে পরিণত করবে। এই রূপান্তর অপারেটরদের ব্র্যান্ডের মান বাড়াবে, নতুন উপযোগিতা সৃষ্টি করবে এবং ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতা থেকেই আরও কার্যকরভাবে আয় করতে সহায়তা করবে। সেই লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য আমাদের অবকাঠামোর বিবর্তনের লক্ষ্যে নতুন এআই-কেন্দ্রিক নেটওয়ার্ক নির্মাণের মানদণ্ড তৈরি করতে হবে। ”
বাণিজ্যিক প্রেক্ষাপটে দেখা যাচ্ছে গ্রাহকদের উন্নত অভিজ্ঞতা দেয়ার আকাঙ্ক্ষাই ফাইভজি-এ প্রযুক্তিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এবং একে আর্থিকভাবে সফল করে তুলছে। ক্লাউড গেমিং কিংবা মাল্টিভিউ ইমার্সিভ স্পোর্টস স্ট্রিমিংয়ের মতো লো-ল্যাটেন্সি ও হাই ব্যান্ডউইথনির্ভর অ্যাপ্লিকেশনের ক্ষেত্রে ফাইভজি-এ-এর নিরবচ্ছিন্ন পারফরম্যান্স গ্রাহকদের জন্য আরও সহজ পেমেন্ট মডেল তৈরি করছে।