দেশে প্রথম ভার্চ্যুয়াল আদালত চালু
নতুন যুগে প্রবেশ করলো বাংলাদেশের বিচার বিভাগ। দেশের উচ্চ আদালত হাইকোর্টে শুরু হলো অনলাইনে বিচার কার্যক্রম। আজ সোমবার অনলাইনে আইনজীবীদের বিভিন্ন আবেদন করার মধ্য দিয়ে ভার্চুয়াল আদালত চালু হয়ে গেলো।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের প্রেক্ষাপটে ঘোষিত সাধারণ ছুটির কারণে নিয়মিত আদালত বন্ধ থাকায় ভার্চুয়াল আদালত চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হাইকোর্টে বসবে তিনটি বেঞ্চ। বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ বসবে। এসব আদালতে জামিন আবেদনসহ যেকোনো জরুরি বিষয়ে শুনানি করা যাবে। তবে সারা দেশে নিম্ন আদালতগুলোতে শুধু জামিনের আবেদন শুনানি করা যাবে। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবরের স্বাক্ষরে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
ভার্চুয়াল আদালত কিভাবে শুনানি গ্রহণ করবেন, আদেশ বা রায় দেবেন, আইনজীবীরা কোথায় আবেদন বা মামলা দাখিল করবেন, কিভাবে শুনানি করবেন সে বিষয়ে ১৪ দফা প্র্যাকটিস নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
করোনাজনিত পরিস্থিতির কারণে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ। মানুষের শারীরিক উপস্থিতির মাধ্যমে কবে নাগাদ আদালত চালু হবে, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। এমন পরিস্থিতির মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ভার্চ্যুয়াল আদালত চালু হওয়ার সিদ্ধান্ত ইতিবাচক। ইন্টারনেটের মাধ্যমে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্চ্যুয়াল আদালত পরিচালিত হবে।
ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বিচারকাজ পরিচালনার জন্য আদালত কর্তৃক ‘তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার অধ্যাদেশ, ২০২০’–এর খসড়া গত বুধবার মন্ত্রিসভায় অনুমোদন হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শনিবার আদালত কর্তৃক তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার অধ্যাদেশটি গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়। আজ সোমবার থেকে স্বল্প পরিসরে ভার্চ্যুয়াল আদালত চালু হচ্ছে।
পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে ইতিমধ্যে ভার্চ্যুয়াল আদালত চালু রয়েছে। আমাদের দেশেও স্থায়ীভাবে এই আদালত চালু করা উচিত। ভারতের বেশ কিছু জায়গায় চালু হয়েছে। শুধু হাজিরা দেওয়ার জন্য আসামিদের হাজত থেকে আদালতে আনার কোনো অর্থ হয় না।
ভার্চ্যুয়াল আদালত: ভার্চ্যুয়াল আদালতের ব্যবহারের ম্যানুয়াল অনুযায়ী, ভার্চ্যুয়াল আদালত পদ্ধতিতে অংশগ্রহণের জন্য http://mycourt.judiciary.org.bd/users/login নামের একটি ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করতে হবে। ওয়েবসাইটে প্রবেশের পর নিজের মোবাইল নম্বর, ই–মেইল ও পূর্ণাঙ্গ নাম লিখে নিবন্ধন করতে হবে। এরপর নিবন্ধিত মোবাইল ফোন নম্বরে একটা খুদে বার্তা যাবে। পরে ওয়েবসাইটে ঢোকার পাসওয়ার্ড পাঠানো হবে মুঠোফোনে।
পরে ব্যবহারকারী http://mycourt.judiciary.org.bd/users/login এর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করতে পারবেন। জমা দিতে পারবেন জামিননামাও। এ ছাড়া ভার্চ্যুয়াল শুনানিতে অংশ নেওয়ার জন্য ব্যবহারকারীর মুঠোফোন কিংবা ল্যাপটপে মাইক্রোসফট টিম নামের সফটওয়্যারটি ডাউনলোড করে হবে। এই অ্যাপসটির মাধ্যমে ব্যবহারকারী ভার্চ্যুয়াল শুনানিতে অংশ নিতে পারবেন।
কীভাবে ব্যবহারকারী ভার্চ্যুয়াল শুনানিতে অংশ নেবেন বা জামিননামা, বেইল বন্ড দাখিল করবেন, সে সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেছে http://muktopaath.gov.bd/course-details/249 ওয়েবসাইট। একই সঙ্গে যে কেউ সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে গিয়ে এ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন।