ডিজিটাল লিটারেসি ও সাইবার নিরাপত্তা
ক.বি.ডেস্ক: গণমাধ্যমকর্মীদের ডিজিটাল লিটারেসি ও সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে ডিজিটাল লিটারেসি ও সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার (৩১ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে আইসিটি বিভাগের ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টার (ডিএলসি) ও ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সির (ডিএসএ) উদ্যোগে দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়।
টেকনোলজি মিডিয়া গিল্ড বাংলাদেশ (টিএমজিবি) এর সহায়তায় গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য নিরাপদ ইন্টারনেটের অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতে এই প্রকল্প বায়স্তবায়নের অংশ হিসেবেই প্রশিক্ষণটি অনুষ্ঠিত হয়। প্রশিক্ষণে দেশের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যমের ৫০ জন গণমাধ্যমকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
‘‘গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য ডিজিটাল লিটারেসি ও সাইবার নিরাপত্তা’’ বিষয়ক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন আইসিটি বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এন এম জিয়াউল আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কমপিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) নির্বাহী পরিচালক রণজিত কুমার, টিএমজিবির সভাপতি মোহাম্মদ কাওছার উদ্দীন ও সাধারণ সম্পাদক মুরসালিন হক জুনায়েদ। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সরকারের জন্য নিরাপদ ইমেইল ও ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টার স্থাপন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল আলম খান। সভাপতিত্ব করেন ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সির মহাপরিচালক মোহাম্মদ খায়রুল আমীন।
এন এম জিয়াউল আলম বলেন, সারা বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশেও সাইবার অ্যাটাক বাড়ছে। আমরা সতর্ক হচ্ছি ঠিকই, তবে সেটি আরও বাড়াতে হবে। তবেই সাইবার হামলা মোকাবিলা করা যাবে। এখন তরুণ-তরুণীদের সাইবার জগতে সতর্ক ও সচেতন হতে হবে বেশি। তাছাড়া সাইবার জগতে বড় ধরনের অঘটন ঘটতে পারে, তাই আমাদের উচিত সবার সম্মিলিত সহযোগিতার মাধ্যমে তা মোকাবিলা করতে হবে। আমাদের ডিজিটাল ডিভাইসগুলোও এখন নিরাপদ নয়। সব সময় সাইবার অপরাধীরা ওঁত পেতে থাকে। এমন আয়োজনের মাধ্যমে সমন্বিত উদ্যোগ নিয়ে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশকে নিরাপদ করতে পারবো।
রণজিত কুমার বলেন, সারা বিশ্বে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুধুমাত্র সাইবার নিরাপত্তার মাধ্যমেই কেউ ইন্টারনেটে বাইরের হুমকি থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারে। তিনি বলেন যে সকলের সাবধানতা এবং সচেতনতাই পারে নিরাপদ সাইবার পরিবেশ তৈরী করতে। এই কারণেই আমাদের সাইবার নিরাপত্তার ব্যাপারে সচেতন হওয়া দরকার।
মোহাম্মদ কাওছার উদ্দীন বলেন,আইসিটি বিভাগের উদ্যোগে দেশব্যাপী ডিজিটাল লিটারেসি ও সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে, যেখানে সহযোগিতায় থাকছে টিএমজিবি। সংবাদকর্মীদের জন্য ডিজিটাল লিটারেসি ও সাইবার নিরাপত্তা বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান সময়ের তথ্য প্রযুক্তির বিপ্লব আমাদের জীবনকে এতোটাই প্রভাবিত করেছে যে, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ দৈনন্দিন জীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই তার প্রয়োগ ঘটেছে। এই সকল প্রযুক্তি ও তার ব্যবহার প্রতিদিনই উন্নত হচ্ছে। তাই এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তার বিষয়টিতে গুরুত্ব রাখতে হবে। আমরা প্রত্যাশা করি, তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রযাত্রায় এই উদ্যোগের মাধ্যমে সাংবাদিকরা নিজেদেরকে অনলাইনে নিরাপদ রাখার পাশাপাশি তাদের সংবাদের মাধ্যমে দেশের জনগণকে অনলাইনে নিরাপদ রাখতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারবে।
মুরসালিন হক জুনায়েদ বলেন, সংবাদকর্মীদের জন্য এমন আয়োজন করায় আইসিটি বিভাগকে ধন্যবাদ। আমি মনে করি, এমন আয়োজনের মাধ্যমে সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতা ছড়িয়ে দেয়া সম্ভব হবে।
মোহাম্মদ সাইফুল আলম খান বলেন, ইন্টারনেট এবং প্রযুক্তি আমাদের জন্য প্রতিদিনের একটি প্রয়োজনীয় বিষয়ে পরিণত হয়েছে। তাই ডিজিটাল শিক্ষা এবং সাইবার নিরাপত্তা বিষয়টি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন সকলের জন্য প্রয়োজন।
মো. খায়রুল আমীন বলেন, অর্থনৈতিক-সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ প্রযুক্তি ব্যবহারে ত্বরিত সুফল পাচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তির এই ক্রমবর্ধমান উন্নতি, প্রচার, প্রসার ও ব্যবহারের যুগে মানুষের কাছে বিভিন্ন ধরণের তথ্য এবং সেবা পৌছে দেয়ার সহজ মাধ্যম হচ্ছে ইন্টারনেট। এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং নিরাপদে ব্যবহার করা অতি জরুরী।
ডিজিটাল লিটারেসি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন নিরাপদ ইমেইল ও ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টার স্থাপন প্রকল্পের পরামর্শক জহিরুল ইসলাম খান। এই প্রশিক্ষণে অংশ নেয়ার মাধ্যমে গণমাধ্যমকর্মীরা সাইবার নিরাপত্তা, সাইবার বুলিং, গুজব, অনলাইন প্রাইভেসি, ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট ইত্যাদি বিষয়ে জ্ঞান অর্জনে সক্ষম হন এবং বাস্তব জীবনে এই জ্ঞানের প্রয়োগের মাধ্যমে ডিজিটাল জগতকে আরও নিরাপদ করে তুলতে পারবেন। প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী গণমাধ্যম কর্মীদের প্রশিক্ষণ শেষে ডিজিটাল লিটারেসি সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।