ডিজিটাল বৈষম্য কমাতে ‘সাউথ সাউথ অ্যান্ড ট্রায়াঙ্গুলার কো-অপারেশন’
ক.বি.ডেস্ক: দক্ষিণের দেশগুলোতে প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে ডিজিটাল বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে জাতিসংঘের প্রধান কার্যালয়ে ‘‘সাউথ সাউথ অ্যান্ড ট্রায়াঙ্গুলার কো-অপারেশন’’ জোরদারকরণ বিষয়ক একটি হাই-লেভেল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ‘সাউথ-সাউথ অ্যান্ড ট্রায়াঙ্গুলার কো-অপারেশন: লেভারেজিং ইনোভেশন অ্যান্ড কাটিং এজ টেকনোলজি’ এই শিরোনামে অনুষ্ঠানটি আজ শনিবার (১৫ জুলাই) আয়োজন করে বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। উদ্ভাবনী ও প্রযুক্তি সমাধানের মাধ্যমে কীভাবে দক্ষিণের দেশগুলোতে ডিজিটাল বৈষম্য দূর করা যায় এ বিষয়ে আলোচনা ও সমাধান বের করে আনা ছিল আয়োজনের মূল লক্ষ্য।
‘সাউথ সাউথ অ্যান্ড ট্রায়াঙ্গুলার কো-অপারেশন’ অনুষ্ঠানটির মাধ্যমে দক্ষিণের দেশগুলোতে প্রযুক্তি ব্যবহারে টেকসই উন্নয়নে কী কী চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে সে বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। এই দেশগুলোতে অন্তর্ভুক্তি ও টেকসই উন্নয়নে প্রযুক্তিখাতে কোন কোন পর্যায়ে সমস্যার মুখে রয়েছে এবং সমস্যার সমাধান নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
এ লক্ষ্যে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা, বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি, উন্নয়ন সংস্থা, আন্তর্জাতিক সংস্থা, সুশীল সমাজ, একাডেমিয়া এবং বেসরকারি খাতের বিজ্ঞজনরা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। এসময় অন্তর্ভুক্তিমূলক ডায়ালগ ও জ্ঞান বিনিময়, সমন্বয়ের মাধ্যমে ডিজিটাল বৈষম্য দূরীকরণে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেন আলোচকরা।
উচ্চ পর্যায়ের এই অধিবেশনে স্বাগত বক্ত রাখেন নিউইয়র্কে জাতিসংঘের বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ আব্দুল মুহিত। উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। ‘ই-কোয়ালিটি ফর ইনক্লুসিভ ইনোভেশন’এর উপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এটুআই’র পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী। সমাপনী বক্তব্য রাখেন আইসিটি সচিব মো. সামসুল আরেফিন।
‘সাউথ-সাউথ অ্যান্ড ট্রায়াঙ্গুলার কো-অপারেশন: লেভারেজিং ইনোভেশন অ্যান্ড কাটিং এজ টেকনোলজি’ শীর্ষক একটি প্যানেল আলোচনার আয়োজন করা হয়। ডিজিটাল বিভাজন কমাতে ই-কোয়ালিটি ডাটার ব্যবহার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান আলোচকরা। ই-কোয়ালিটি বাস্তবায়নে বৈশ্বিক সহযোগিতা ও অংশীদারিত্বমূলক সম্পর্কের বিকল্প নাই বলে উল্লেখ করা হয়।
বাংলাদেশের প্রযুক্তি-নির্ভর পাবলিক সার্ভিস উদ্ভাবন গ্লোবাল সাউথ-এ অগ্রগামী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। বৈশ্বিক সমৃদ্ধি এবং সুযোগ তৈরি হওয়ায়, বিশ্বের দক্ষিণের দেশগুলোতে আমদানিকারক থেকে রপ্তানিকারকের ভূমিকায় বিকশিত হওয়ার পাশাপাশি সক্রিয়ভাবে জ্ঞান ভাগাভাগিকরণ এবং প্রযুক্তিগত কারিগরি সহায়তা প্রদানে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। প্রযুক্তিগত ক্রমবর্ধমান অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ডিজিটাল অগ্রগতিকে কার্যকরভাবে সমর্থন করেছে বাংলাদেশ। জ্ঞান সহায়তা ও উপদেশ প্রদানের মাধ্যমে বিভিন্ন স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে ডিজিটাল বিভাজন দূর করার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে বাংলাদেশ।
উল্লেখযোগ্যভাবে, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ফিজিকে প্রযুক্তিনির্ভর ই-গভর্ন্যান্স সমাধান, ফিলিপাইনের বিএআরএমএম অঞ্চলে ডিজিটাল সেবা প্রদানকারী প্ল্যাটফর্ম ‘মাইগভ’ এর সহায়তা দিয়েছে বাংলাদেশ। সোমালিয়া ও জর্ডানে দক্ষতা এবং কর্মসংস্থানের ম্যাচমেকিং প্ল্যাটফর্ম ‘নাইস’ এবং তুরস্ক, সোমালিয়া এবং সাউথ সুদানে ই-কমার্স এগ্রিগেটর প্ল্যাটফর্ম ‘এক-শপ’ এর মাধ্যমে সহায়তা দিয়েছে বাংলাদেশ। অন্যান্য দেশেও এই সাফল্য ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আন্তঃদেশীয় মধ্যস্থতার ওপর ভিত্তি করে স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রযুক্তি-নির্ভর উৎকৃষ্ট চর্চাগুলো ছড়িয়ে দিতে আন্তর্জাতিক আইসিটি উদ্ভাবন (আই-থ্রি) -এর মধ্য দিয়ে এখন আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে বাংলাদেশ।