ডিআইইউ’র ‘শিল্প-শিক্ষায়তন সংযোগ উন্নয়ন’ বক্তৃতামালা

ক.বি.ডেস্ক: ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ডিআইইউ) ইনোভেশন অ্যান্ড এন্ট্রাপ্রিনিউরশীপ ডিপার্টমেন্ট এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইনোভেশন সেন্টারের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘শিল্প-শিক্ষায়তন সংযোগ উন্নয়ন’ বক্তৃতামালার দ্বিতীয় পর্বের দ্বিতীয় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন এনভয় লিগেসী ও শেলটেক গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী কুতুবুদ্দিন আহমেদ। ডিআইইউ’র উদ্যাগে শিল্প-শিক্ষায়তন বক্তৃতামালা প্রথম শুরু হয় ২০১৬ সালে এবং সেই থেকে প্রথম পর্বের আওতায় মোট ১৩ জন দেশি-বিদেশি বিশিষ্ট উদ্যোক্তা উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের বক্তব্য রাখেন।
গতকাল শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সাভারের বিরুলিয়ায় ড্যাফোডিল স্মার্ট সিটিতে ডিআইইউ’র আন্তর্জাতিক সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ডিআইইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আর কবির। সঞ্চালনা করেন ইনোভেশন অ্যান্এন্ট্রাপ্রিনিউরশীপ ডিপার্টমেন্ট বিভাগের প্রধান মো. কামরুজ্জামান। বক্তব্য রাখেন ডিআইইউ’র ট্রাস্টিবোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মাসুম ইকবাল।
প্রকৌশলী কুতুবুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘নানা সীমাবদ্ধতা ও প্রতিকূলতা মোকাবেলা করেও বাংলাদেশের পোষাক খাতের উদ্যোক্তারা দেশে তৈরী পোষাক উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক মানুষের জন্য নয়া কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে চলছেন, যা রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের তুলনায় অনেক বেশি। কিন্তু এরপরও তাদেরকে এমন কিছু সমস্যায় পড়তে হচ্ছে যেগুলোর সমাধানের এখতিয়ার তাদের হাতে নেই। বেসরকারি উদ্যোক্তারা কাজের জন্য নতুন পদ তৈরি করছেন। কিন্তু উক্ত পদ পূরণের জন্য উপযুক্ত ও দক্ষ লোকবল না পেয়ে তাদেরকে বড় ধরনের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। নিরূপায় হয়ে কেউ কেউ উচ্চ বেতন দিয়ে বিদেশ থেকেও লোকজন নিয়ে আসছেন এবং এতে করে পণ্য ও সেবার উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘কিন্তু বিষয়টির স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে তথা মানসম্মত স্নাতক তৈরির উদ্যোগ খুবই সীমিত। বেসরকারি খাতের প্রথম সারির ৮/১০টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যারা পাশ করে বের হচ্ছে, তাদের একটি বড় অংশ রাষ্ট্র, সমাজ ও ব্যক্তি সকলের জন্যই আশীর্বাদ, বাকীরা মানবসম্পদ না হয়ে উল্টো বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এ ব্যাপারে ডিআইইউ অগ্রনী ভুমিকা পালন করছে, তাদের ন্যায় অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কেন তা পারছে না, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) উচিৎ তা ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।’’
ড. মো. সবুর খান বলেন, ‘‘বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত তৈরী পোষাক শিল্পখাতে যে বিশাল অর্থনৈতিক অগ্রগতি হয়েছে তার জন্য শেলটেক গ্রুপরে চেয়ারম্যান প্রকৌশলী কুতুবুদ্দিন আহমেদ এর মতো মানুষ আমাদের দেশে সবসময়ই স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। আমরা সৌভাগ্যবান যে তাদের মতো মানুষেরা আমাদের অর্থনীতির নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং এখনও তাদের সেই ধারা অব্যহত রেখেছেন। আমি আশা করি, আমাদের শিক্ষার্থীরা তাদের কথা পড়বে, শুনবে এবং সেই অনুযায়ী তারাও এক সময় আমাদের অর্থনীতিতে অবদান রাখবে।’’
প্রফেসর ড. এম আর কবির বলেন, ‘‘আজকের এই অনুষ্ঠান থেকেই আমরা সবাই উপলব্ধি হলাম, ব্যবসা করার জন্য টাকার চাইতে বরং কত বেশি পরিমাণ মানসিক শক্তির প্রয়োজন হয়। বাংলাদেশের মধ্যে একমাত্র ডিআইইউতেই উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা বিভাগ রয়েছে, আশা করি আমাদের শিক্ষার্থীরা এই আয়োজন ও প্রকৌশলী কুতুবুদ্দিন আহমেদ এর দিক নির্দেশনা থেকে অনেক কিছুই অর্জন করেছে।’’
উল্লিখিত বক্তৃতামালার সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই ডিআইইউ সম্প্রতি ১৯৪৭-পূর্ব সময়ে জন্মগ্রহণকারী দেশের ১২ অগ্রণী বরেণ্য উদ্যোক্তাদেরকে নিয়ে ‘পথিকৃৎ উদ্যোক্তাদের জীবনসংগ্রাম’ শীর্ষক একটি গ্রন্থ প্রকাশ করে। ড. মো. সবুর খানের সম্পাদনায় প্রকাশিত গ্রন্থের দ্বিতীয় খন্ড শিগগিরই প্রকাশিত হবে। যেখানে ১৯৪৭-৭১ মধ্যবর্তী সময়ে জন্মগ্রহণকারী উদ্যোক্তাদের জীবনবৃত্তান্ত অন্তর্ভুক্ত হতে যাচ্ছে।