ডব্লিউএসআইএস পুরস্কার-২০২৪: বিশ্বমঞ্চে এখন বাংলাদেশের ‘শিক্ষক বাতায়ন’
ক.বি.ডেস্ক: আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আইসিটি খাতের সবোর্চ্চ স্বীকৃতি জাতিসংঘের ‘ওয়ার্ল্ড সামিট অন দ্য ইনফরমেশন সোসাইটি (ডব্লিউএসআইএস) পুরস্কার-২০২৪’ অর্জন করেছে এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) এর ‘শিক্ষক বাতায়ন’। ‘ক্যাপাসিটি বিল্ডিং’ ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে তাদের ক্ষমতায়নের জন্য তৈরি সর্ববৃহৎ অনলাইন প্ল্যাটফর্ম-শিক্ষক বাতায়ন (teachers.gov.bd)।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৩০ মে) সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘের আইসিটি সংক্রান্ত বিশেষায়িত সংস্থা আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) সদর দপ্তরে আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়। আইটিইউ’র পরিচালক (টেলিকমিউনিকেশন ডেভেলপমেন্ট ব্যুরো) ড. কসমাস লাকিসন যাভাযাভা-এর হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর জুনাইদ আহ্মেদ পলক এবং এটুআই’র যুগ্ম-প্রকল্প পরিচালক মোল্লা মিজানুর রহমান।
শিক্ষক বাতায়ন (teachers.gov.bd)
শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং এটুআই’র যৌথ উদ্যোগে ২০১৩ সালে চালু হওয়া ‘শিক্ষক বাতায়ন’ প্ল্যাটফর্মটি শিক্ষায় তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে শহরের মানসম্মত শিক্ষা উপকরণ পৌঁছে দিচ্ছে গ্রামের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে। এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে শিক্ষকগণ করোনাকালীন সময়ে ব্লেন্ডেড পদ্ধতিতে শিক্ষা ব্যবস্থা চলমান রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। শিক্ষকগণ দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে শ্রেণিকক্ষে ব্যবহার উপযোগী কনটেন্ট তৈরি করে আপলোড ও ডাউনলোড করতে পারছেন।
বৈষম্যহীন শিক্ষাব্যবস্থা ও আইসিটিতে দক্ষ শিক্ষক তৈরি করতে ‘শিক্ষক বাতায়ন’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এই প্ল্যাটফর্মে সাধারণ, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষার বিভিন্ন বিষয়ের অডিও, ভিডিও, অ্যানিমেশন, চিত্র, ডকুমেন্ট, প্রকাশনা ইত্যাদি কন্টেন্ট সংরক্ষিত রয়েছে। এইসব কনটেন্ট ব্যবহার করে শিক্ষকগণ মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমে শিক্ষা প্রদান করছেন। ‘শিক্ষক বাতায়ন’ এর নিবন্ধিত সদস্য ৬.৩৫ লক্ষেরও অধিক। কনটেন্টের সংখ্যা ৮ লক্ষ ১০ হাজারেরও অধিক, যা শিক্ষকরা পাঠদানে ব্যবহার করছেন।
এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই)
এটুআই জনগণের হাতের মুঠোয় ডিজিটাল সেবা প্রদানের লক্ষ্যে বাস্তবায়িত অসংখ্য উদ্ভাবনী উদ্যোগের মধ্যে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ বিগত বছরগুলোতে ডব্লিউএসআইএস পুরস্কার অর্জন করেছে। ২০১৪ সালে ডিজিটাল সেন্টার; ২০১৫ সালে জাতীয় তথ্য বাতায়ন; ২০১৬ সালে সেবা পদ্ধতি সহজিকরণ-এসপিএস, পরিবেশ অধিদপ্তরের অনলাইন ছাড়পত্র, শিক্ষক বাতায়ন ও কৃষকের জানালা;
২০১৭ সালে মাল্টিমিডিয়া টকিং বুক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিমেডিসিন প্রকল্প, নাগরিক সেবা উদ্ভাবনে সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার ও ই-নথি; ২০১৮ সালে মুক্তপাঠ ও পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম; ২০১৯ সালে শিক্ষক বাতায়ন ও মোবাইলের মাধ্যমে বয়স যাচাই ও বিবাহ নিবন্ধন প্রকল্প; ২০২০ সালে একশপ; দক্ষতা, কর্মসংস্থান ও এন্টারপ্রেনারশিপ বিষয়ক সমন্বিত ইন্টেলিজেন্স প্ল্যাটফর্ম এবং ২০২৩ সালে কোভিড-১৯ টেলিহেলথ সেন্টার।
এ ছাড়া্ও, এই বছর বাংলাদেশ থেকে বাংলাদেশ কমপিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) ‘সিকিউর ভিডিও কনফারেন্সিং সিস্টেম (বৈঠক)’ বিল্ডিং কনফিডেন্স অ্যান্ড সিকিউরিটি ইন ইউজ অব আইসিটিজ ক্যাটাগরিতে উইনার এবং ইউনিসেফ বাংলাদেশ এর ‘ওকে, দ্য পিরিয়ড ট্র্যাকার অ্যাপ ফর গার্লস বাই গার্লস’ ই-হেলথ ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে।