জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার পেলেন তাসলিমা মিজি
ক.বি.ডেস্ক: সাত দিনব্যাপী (১৯-২৫ মে) ১১তম জাতীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) মেলার উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে ‘জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার-২০২৩’ বিজয়ী ৭ জন মাইক্রো, ক্ষুদ্র, মাঝারি ও স্টার্টআপ উদ্যোক্তাকে ক্রেস্ট ও সম্মাননা সনদ প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ রবিবার (১৯ মে) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিআইসিসি’তে অনুষ্ঠিত এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত এ মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা, এফবিসিসিআই’র সভাপতি মাহবুবুল আলম এবং এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. মো. মাসুদুর রহমান বক্তব্য দেন।
জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার-২০২৩ পেলেন যারা
বর্ষসেরা নারী ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা স্বপ্না রাণী সেন, বর্ষসেরা পুরুষ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা মো. শাফাত কাদির, বর্ষসেরা পুরুষ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা মো. ওয়ালিউল্লাহ ভূঁইয়া, বর্ষসেরা ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তা তাসলিমা মিজি, বর্ষসেরা পুরুষ মাঝারি উদ্যোক্তা আশরাফ হোসেন মাসুদ, বর্ষসেরা মাঝারি নারী উদ্যোক্তা সীমা সাহা ও বর্ষসেরা স্টার্টআপ মদিনা আলী।
বর্ষসেরা ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তা তাসলিমা মিজি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতক পাশ করে তাসলিমা মিজি প্রথমে সাংবাদিক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। সাংবাদিকের দৌড়ঝাঁপের জীবন পেছনে ফেলে ২০০৮ সালে শুরু করেন আইসিটি পণ্য বিক্রির ব্যবসা। প্রতিষ্ঠানটির নাম হলো টেকম্যানিয়া। টেকম্যানিয়া চালাতে চালাতেই মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকল সৃজনশীল কাজের হাতছানি।
সেই হাতছানির নামই আজকের গুটিপা। নিজের উদ্যোগের হাত ধরে এগিয়ে চলাটা মোটেও সহজ ছিল না। এ দেশে নারীদের পথচলা মানেই যুদ্ধ, সেই যুদ্ধ মিজিকেও করতে হয়েছে। দৃঢ়তার সঙ্গে মোকাবিলা করেছেন এসব তিনি। বাংলাদেশ ছাড়াও কানাডা, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাজারেও ইতোমধ্যে সাড়া ফেলেছেন তিনি।
২০১৬ সালে যাত্রা করা লেদারিনা কোম্পানির মাধ্যমে চামড়াজাত পণ্যের ব্যবসায় আসেন তাসলিমা মিজি। গুটিপা নামের প্রতিষ্ঠানটির পথচলা শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালে অনলাইনে। এরপর গ্রাহকদের জন্য নিত্য-নতুন ডিজাইনের চামড়াজাত পণ্য তৈরি করে প্রতিষ্ঠিত করেন গুটিপা। পেশা পরিবর্তনের কারণে উদ্যোক্তা হিসেবে যাত্রা থেকেই বন্ধুর হয়ে ওঠে। লেদারিনার হাজারীবাগের কারখানাতে ১০০ জনেরও বেশি কর্মী কাজ করেন যাদের মধ্যে ৬০ শতাংশই নারী।
প্রতিষ্ঠানটি এক এক করে পেরিয়েছে আটটি বছর। ইতিমধ্যে ইউরোপের বেশ কয়েকটি ব্র্যান্ডকে নিয়মিত পণ্য জোগান দিয়ে চলেছে। আছে নিজস্ব ফ্যাক্টরি এবং ৫টি শোরুম। কর্মসংস্থান হয়েছে অনেক নারী-পুরুষের। তবে নারীর সংখ্যাই বেশি। প্রতিষ্ঠানটি নিয়মিত অংশ নেয় দেশ এবং দেশের বাইরের বিভিন্ন মেলায়। একই সঙ্গে তারা ওয়ার্ল্ড ট্রেড ফেয়ার অর্গানাইজেশনের সদস্যও।
উল্লেখ্য, এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত এ মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে এবং ২৫ মে পর্যন্ত চলবে। মেলায় তিন শতাধিক উদ্যোক্তা অংশ নিয়েছেন। এদের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ অংশগ্রহণকারী নারী উদ্যোক্তা। মেলায় ১০০ শতাংশ দেশীয় পণ্য প্রদর্শন করা হবে। এবারের মেলায় সাড়ে তিন শতাধিক কোম্পানি অংশগ্রহণ করছে।