কোটি টাকার ‘প্রেগনেন্সি মনিটরিং ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ’ প্রতিযোগিতা!
ক.বি.ডেস্ক: গর্ভবতী মা’দের গর্ভাবস্থা পর্যবেক্ষণ সেবার উন্নয়নে ও শিশুস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে তথ্য প্রদান এবং জরুরি প্রয়োজনে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের জন্য উদ্ভাবনী আইডিয়ার খোঁজে শুরু হয়েছে কোটি টাকার ‘‘প্রেগনেন্সি মনিটরিং ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০২২’’ প্রতিযোগিতা। দেশীয় উদ্ভাবকদেরকে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার জন্য আগামী ৮ অক্টোবর এর মধ্যে প্রস্তাবনা জমা দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। বিস্তারিত: challenge.gov.bd
প্রেগনেন্সি মনিটরিং ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০২২
এটু্আই, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর, আইসিডিডিআরবি এবং ওজিএসবি’র যৌথ উদ্যোগে এ উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে এমন একটি উদ্ভাবনী প্রস্তাবনাকে পুরস্কৃত করা হবে যার মাধ্যমে প্রতিটি নারীকে তার গর্ভধারণকালীন সময়ে জরুরি সেবা সম্পর্কিত সব তথ্য প্রদান এবং দৈনন্দিন প্রয়োজনে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। দ্বিমুখী যোগাযোগ ও ইকোসিস্টেম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে গর্ভবতী মা ও নবজাতকের পরিচর্যা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি ও সাধারণ মানুষের আচরণগত পরিবর্তনে কাজ করবে। এ ছাড়াও গর্ভবর্তী মায়ের গুরুত্বপূর্ণ শারিরীক তথ্য যেমন তাপমাত্রা, ঘুম, চলাফেরা, পালস ইত্যাদি সংরক্ষণ করবে।
প্রাথমিক যাচাই-বাছাই শেষে উদ্ভাবকদের কাছ থেকে পাওয়া উদ্ভাবনী প্রস্তাবনাগুলো থেকে ১০টি সেরা আইডিয়া প্রদানকারী উদ্ভাবকদের নিয়ে একটি বুটক্যাম্প করা হবে। বুটক্যাম্পে বিচারকদের সামনে উদ্ভাবকেরা তাদের উদ্ভাবনী আইডিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরার সুযোগ পাবেন। এর মধ্য থেকে সর্বোত্তম দুটি আইডিয়া প্রদানকারীকে পরবর্তী ধাপের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হবে। এর মধ্য থেকে বিজয়ী আইডিয়া প্রদানকারী/প্রতিষ্ঠানকে প্রতিনিয়ত মেনটরিং করার পাশাপাশি প্রস্তাবিত আইডিয়ার গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য সীড মানি হিসেবে ১ কোটি টাকা প্রদান করা হবে।
আজ বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) এ লক্ষ্যে প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও অনুশীলনের সমন্বয়ে একটি উদ্ভাবনী সমাধান দেশীয় উদ্ভাবকদের কাছ থেকে সংগ্রহের জন্য এই প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন অনলাইনে প্রধান অতিথি আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (চিকিতসা শিক্ষা অনুবিভাগ) নীতিশ চন্দ্র সরকার, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ) মো. সাইদুর রহমান, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাহান আরা বানু এবং নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সিদ্দিকা আক্তার।
এটুআই’র প্রকল্প পরিচালক ড.দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক ছিলেন এটুআই’র পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী এবং এটুআই ইনোভেশন ল্যাবের হেড অব টেকনোলজি ফারুক আহমেদ জুয়েল। সঞ্চালনায় ছিলেন এটুআইর ন্যাশনাল কনসালটেন্ট ডা. শবনম মোস্তারী। অনলাইনে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে এটুআই ইনোভেশন ফান্ডের প্রধান নাঈম আশরাফী, এটুআই, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর, আইসিডিডিআরবি, ওজিএসবি, স্বাস্থ্যখাতে জড়িত বিভিন্ন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ এবং সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ যুক্ত ছিলেন।
এন এম জিয়াউল আলম বলেন, মাতৃত্বকালীন, নবজাতক ও শিশুস্বাস্থ্যসেবা যত বেশি বিনিয়োগ করা সম্ভব হবে দেশের উন্নয়নে তত বেশি অবদান রাখবে। দেশের মাতৃত্বকালীন স্বাস্থ্যসেবা খাতের উন্নয়নে প্রযুক্তিগত ও প্রথাগত পদ্ধতিতে ইতোমধ্যে বেশ কিছু কাজ হয়েছে। এই চ্যালেঞ্জ ফান্ডের মাধ্যমে এমন একটি সিস্টেম তৈরি করা সম্ভব হবে, যাতে গর্ভবতী মহিলাদের প্রয়োজনে তাদের দোরগোড়ায় প্রয়োজনীয় সব পরামর্শ ও সম্পর্কিত সকল সেবা পৌঁছে দেওয়া যাবে।
ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, বিদ্যমান নাগরিক সমস্যার সমাধানের জন্য এটুআই নিয়মিতভাবে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে। গর্ভবতী মায়েদের গর্ভাবস্থার গুরুত্বপূর্ণ শারীরিক তথ্য যথাযথভাবে সংগ্রহ ও সংরক্ষণের জন্য একটি উপযুক্ত উদ্ভাবনী ডিজিটাল ট্র্যাকিং প্ল্যাটফর্ম নির্মাণ ও বাস্তবায়নের জন্য আজকের এই চ্যালেঞ্জ ফান্ড প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। টেকসই ও সমাজের প্রান্তিক পর্যায়ে বসবাসকারী মাতৃত্বকালীন স্বাস্থ্যগত সমস্যা সমাধানের প্রয়োজনে এসিস্টেমটি নির্মাণ ও বাস্তবায়ন করা গেলে দেশের মাতৃমৃত্যু হার আরও অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।
আনীর চৌধুরী বলেন, সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার কাছে মাতৃত্বকালীন, নবজাতক ও শিশুস্বাস্থ্য সম্পর্কিত প্রচুর ডাটা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এগুলো একটি জায়গায় এনে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে পারলে মাতৃত্ব ও শিশুস্বাস্থ্য খাতের ব্যাপক উন্নয়ন সম্ভব। এই প্রতিযোগিতা আমাদেরকে এমন একটি সমাধান খুঁজে পেতে সহায়তা করবে যেখানে স্বাস্থ্য খাতের বিভিন্ন সংস্থার কাছে সংরক্ষিত ডাটাগুলোকে একটি প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসা সম্ভব হবে। এ ছাড়া সম্ভাব্য মায়েদের সঙ্গে যোগাযোগ ও তাদের সচেতনতা বৃদ্ধিতে নিজেদের উদ্ভাবিত প্রযুক্তি ও ডিভাইস দিয়ে একটি নির্ভরযোগ্য, বাজারজাতকরণযোগ্য এবং সাশ্রয়ী সিস্টেম তৈরি করা যাবে।