কোটি টাকার ‘এআই ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০২৩’ চালু
ক.বি.ডেস্ক: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অফিশিয়াল প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করতে কোটি টাকার ‘এআই ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০২৩’ চালু করা হয়েছে। এ ছাড়াও মন্ত্রণালয় প্রাঙ্গনে একটি ইনোভেশন কর্নার উদ্বোধন করা হয়। উদ্ভাবনী আইডিয়া জমা দেয়ার শেষ সময় আগামী ১৯ এপ্রিল। এই প্রতিযোগিতা সম্পর্কে বিস্তারিত: www.challenge.gov.bd
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ম্যানুয়াল পদ্ধতিটি ত্রুটি এবং অসঙ্গতি প্রবণ, যা তথ্যের ভুল ব্যাখ্যা দিতে পারে এবং বিদেশী নীতির সিদ্ধান্তগুলো প্রভাবিত করতে পারে। এসমস্যার উদ্ভাবনী সমাধানের খোঁজে এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে উদ্ভাবিত পদ্ধতি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রয়োজন ও চাহিদা অনুযায়ী কাস্টমাইজড সমাধান তৈরি করে দেবে।
গতকাল রবিবার (১৯ মার্চ) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) এর যৌথ আয়োজনে কোটি টাকার ‘এআই ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০২৩’ প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। এসময় বিশেষ অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, আইসিটি সচিব মো. সামসুল আরেফিন, মেট্রোনিকের সাবেক চেয়ারম্যান ওমর ইশরাক এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশ’র আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার।
মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ভবিষ্যৎ নীতি নির্ধারণে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ডাটাভিত্তিক বিশ্লেষণী ব্যবস্থা এবং ডাটা ভিজ্যুয়ালাইজেশন সিস্টেমের প্রয়োজনীয়তা বাড়বে। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে ডাটাভিত্তিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে যে কোন সংকট যেমন কোভিড কিংবা রাশিয়া-ইউক্রেনের মত সংঘাতে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়ে সদ্য স্থাপিত নিউরাল নেটওয়ার্কটি প্রয়োজনীয় ধারণা দিতে সক্ষম হবে। তিনি স্মার্ট সিটিজেন তৈরিতে দেশীয় সম্পদ ব্যবহার এবং দক্ষতার সাথে সৃজনশীল সমাধান উদ্ভাবন এবং সাশ্রয়ীকরণের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, জনসেবা প্রদানের লক্ষ্যে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারের ওপর জোর দেন। ইনোভেশন ল্যাব এবং এআই চ্যালেঞ্জ ফান্ড পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইসিটি সক্ষমতাকে শক্তিশালী করবে এবং ভবিষ্যত বিশ্বের প্রযুক্তি-সক্ষমতার সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মো. সামসুল আরেফিন বলেন, কৃত্রিম নিউরাল নেটওয়ার্ক আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে ডাটাভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদম ব্যবহার করতে পারলে ভবিষ্যতে কূটনৈতিক ডাটা বিশ্লেষণে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে যাবে। বিশ্বব্যাপী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন মিশনের সঙ্গে যোগাযোগ প্রক্রিয়ায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহার করা গেলে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হবে এবং জাতীয় স্বার্থের ক্ষেত্রে বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা আরও সহজ হবে।
প্রতিযোগিতা সম্পর্কে এটুআই’র পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী বলেন, প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে দেশের বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এবিষয়ে উদ্ভাবনের সঙ্গে থাকার সুযোগ পাবেন। যেখান থেকে অনেকগুলো উদ্ভাবনী আইডিয়া বেড়িয়ে আসবে বলে, যা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিশন নথির কার্যক্রম সহজ করতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। পাশাপাশি, শুধু একটা প্রজেক্ট প্রকিউমেন্ট এর ওপর নির্ভর না করে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিভিন্ন পর্যায়ের বুটক্যাম্প, গ্রুমিং সেশন ও গবেষণার ফলে বেশকিছু গতিশীল ও ব্যবহারবান্ধব সমাধান তৈরি হবে এবং তা কর্তৃপক্ষের কাজ সহজ করতে অবদান রাখবে বলে আশা রাখি।
অনুষ্ঠানে ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ-এর প্রক্রিয়া সম্পর্কে উপস্থাপনা প্রদান করেন এটুআই ইনোভেশন ফান্ড এক্সপার্ট নাঈম আশরাফী এবং কৃত্রিম নিউরাল নেটওয়ার্ক (এএনএন) এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্ভাব্য সুবিধাগুলোর ওপর উপস্থাপনা প্রদান করেন এটুআই’র একশপের টেকনোলোজি প্রধান সোহেল রানা। সঞ্চালনা করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (আইসিটি) ড. সৈয়দ মুনতাসির মামুন।