কৃষকদের জন্য ‘স্মার্ট কৃষি কার্ড’
বাংলাদেশের ১ কোটি ৬২ লাখ কৃষককে ‘‘স্মার্ট কৃষি কার্ড’’ দিতে যাচ্ছে সরকার। সরকারের কাছ থেকে প্রণোদনা নেয়ার সময় কৃষককে এই কার্ড দেখাতে হবে। একই সঙ্গে কৃষিতে সরকারের সার, বীজসহ যত ধরনের সুবিধা আছে স্মার্ট কার্ড দেখিয়ে সেসব সুবিধা নিতে হবে কৃষকদের। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কৃষকদের জন্য এ কার্ড তৈরি করবে।
প্রাথমিক পর্যায়ে প্রায় ৫ কোটি কৃষকের মধ্যে ১ কোটি ৬২ লাখ কৃষকের ডিজিটাল প্রোফাইল তৈরি এবং স্মার্ট কৃষি কার্ড দেয়া হবে। কৃষকদের প্রণোদনা দিতে গেলে ব্যাংকে নানা ধরনের ঝামেলা হয়। এ ছাড়া ১০ টাকার কৃষি কার্ড অনেক কৃষক হারিয়ে ফেলেছে। এসব কারণে কোটি কৃষককে প্রাথমিকভাবে স্মার্ট কৃষি কার্ড দেয়া হবে। এর পরে পর্যায়ক্রমে প্রকল্পের আওতায় আসবেন দেশের সব কৃষক। এর মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে ফসলের মাঠ ডিজিটালি মনিটরিং করা হবে।
সম্প্রতি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। স্মার্ট কৃষি কার্ড ও ডিজিটাল কৃষি (পাইলট) শিরোনামের প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ হবে ১০৭ কোটি টাকা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কৃষকদের জন্য এই কার্ড তৈরি করবে। চলতি বছরের মধ্যেই স্মার্ট কার্ড তৈরির কাজ শুরু হবে। ২০২৪ সালের মধ্যেই প্রকল্পটির কাজ শেষ করতে চায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
প্রতি কার্ড তৈরিতে খরচ হবে ৪৫ টাকা। জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে কৃষককে কৃষি সেবা দিতে গেলে এনআইডি কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। একই সঙ্গে একটি সেবা নিতে প্রতিবার ১ টাকা ১৫ পয়সা করে দিতে হবে। এতে জটিলতা বাড়বে। কৃষকের স্বার্থে কৃষকদের স্মার্ট কার্ড দেয়ার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়সহ ১৪টি কৃষি অঞ্চলের ৯টি জেলা গোপালগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, টাঙ্গাইল, বরিশাল, যশোর, দিনাজপুর, রাজশাহী, বান্দরবান ও ময়মনসিংহের সব উপজেলা এবং মেট্রোপলিটন এলাকার কৃষকদের এ কার্ড দেয়া হবে। পরবর্তী সময় অন্য অঞ্চলের কৃষকদের এ সেবার আওতায় আনা হবে।
কৃষকের জমি কতটুকু, কত টাকা ঋণ ও প্রণোদনা পেতে পারেন সব তথ্যই থাকবে এখানে। মাঠ পর্যায়ের কৃষি অফিসার এসব তথ্য সংগ্রহ করে ইনপুট দেবেন। কৃষক চলতি বছরে কী ফসল ফলাবেন, পরবর্তী বছরে কী ফসল ফলানো উচিত সব তথ্যই থাকবে এখানে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ডিজিটাল কৃষি প্রোফাইল তৈরি, স্মার্ট কৃষি কার্ড বিতরণ, ডিজিটাল কৃষিতথ্য বিশ্লেষণ ও তথ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনা সহজ হবে। এর মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের সাহায্যে কৃষকের কৃষি উৎপাদনের সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনা গ্রহণ সহজ হবে। স্মার্ট কৃষি কার্ড ব্যবহার করে প্রত্যেক কৃষকের জন্য এলাকা ও চাহিদাভিত্তিক কৃষিসেবা দেয়া হবে। এ ছাড়া ডিজিটাল বিশ্লেষণ ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কৃষিতথ্য নিশ্চিত করা হবে।