উন্নয়নশীল দেশের জন্য কারিগরি শিক্ষার উন্নয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি
ক.বি.ডেস্ক: সম্প্রতি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ডিআইইউ) ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইনোভেশন সেন্টারের (আইআইসি) উদ্যোগে ‘জাপানে ক্যারিয়ার গড়ার লক্ষ্যে কারিগরি শিক্ষার গুণমান বৃদ্ধি’ শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে বক্তারা বলেন, আমাদের জন্য আর্থিক সহযোগিতার তেমন কোনো প্রয়োজন নেই। আমাদের জন্য প্রয়োজন হচ্ছে কারিগরি ও প্রযুক্তিক সহযোগিতা। জাপানের চাকরির বাজারে ভালো সুযোগের জন্য জাপানি ভাষা শিক্ষণের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ব্যবধান কমাতে হবে, দক্ষতার ঘাটতি দূর করার ওপর জোর দিতে হবে এবং কর্মপরিবেশের দক্ষতা প্রশিক্ষণ, সংস্কৃতি, শিষ্টাচার এবং মনোভাব প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।
গত বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) ঢাকার বিরুলিয়াস্থ ডিআইইউ ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত ‘জাপানে ক্যারিয়ার গড়ার লক্ষ্যে কারিগরি শিক্ষার গুণমান বৃদ্ধি’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. খায়রুল আলম এবং জাপান এক্সটারনাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের (জেটরো) কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ইউজি আন্দো।
সেমিনারে আলোচক ছিলেন জাইকা’র চিফ রিপ্রেজেনটেটিভ ইচিগুচি তোমোহাইড এবং জেবিসিসিআই’র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুগাওয়ারা মানাবু। বক্তব্য রাখেন ডিআইইউ ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড্যাফোডিল ফ্যামিলির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ নুরুজ্জামান। সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এম লুৎফর রহমান। উপস্থিত ছিলেন ডিআইইউর বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. সৈয়দ আক্তার হোসেন এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইনোভেশন সেন্টারের প্রকল্প পরিচালক আবু তাহের খান।
রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি বলেন, জাপান বাংলাদেশের সম্পর্ক বন্ধুত্ব ও আস্থার। সে সম্পর্কের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ও জাপান আগামী বছরগুলোতে পারস্পরিক সহযোগিতার সুস্পষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে অংশীদারীত্বকে দৃঢ় করার জন্য বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নিয়ে একসংগে কাজ করে এগিয়ে যাবে। একটি উন্নয়নশীল দেশের জন্য কারিগরি শিক্ষার উন্নয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জাইকা, জেট্রোসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থার মাধ্যমে জাপান বাংলাদেশর অর্থনৈতিক ও কারিগরি উন্নয়নে সহযোগিতা অব্যাহত রেখে চলেছে এবং এ সহযোগিতার ধারা আগামী দিনগুলোতে শুধু অব্যাহতই থাকবে না, বরং সহযোগিতার নতুন নতুন ক্ষেত্র এর সঙ্গে যুক্ত হবে। এ সেমিনার উভয় দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক বিনিময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
ড. মো. সবুর খান বলেন, বাংলাদেশের মানুষের প্রধান সমস্যা দক্ষতার ক্ষেত্রে ব্যাপক ঘাটতি। তাই বাংলাদেশের মানুষের দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে ব্যাপকভিত্তিক উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। আমাদের জন্য আর্থিক সহযোগিতার তেমন কোনো প্রয়োজন নেই। আমাদের জন্য প্রয়োজন হচ্ছে কারিগরি ও প্রযুক্তিক সহযোগিতা। জাপানী দাতা গোষ্ঠী ও সরকারের বিভিন্ন সংস্থাগুলোকে প্রধানত কারিগরি ও প্রযুক্তিক সহায়তা নিয়ে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদাল্যয় ও ড্যাফোডিল পরিবারের সহযোগিতায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
ড. মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, জাপানের চাকরির বাজারে ভালো সুযোগের জন্য জাপানি ভাষা শিক্ষণের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ব্যবধান কমাতে হবে, দক্ষতার ঘাটতি দূর করার ওপর জোর দিতে হবে এবং কর্মপরিবেশের দক্ষতা প্রশিক্ষণ, সংস্কৃতি, শিষ্টাচার এবং মনোভাব প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। জাপান স্টাডি সেন্টার স্থাপন, ছাত্র-শিক্ষক বিনিময় এবং গতিশীলতা প্রোগ্রাম এবং যৌথ গবেষণা ও প্রকাশনা চালু করার মাধ্যমে এ ব্যবধান কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। ড্যাফোডিল পরিবার ইতোমধ্যে এসব বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে এবং ২৫টি জাপানি অংশীদারী প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় এক হাজারের বেশি যুবককে জাপানে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছে।