উদ্দমী ও অভিজ্ঞদের সমন্বয়ে ‘সিনার্জি স্কোয়াড’
ক.বি.ডেস্ক: ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দেশের সফটওয়্যার খাতের বাণিজ্যিক সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়ার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) এর ২০২২-২০২৩ মেয়াদের দ্বিবার্ষিক কার্যনির্বাহী পরিষদের (ইসি) নির্বাচন। বেসিসের ১৪তম ইসি নির্বাচনে ১০ সদস্যের প্যানেলে অংশ নিতে যাচ্ছে ‘‘সিনার্জি স্কোয়াড’’। প্যানেলটির নেতৃত্বে আছেন বেসিসের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য এবং দুই মেয়াদের প্রেসিডেন্ট হাবিবুল্লাহ এন করিম।
‘সবকিছুর কেন্দ্রে সদস্যরা, একসঙ্গে গর্জাবো আমরা’ এ প্রত্যয় নিয়ে দেশে ও বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের আইসিটি সক্ষমতাকে ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে ঐক্যবদ্ধ প্যানেলটি। সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় নেতৃত্ব দেয়ার পথ সুগম করার প্রত্যয়েও একতাবদ্ধ সিনার্জি স্কোয়াড।
সিনার্জি স্কোয়াড প্যানেলে সাধারণ সদস্য ক্যাটাগরিতে আছেন টেকনোহেভেন কোম্পানি লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী হাবিবুল্লাহ্ এন করিম, স্পেকট্রাম সফটওয়্যার অ্যান্ড কনসাল্টিং (প্রাইভেট) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুশফিকুর রহমান, অ্যাডভান্সড ইআরপি (বিডি) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল, ড্রিম৭১ বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশাদ কবির, জেডএস সলিউশন্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দা খাদিজা দীনা, দি ডাটাবিজ সফটওয়্যার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশেদ কামাল, অ্যানালাইজেন বাংলাদেশ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মুহম্মদ রিসালাত সিদ্দীক ও বন্ডস্টাইন টেকনোলজিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মীর শাহরুখ ইসলাম। এ ছাড়াও অ্যাসোসিয়েট সদস্য ক্যাটাগরিতে আছেন ইওয়াইহোস্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমরান হোসেন ও এফিলিয়েট সদস্য ক্যাটাগরিতে আছেন মাইহেলথ বিডি ডটকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মঞ্জুরুল হক।
হাবিবুল্লাহ এন করিম:
বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের একেবারে শুরুর দিকের উদ্যোক্তা হাবিবুল্লাহ এন করিম। তথ্যপ্রযুক্তি খাতের যাত্রার শুরু থেকেই এই খাতের জন্যে একটি সংগঠন গড়ে তোলার অনুধাবন থেকেই বেসিস প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখেন। সংগঠনটির দুইবারের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশের জাতীয় তথ্যপ্রযুক্তি নীতিমালা তৈরিতেও কাজ করেছেন তিনি। তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সামগ্রিক উন্নয়নে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অ্যাডভোকেসি, গবেষণা এবং তথ্যপ্রযুক্তি ইন্ডাস্ট্রি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রির মাঝে সমন্বয় সাধনে কাজ করে চলেছেন তিনি।
হাবিবুল্লাহ এন করিম ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠা করেন টেকনোহ্যাভেন কোম্পানি লিমিটেড এবং প্রতিষ্ঠানটির সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। ১৯৯৭ সালে বেসিস প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে কাজ ২০০১-২০০৩ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি টাস্কফোর্সের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ২০০২-০৩ এবং ২০০৮-০৯ মেয়াদে তিনি দুইবার বেসিস এর সভাপতি নির্বাচিত হন।
২০০৮ সালে ন্যাশনাল আইসিটি পলিসি রিভিউ কমিটির আহবায়কের ভূমিকা পালন করেন হাবিবুল্লাহ এন করিম। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ আইসিটি পলিসি প্রণয়নে প্রিন্সিপাল অথর হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন তিনি এবং অদ্যাবধি এই দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। তিনি বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অফ ম্যানেজমেন্টের গভর্নিং বোর্ডের সদস্য, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের ডিজিটাল ট্রান্সফর্মেশন কমিটির সদস্য। এ ছাড়াও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলওর সহযোগী বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের ভাইস-প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। আইসিটি ডিভিশনের স্টার্টআপ ভেঞ্চার ফান্ডের পারফর্মেন্স মনিটরিং এবং সিলেকশন কমিটির চেয়ারম্যান এবং কো-চেয়ারের দায়িত্ব পালন করছেন। হাবিবুল্লাহ এন করিম ১৯৮৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ ব্যাচেলর ডিগ্রী সমাপ্ত করেন।
মুশফিকুর রহমান:
বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের একজন নেতৃস্থানীয় উদ্যোক্তা মুশফিকুর রহমানের উদ্যোক্তা হিসেবে রয়েছে ২৬ বছরেরও বেশি অভিজ্ঞতা। স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে স্ট্র্যাটেজিক ফাইন্যান্স, মার্কেটিং, ইনোভেশন এবং গ্রোথ ম্যানেজমেন্ট নিয়ে কাজ করে থাকেন মুশফিকুর রহমান। তাঁর প্রতিষ্ঠিত স্পেকট্রাম ইঞ্জিনিয়ারিং কনসোর্টিয়াম লিমিটেড বাংলাদেশের অন্যতম নেতৃস্থানীয় তথ্যপ্রযুক্তি এবং কমিউনিকেশন টেকনোলজি সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে ৯০০ এর অধিক ক্লায়েন্টকে সেবা প্রদান করে আসছে।
বাংলাদেশের আইটি অবকাঠামো তৈরি এবং সফটওয়্যার সলিউশন প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে স্পেকট্রাম। তাঁর নেতৃত্বে স্পেকট্রাম বাংলাদেশের ন্যাশনাল ডাটা সেন্টার, দেশজুড়ে কাস্টমস সেবা অটোমেশন, ন্যাশওয়াইড বাংলাদেশ এডুকেশন নেটওয়ার্ক, সাবমেরিন কেবল ইত্যাদি। এছাড়াও তাঁর প্রতিষ্ঠান ব্যাংক এবং টেলিকম অপারেটর কোম্পানিসমূহের আইটি অবকাঠামো তৈরি এবং সফটওয়্যার প্রস্তুত, আইসিএক্স এবং আইজিডাব্লিউ অপারেটরদের জন্যে ইন্টারকানেক্ট বিলিং সলিউশন এবং এজেন্ট ব্যাংকিং সলিউশন তৈরিতে দারুণ সব মাইলফলক তৈরি করে।
ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বপালনকালীন সময়ে তিনি বেসিস সফটএক্সপো ২০১৯ ও ২০২১ সফলভাবে আয়োজন করেন। সফটএক্সপো ২০২০ আয়োজনে তিনি আহবায়কের দায়িত্ব পালন করেন।
মুশফিকুর রহমান বুয়েট থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ বিএসসি সম্পন্ন করেন। ক্যাডেট কলেজ ক্লাব এবং বুয়েট গ্র্যাজুয়েট ক্লাবের তিনি আজীবন সদস্য। বর্তমানে তিনি বুয়েট ৮৮ ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল:
মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল একজন সিরিয়াল টেকনোপ্রেনার। টেকনোলজি, ফাইন্যান্স এবং ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে সফটওয়্যার আর্টিটেক্ট, কনসালটেন্ট, মেন্টর এবং উদ্যোক্তা হিসেবে তাঁর রয়েছে ২ যুগেরও বেশি অভিজ্ঞতা। বাংলাদেশের আইসিটি ইন্ডাস্ট্রির একজন পাইওনীয়ার হিসেবে এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স সলিউশন্সকে জনপ্রিয় করার পেছনে রয়েছে তাঁর অসামান্য অবদান। বিদেশে পড়াশোনা শেষে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ নিয়েই দেশে ফিরে প্রতিষ্ঠা করেন এডভান্সড ইআরপি। বিভিন্ন শিল্পে অটোমেশনের গুরুত্ব বোঝানোর মাধ্যমে বাংলাদেশে ইআরপি সলিউশন্সের জনপ্রিয়তা তৈরিতে ভূমিকা রাখেন তিনি ও তাঁর সমসাময়িক উদ্যোক্তাগণ। অদ্যাবধি আইসিটি ইন্ডাস্ট্রির উন্নয়ন এবং এর ইকোসিস্টেম প্রতিষ্ঠায় নিরন্তর কাজ করে চলেছেন তিনি। বর্তমানে তাঁর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, মানবসম্পদ উন্নয়ন, সিস্টেম ইন্টিগ্রেশন, বিজনেস ইন্টিলিজেন্স এবং ই-কমার্স খাতে কাজ করে চলেছে।
মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল ২০১৪-১৬ মেয়াদে বেসিস নির্বাহী কমিটির এর জয়েন্ট সেক্রেটারি জেনারেল এবং ২০১৮-২০ মেয়াদে নির্বাহী কমিটির পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আইটি কোম্পানিসমূহের জন্যে অ্যাকসেস টু ফাইন্যান্স ইনিশিয়েটিভ এবং বেসিস-আইডিএলসি লোন প্রোডাক্ট বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখেন। এছাড়াও লোকাল মার্কেট স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি বেসিস এবং এসএমই ফাউন্ডেশনের মধ্যে সাস ইনিশিয়েটিভ বাস্তবায়নে নেতৃত্ব প্রদান করনে।
রাশাদ কবির:
বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে শীর্ষস্থানীয় তরুণ উদ্যোক্তাদের একজন রাশাদ কবির। বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন এবং অগ্রগতিতে তাঁর রয়েছে অসামান্য অবদান। মাত্র ১৮ বছর বয়সে রাশাদ কবির তাঁর ক্যারিয়ার শুরু করেন বিসিএমসি ফাউন্ডেশন লিমিটেডে পরিচালক যোগদানের মাধ্যমে। ২২ বছর বয়সে রাশাদ তাঁর নিজ প্রতিষ্ঠান ড্রিম৭১ বাংলাদেশ লিমিটেড প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে একটি শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান।
বাংলাদেশে শিক্ষামূলক গেম তৈরিতে তিনি একজন পাইওনীয়ার। অ্যাকসেস টু ইনফর্মেশন (এটুআই) এর সঙ্গে যৌথ প্রয়াসে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণীর বিজ্ঞান বইয়ের ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন গেমস তৈরি করেন। ২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো সম্পূর্ণ বাংলা কন্টেন্ট নির্ভর ক্রিকেট ভিত্তিক অ্যাপ তৈরি করেন। সেলস অটোমেশন ট্যুল তৈরির লক্ষ্যে ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠা করেন পকেট সেলস ৭১। আফ্রিকার বাজারে ড্রিম৭১ এর পণ্যের বিপণন সুবিধার্থে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন এইএসডি ড্রিম৭১ লিমিটেড যা বাংলাদেশ, যুক্তরাজ্য এবং ক্যামেরুনে নিবন্ধিত একটি প্রতিষ্ঠান। রাশাদ খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইলেক্ট্রিক্যাল এবং ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং এ স্নাতক সম্পন্ন করেন।
রাশেদ কামাল:
১৯৯৮ সালে বিজনেস এবং সিস্টেম অ্যানালিস্ট হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করে বর্তমানে দুইটি স্বনামধন্য ও সফল প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা রাশেদ কামাল। তাঁর প্রতিষ্ঠিত দ্য ডাটাবিজ সফটওয়্যার লিমিটেড ইতোমধ্যেই স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের জন্যে ২০০০ এর অধিক প্রজেক্ট সাফল্যের সঙ্গে সম্পন্ন করেছে। তাঁর প্রতিষ্ঠিত সি নিউজ তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নেতৃস্থানীয় আইসিটি ম্যাগাজিন হিসেবে স্বীকৃত।
উদ্যোক্তা হিসেবে ২০ বছরের অধিক সময়ের ক্যারিয়ারে তিনি নেদারল্যান্ডস, সিঙ্গাপুর এবং জাপান থেকে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। তিনি জাতিসংঘ এবং বিশ্ববাণিজ্য সংস্থা ডব্লিউটিও কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত আইটিসি, জেনেভা এর স্বীকৃত ইন্টারন্যাশনাল কনসালটেন্ট। এছাড়াও তিনি বিআইটিএম এবং নেদারল্যান্ডস সরকারের সিবিআই এর একজন সার্টিফাইড ট্রেইনার।
রাশেদ কামাল আইআইটি, ডিইউ থেকে মাস্টার্স এবং আইবিএ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি এবং মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল থেকে মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন তিনি।
সৈয়দা খাদিজা দিনা:
ব্যবসা পরিচালনায় বহুধা গুণসম্পন্ন একজন উদ্যোক্তা সৈয়দা খাদিজা দিনা। ব্যবসায় সম্প্রসারণ, পার্টনারশিপ প্রতিষ্ঠা, কর্মী ব্যবস্থাপনা আর দীর্ঘমেয়াদি কৌশল বাস্তবায়নে অসামান্য দক্ষতা রয়েছে তাঁর। সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট এবং অ্যাকাউন্টিং আউটসোর্সিং বিপিও প্রতিষ্ঠায় তাঁর নেতৃত্বগুণের কল্যাণে জেড এস সল্যুশন্স দেশের নেতৃস্থানীয় একটি প্রতিষ্ঠান।
সৈয়দা খাদিজা দিনার প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান দেশের শীর্ষস্থানীয় টেলিকম সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান রবি আজিয়াটার সঙ্গে যৌথভাবে টেলিহেলথ সার্ভিস- ডিজিকিউর প্রতিষ্ঠা করেন। মোবাইল আর্থিক সেবা দানে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ফিনটেক লিমিটেডের সাথে তৈরি করেন উপায়।
ব্যবসায় কৌশলের অংশ হিসেবে কোম্পানি এক্যুইজিশনেও রয়েছে তাঁর অসামান্য দক্ষতা ও দূরদর্শিতা। সমন্বয় সাধন আর অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠায় তাঁর দক্ষতা তাঁর সাফল্যের মূলমন্ত্র। বাংলাদেশে অ্যাকাউন্টিং বিপিও প্রতিষ্ঠায় অগ্রগ্রামীর ভূমিকা পালন করেছেন দিনা। বিপিও রফতানিতে বাংলাদেশের নেতৃস্থানীয় নারী উদ্যোক্তা তিনি। তাঁর কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন বেসিস উইমেন ফোরাম অ্যাওয়ার্ড।
মুহম্মদ রিসালাত সিদ্দীক:
মুহম্মদ রিসালাত সিদ্দীক ঢাকার সেইন্ট যোসেফ স্কুলে এবং মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ থেকে স্কুল এবং কলেজ পর্যায়ের পড়ালেখা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ থেকে বিবিএ সম্পন্ন করে পারিবারিক বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থাকা স্বত্তেও হাতে কলমে কাজ শিখতে এবং বাজারের বাস্তবতা বুঝতে ইউনিলিভারের মতো একটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরে ব্র্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ও মার্কেটিং নিয়ে কাজ করেন ২০০৭ সাল থেকে ২০১৪ এর মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত।
বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ভিত মজবুত করার লক্ষ্যে তিনি দেশে বিদেশে বাংলাদেশের আইটি এবং আইটিইএস ইন্ডাস্ট্রিকে ব্র্যান্ডিং ও মার্কেটিং করতে, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও মেশিন লার্নিংয়ের মত চতুর্থ শিল্প বিপ্লব নির্ভর ব্যবহার জন্য বাংলাদেশে রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট ও মার্কেট ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কাজ করতে, এবং ডিজিটাল মার্কেটিং, ডিজিটাল কমার্স, ওটিটি ও কন্টেন্ট মনেটাইজেশন নিয়ে পলিসি অ্যাডভোকেসিতে অব্যাহত ভাবে কাজ করে যেতে চান।
মীর শাহরুখ ইসলাম:
তথ্যপ্রযুক্তি খাতের একজন উদ্যোক্তা হিসেবে শাহরুক সবসময়েই অগ্রগামীর ভূমিকায় থাকতে পছন্দ করেন। পুরো দেশ যখন চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের জন্যে পরিকল্পনা প্রণয়ন করছে, শাহরুখ তাঁদের দলে যারা ইতোমধ্যেই সে লক্ষ্যে কাজ এগিয়ে নিয়ে চলেছেন। ২০১৯ সালে শাহরুখ তাঁর উদ্ভাবনের স্বীকৃতিস্বরূপ অ্যাপিকটা অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছেন, এছাড়াও জিতেছেন ন্যাশনাল আইসিটি পুরস্কার জয়ের সম্মাননা।
ন্যাশনাল আইসিটি পুরস্কার জেতা শাহরুখ ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের একজন গ্লোবাল শেপার এবং ২০২১-২২ মেয়াদে ঢাকা হাব-এর কিউরিটেরর নির্বাচিত হন। এ ছাড়াও তিনি বিশ্বব্যাংকের টেক-এনাবলড সিটিজেন সার্ভিস অটোমেশন প্রকল্পে পরমার্শকের দায়িত্ব পালন করেন। শাহরুখ ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি থেকে ইলেক্ট্রিক্যাল এবং ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং এ ব্যাচেলর ডিগ্রী সম্পন্ন করেন। ২০২১ সালে তিনি বিশ্বখ্যাত স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বছর মেয়াদী সীড ট্রান্সফর্মেশন প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের জন্যে নির্বাচিত হন।
ইমরান হোসেন:
ক্লাউড সার্ভিস বিজনেসে, ডোমেইন নেম সিস্টেম এবং ইন্টারনেট গভার্নেন্স নীতিমালা প্রস্তুতে ইমরান হোসেন এর পরিচয় দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিশ্বমঞ্চে। ২০১০ সাল থেকে কাজ করছেন ডোমেইন নেম নিবন্ধন, ক্লাউড হোস্টিং, সাইবার সিকিউরিটি এবং নিরাপদ ইন্টারনেট জগত তৈরিতে স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক কমিউনিটি নিয়ে কাজ করে চলেছেন। ইমরানের পরিচিতি ক্লাউড সিস্টেম তৈরি, ডিএনএস সিস্টেম, ক্লাউড এবং ডিএনএসের সাইবার সিকিউরিটি, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক টেক কমিউনিটিদের নিয়ে অ্যাক্টিভিজম, ইন্টারনেট ডেভেলপমেন্ট পলিসি তৈরিতে কাজ করা এবং একজন উদ্যোক্তা হিসেবে।
তার প্রতিষ্ঠা করা ইওয়াইহোস্ট লিমিটেড বর্তমানে দশ হাজারের অধিক ডোমেইন ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত। ইমরানের নেতৃত্বে আইক্যানের বিজনেস কন্সটিটিউয়েন্সিতে ভোটদানের ক্ষমতা এবং এপিটিএলডি সদস্যপদ লাভ করে ইওয়াইহোস্ট। সি-প্যানেল কর্তৃক স্বীকৃত সেরা ৩০ পার্টনারের তালিকায় রয়েছে। ইমরান হোসেন একজন আইক্যান ফেলো এবং তিনি আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ থেকে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এবং কম্পিউটার সায়েন্সে ব্যাচেলর ডিগ্রী সমাপ্ত করেছেন।
মো. মঞ্জুরুল হক:
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে প্রযুক্তি এবং অটোমেশনের ব্যবহার প্রচলনে কাজ করে চলেছেন মো. মঞ্জুরুল হক। এই লক্ষ্যে ২০০৯ সালে তিনি গড়ে তোলেন মাইসফট লিমিটেড। হাসপাতাল, ল্যাব এবং রেডিওলজি সেবায় অটোমেশন সফটওয়্যার প্রস্তুতে স্পেশালাইজড প্রতিষ্ঠান হিসেবে খুব দ্রুতই নিজের অবস্থান তৈরি করে নেয় প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে ২০০ এর অধিক প্রতিষ্ঠানকে সেবা দিয়ে চলেছে মঞ্জুরুল হকের এই প্রতিষ্ঠান।
মাইসফটের কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রতিষ্ঠানটি ২০১৮ সালে আইসিটি বিজনেস সার্ভিস ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হিসেবে বেসিস ন্যাশনাল আইসিটি পুরস্কার জয়ের গৌরব অর্জন করে। এ ছাড়াও তাঁর আরেকটি প্রতিষ্ঠান মাইহেলথবিডি ২০২০ সালে হতে গ্লোবাল আইসিটি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড অর্জন করে।
মঞ্জুরুল হক বেসিস, বাংলাদেশ কমপিউটার সমিটি এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ কল সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং প্রভৃতি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত আছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। মঞ্জুরুল হকের একজন সান সার্টিফাইড জাভা প্রোগ্রামার এবং সান সার্টিফাইড ওয়েব কম্পোনেন্ট ডেভেলপার।