ই-স্পোর্টসকে ‘ক্রীড়া’ হিসেবে স্বীকৃতি

ক.বি.ডেস্ক: বর্তমানে তরুণদের কাছে জনপ্রিয়তার শীর্ষে ইলেকট্রনিক স্পোর্টস বা ই-স্পোর্টস। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি ই-স্পোর্টসকে সম্ভাব্য অলিম্পিক ডিসিপ্লিন হিসেবে বিবেচনায় নেয়ার ঘোষণা দেয়ার পর অনেক দেশই এর উন্নয়নে সরকারি উদ্যোগ নিয়েছে। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলো বাংলাদেশ। তাই এবার ই-স্পোর্টসকে ক্রীড়া হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন-২০১৮ এর ২(২) ও ৬ ধারা অনুযায়ী ই-স্পোর্টসকে এই স্বীকৃতি দিয়েছে। সরকার ই-স্পোর্টসকে স্বীকৃতি দিলেও এর পরিচালনা ও নীতিমালা নির্ধারণে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি আগামী ২১ কর্মদিবসের মধ্যে একটি প্রতিবেদন জমা দেবে।
গত সোমবার (১৪ জুলাই) যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ক্রীড়া শাখা-১ এর সিনিয়র সহকারী সচিব ফয়সাল রায়হানের স্বাক্ষরিত এক পত্রে এ ঘোষণা দেয়া হয়।
কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. সাইফুল ইসলামকে। সদস্য হিসেবে থাকবেন আইসিটি বিভাগের যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার প্রতিনিধি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির একজন অধ্যাপক এবং জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিচালক (ক্রীড়া), যিনি সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন।
এই কমিটি আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির গাইডলাইন মেনে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে আলোচনা করে একটি খসড়া নীতিমালা তৈরি করবে। সেই সঙ্গে আইসিটি বিভাগের মতামত ও সম্পর্কিত আইন-বিধি, সরকারি নিয়মকানুনও দেখবে। প্রয়োজন হলে বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকেও সাহায্য নিতে পারবে।
সরকারি স্বীকৃতির ফলে ই-স্পোর্টস খেলোয়াড়রা পাবেন ক্রীড়া ভাতা, প্রশিক্ষণ সুবিধা, ক্রীড়া সংক্রান্ত পুরস্কার ও অনুদানসহ অন্যান্য সুবিধা। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও গেমিং ক্লাব ও প্রতিযোগিতা আয়োজন সহজ হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ই-স্পোর্টসকে ক্রীড়া হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার ফলে এ খাতে যুক্ত তরুণরা সরকারি সহায়তা পাবেন এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি হবে। দেশের গেমার ও ই-স্পোর্টস সংশ্লিষ্ট কমিউনিটি এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে।
ই-স্পোর্টসের স্বীকৃতি প্রসঙ্গে দেশি প্রতিষ্ঠান জেনেটিক ই-স্পোর্টসের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ অলিউর রহমান বলেন, “এটি বাংলাদেশের গেমিং কমিউনিটির জন্য একটি জয়। সরকারের এই উদ্যোগ আমাদের সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।”
ই-স্পোর্টস নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাওয়া প্রতিষ্ঠান গিগাবাইট বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ম্যানেজার খাজা মো. আনাস খান বলেন, “যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ই-স্পোর্টসকে ক্রীড়া হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে একটি নতুন ই-স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন গঠনের উদ্যোগ। এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের গেমিং কমিউনিটির জন্য এক বিশাল মাইলফলক, যা তরুণ ই-স্পোর্টস প্রতিভাদের জন্য খুলে দেবে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার। এর মাধ্যমে তরুণ গেমাররা নিজেদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পাবে এবং ই-স্পোর্টস একটি সম্মানজনক পেশা হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে।”