আলাপ পে’র সঙ্গে মেট্রোরেলের পেমেন্ট যুক্ত করবে বিটিসিএল
ক.বি.ডেস্ক: রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) তাদের ওয়ালেট ‘আলাপ পে’র সঙ্গে মেট্রোরেল ও অন্যান্য ইউটিলিটি পেমেন্ট অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা করেছে। বিটিসিএল নতুন বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার দিকে নজর দিয়েছে যাতে এর গ্রাহকরা একক উইন্ডোতে বিভিন্ন ধরণের ইউটিলিটি পেমেন্ট পরিষেবা নিতে পারেন।
বিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, “মেট্রোরেল, ফ্লাইওভার ও ব্রিজের মতো সেবার অর্থ প্রদানে আলাপ ওয়ালেটের মাধ্যমে সমন্বিত করার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা রয়েছে বিটিসিএলের। আলাপ ওয়ালেটের মাধ্যমে বিদ্যুৎ ও পানির ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করারও পরিকল্পনাও রয়েছে। গ্রাহকদের সাশ্রয়ী মূল্যের কলরেট এবং এসএমএস প্যাকেজ দেয়ার জন্য শুল্ক কমানোর জন্যও কাজ করছে।”
বিটিসিএল’র সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, তারা কীভাবে পরিষেবাগুলোর প্রস্তাব করতে পারেন তা নির্ধারণ করতে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) সঙ্গে আলোচনা করছেন। বিটিসিএল ইতোমধ্যে বিভিন্ন পেমেন্ট গেটওয়ের সঙ্গে কাজ করেছে। কিছু বিল পরিশোধের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি লাগে। আলাপ পে’র নিজস্ব অর্থপ্রদানের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো অনুমতির প্রয়োজন নেই।
বিটিসিএল তাদের ল্যান্ডফোন বিল পরিশোধের জন্য গ্রাহকদের সুবিধার্থে ওয়ালেট ‘আলাপ পে’ তৈরি করেছে। ভয়েস, মেসেজিং এবং অন্যান্য পরিষেবার জন্য ওটিটি অ্যাপ্লিকেশনগুলোর জোরালো ব্যবহারের পরিপ্রেক্ষিতে, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থাটি নতুন বছর-২০২৫ সালে দেশে এবং বিদেশে আরও বেশি ব্যবহারকারীকে আকৃষ্ট করতে ডায়ালার ‘আলাপ’ অ্যাপ্লিকেশনটিকে নতুন রূপ দেয়ার দিকে অগ্রসর হয়েছে।
এ লক্ষ্যে এসএমএস, হোস্টেড আইপি টেলিফোন, ভয়েস ব্রডকাস্ট, বাল্ক এসএমএস, ক্লাউড স্টোরেজের মতো নতুন ফিচার বা সুবিধা সংযোজনের পাশাপাশি কলিং অ্যাপ ‘আলাপ’-এর জন্য ডেডিকেটেড কাস্টমার কেয়ার সেন্টার খোলার কাজ করছে বিটিসিএল।
বিটিসিএল একটি অনন্য গ্রাহকের নম্বরের মাধ্যমে যে কোনো মোবাইল বা ল্যান্ডফোনে কল করার সুবিধাসহ ২০২১ সালের মার্চ মাসে ওভার-দ্য টপ (ওটিটি) কলিং অ্যাপ্লিকেশন ‘আলাপ’ চালু করে। হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম, ইমোর মতো অ্যাপগুলো ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং, ইন্টারনেটে ফ্রি কল এবং ভিডিও কলের মাধ্যমে তখনও বাংলাদেশের বাজারে আধিপত্য বিস্তার করছিল, তাই বিদেশি অ্যাপের ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর পাশাপাশি স্থানীয় মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত রাখতে বিটিসিএল বাংলাদেশি সংস্করণ ‘আলাপ’ চালু করে।
এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করে ‘আলাপ’ থেকে ‘আলাপ’ ও চ্যাট করা যায় বিনা মূল্যে। কিন্তু যখন আলাপ ব্যবহার করছেন না এমন কোনো মোবাইল বা ল্যান্ডলাইন অপারেটরের গ্রাহককে ফোন কল করা হবে, তখন কলারকে ইন্টারনেট সংযোগের জন্য অর্থ প্রদানের পাশপাশি বিল পরিশোধ করতে হবে। অফনেট কলের জন্য আলাপ ব্যবহারকারীকে দিতে হবে ০.৩৫ টাকা।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এ পর্যন্ত দুই দফায় মোট ২০ লাখ ইউনিক নম্বর বরাদ্দ দেয়ায় আলাপ নম্বর বরাদ্দের সংকটে ভুগছে, যা প্রায় শেষ হতে চলেছে। বর্তমানে আলাপ এর প্রায় ১৭ লাখ সক্রিয় ব্যবহারকারী রয়েছে এবং এটি প্রতিদিন গড়ে ৭ লাখেরও বেশি পেইড কল নিবন্ধন করে আর ফ্রি কলের সংখ্যা প্রতিদিন ৮,০০০ থেকে ১০,০০০। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত আলাপ মোট ৩২ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে।