আইডিয়া প্রকল্পের ‘বিগ ডাটা’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ
অনলাইনে ‘বিগ ডাটা’ বিষয়ক দিনব্যাপী একটি প্রশিক্ষণ আয়োজন করে আইসিটি বিভাগের বাংলাদেশ কমপিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন একাডেমী প্রতিষ্ঠাকরণ প্রকল্প (আইডিয়া)। বিগ ডাটা সম্পর্কে জ্ঞান ধারণা; বিগ ডাটা এবং স্মার্ট অ্যানালিটিকস; কিভাবে আমরা বিগ ডাটাতে সুযোগুলো কাজে লাগাতে পারি এই ৩টি বিষয়বস্তুকে প্রাধান্য দিয়ে এই প্রশিক্ষণটি পরিচালনা করা হয়।
আজ সকালে (১১ জুন) ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে আইডিয়া প্রকল্পের এডুকেশন ফর ন্যাশনের আওতায় এই আয়োজনের উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক। বিশেষ অতিথি ছিলেন আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম এবং বিসিসির নির্বাহী পরিচালক পার্থপ্রতিম দেব। সভাপতিত্ব করেন আইডিয়া প্রকল্পের পরিচালক সৈয়দ মজিবুল হক।
প্রশিক্ষণটিতে রিসোর্স পারসন হিসেবে সংযুক্ত হন অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব কুইন্সল্যান্ডে ডেটা সাইন্স বিষয়ের ছাত্র ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ডেপুটি কমিশনার (ট্যাক্স) মো. আব্দুল বারী তুষার, গ্রিফিথ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব আইসিটি’র বিগ ডাটা অ্যানালিটিস বিষয়ক লেকচারার ড. সাইফুল ইসলাম এবং টেকনোহেভেন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হাবিবুল্লাহ্ এন করিম।
জুনাইদ আহ্মেদ পলক বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের ৮ম জনবহুল এবং বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর দেশ যেখানে প্রায় ১৭ কোটি মানুষ প্রতিনিয়ত ডেটা জেনারেট করছে। এই মুহূর্তে পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ হিসেবে ডেটা বা তথ্যকে ধরা হচ্ছে। যে দেশ বা জাতির কাছে যত বেশি তথ্য থাকবে ও সেটা উপযুক্তভাবে প্রসেস এবং অ্যানালাইসিস করতে পারবে সে দেশ বা জাতি তত বেশি সম্পদশালী হিসেবে বলা হচ্ছে। দেশে এখন প্রায় ১০ কোটিরও বেশি মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহারকারি আছে এবং ১৬ কোটিরও বেশি সিম কার্ড ব্যবহার হচ্ছে যেখানে প্রায় ৪ কোটির কাছাকাছি স্মার্ট ফোন ব্যবহারকারিসহ লক্ষ লক্ষ কমপিউটার ব্যবহারকারি রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ডেটা অ্যানালাইসিসের মাধ্যমে করোনা পরিস্থিতিতে কোন এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি বা কম অথবা উপসর্গের সংখ্যা বেশি এবং পরবর্তীতে কোন এলাকায় এই সংখ্যা বাড়তে পারে সেই বিষয়ে প্রাথমিকভাবে তথ্য অনুমান করা সম্ভব। অর্থাৎ তথ্য বিশ্লেষণের একটি শক্তিশালী একটা ক্ষমতা আছে। এখন প্রচলিত পদসমূহ যেমন সিইও, সিএফও বা সিটিও এর পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারী সকল অফিসে চীফ ডেটা অফিসারের প্রয়োজনীয়তা হবে। এর কারণ হল সরকারি-বেসরকারী অফিসগুলো এখন সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য ডেটা অ্যানালাইসিসকে গুরুত্ব দিচ্ছে। দেশের গবেষক, উদ্ভাবক ও উদ্যোক্তাগণ যেন দেশের ডেটা ব্যবহার করে তারা যেন নতুন নতুন সেবা দিতে পারে সেটাই এখন আমাদের মূল লক্ষ্য।
এন এম জিয়াউল আলম বলেন যে, ডেটা নির্ভর পলিসি টেকসই ও কার্যকর বেশি হয়। তাই আমরা যখনই এভিডেন্স বেইজড পলিসি তৈরির কথা বলব তখনই ডাটা রিসোর্স বা তথ্য বাড়াতে হবে। ডাটা ব্যবস্থাপনায় আমরা যত বেশি উন্নত হব আমাদের পলিসিগুলোও তত বেশি উন্নত হবে। এর চর্চা আমরা শুরু করেছি যা আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে। তবে এই বিষয়ে বাংলাদেশে আরও কাজ বৃদ্ধি করতে পারলে ডাটা সম্পদে আমরা অধিক সমৃদ্ধশালী হতে পারব।
পার্থপ্রতিম দেব বলেন, বর্তমান যুগে অন্যতম সম্পদ হল তথ্য বা ডাটা। পৃথিবীব্যাপী এখন এই তথ্য বা ডাটার গুরুত্ব অনেক। সবমিলিয়ে বিশ্বের অর্থনীতিতেও এর যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে।
সৈয়দ মজিবুল হক বলেন, সামনের যুগ ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজির যুগ। তাই ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি সম্পর্কে তরুণদের উৎসাহিত করতে এ ধরনের আয়োজন করছে আইডিয়া প্রকল্প।
চট্টগ্রাম বিভাগের প্রায় ৬০ জনের অধিক প্রশিক্ষণার্থী অনলাইন প্ল্যাটফর্ম জুমের মাধ্যমে এই প্রশিক্ষণে অংশ নেন যাদের পরবর্তীতে সনদপত্র প্রদান করা হবে। এ ছাড়া পুরো আয়োজনটি স্টার্টআপ বাংলাদেশের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে লাইভ সম্প্রচার করা হয় ফলে আগ্রহী অনেকেই বিগ ডাটা সম্পর্কে বিশেষ ধারণা পায়।
এ সময় অনলাইনে উপস্থিত ছিলেন আইডিয়া প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক কাজী হোসনে আরা, প্রকল্পের সিনিয়র পরামর্শক আর এইচ এম আলাওল কবির, প্রকল্পের পরামর্শক দেওয়ান আদনান, সোহাগ চন্দ্র দাসসহ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট), নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়, ইন্ডিপেন্ডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামসহ চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীসহ শিক্ষকগণ, বিসিসি ও আইসিটি বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।