নিরাপদ মোবাইল ব্যবহার নিশ্চিতকরণে এনইআইআর দ্রুত বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন
ক.বি.ডেস্ক: মোবাইল উৎপাদন শিল্পে সিন্ডিকেট থাকার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। বর্তমানে ১৮টি কোম্পানি উৎপাদন লাইসেন্সধারী, যারা মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বাজারে কাজ করছে। নিরাপত্তাহীন ডিভাইস ব্যবহারের মাধ্যমে সাইবার নিরাপত্তা, ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য এবং জাতীয় আর্থিক স্থিতিশীলতা ঝুঁকিতে পড়ে। এজন্য ন্যাশনাল ইক্যুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) দ্রুত বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন।
আজ সোমবার (৮ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)-এর সফিকুল কবির মিলনায়তনে মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এমআইওবি) আয়োজিত ‘সিকিউরিং মোবাইল ইকোসিস্টেম অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এমআইওবি’র সভাপতি জাকারিয়া শহীদ এবং সাধারণ সম্পাদক জহুরুল হক বিপ্লব, স্মার্ট হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, শাওমি বাংলাদেশের কান্ট্রি হেড জিয়াউদ্দিন চৌধুরী, এক্সেল টেকনোলজিসের নির্বাহী পরিচালক সাইফুদ্দিন টিপু, ভিভোর প্রতিনিধি ইমাম উদ্দিন, সেলেক্সট্রার ব্যবস্থাপনা পরিচালক রিয়াজুল ইসলাম, বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ডিস্ট্রিবিউটার অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক রাহুল কাপুড়িয়া।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মোবাইল হ্যান্ডসেট শনাক্তকরণ ব্যবস্থা ‘ন্যাশনাল ইক্যুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার’ (এনইআইআর) নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। এনইআইআর বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। শুধু আর্থিক ক্ষতিই নয়; নিরাপত্তাহীন ডিভাইস ব্যবহারের মাধ্যমে সাইবার নিরাপত্তা, ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য এবং জাতীয় আর্থিক স্থিতিশীলতা ঝুঁকিতে পড়ে।
এমআইওবি’র সভাপতি জাকারিয়া শহীদ বলেন, “দেশের মোবাইল ফোন বাজার পুরোপুরি প্রতিযোগিতামূলক; এখানে বহু প্রতিষ্ঠান, উন্মুক্ত প্রবেশাধিকার এবং শক্তিশালী প্রতিযোগিতা বিদ্যমান। তাই একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ বা সিন্ডিকেটের অভিযোগ বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। বর্তমানে ১৮টি মোবাইল উৎপাদনকারী কারখানায় ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ হয়েছে এবং সরাসরি ও পরোক্ষভাবে প্রায় এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে, যার ৩০ শতাংশই নারী। দেশে মাসিক উৎপাদন সক্ষমতা ১৫ লাখ স্মার্টফোন ও ২৫ লাখ ফিচার ফোন হলেও গ্রে মার্কেটের কারণে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ সক্ষমতা অব্যবহৃত আছে। প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার এই শিল্প বছরে ২ হাজার কোটি টাকার বেশি কর প্রদান করে সরকারকে।”
তিনি আরও বলেন, “এনইআইআর না থাকায় হাই-এন্ড ফোন দেশে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এনইআইআর চালু হলে স্থানীয়ভাবে প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে হাই-এন্ড ফোন উৎপাদন করা সম্ভব হবে। এনইআইআর চালু হলে ফোনের মূল্য বাড়বে এ দাবি সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর এবং বিশেষ একটি গোষ্ঠীর স্বার্থরক্ষার কৌশল। রিফারবিশ ও সেকেন্ড–হ্যান্ড ফোন নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে, কিন্তু বৈধ চ্যানেলে রিফারবিশ ফোন কেনাবেচায় কোনও বাধা তৈরি হবে না। গ্রে মার্কেট থেকে ব্যবহৃত বিদেশি ফোন নতুন হিসেবে বিক্রির প্রবণতা ব্র্যান্ডের ক্ষতি করছে। এনইআইআর চালু হলে স্থানীয়ভাবে হাই-এন্ড ফোন তৈরির পথ খুলবে এবং ক্রেতারা সঠিক মূল্যে নতুন ডিভাইস পাবেন, সেকেন্ড–হ্যান্ড ফোনের ওপর নির্ভরতা কমবে।”





